Calcutta High Court: ‘প্রেম থাকলেও যৌন সম্পর্কে সম্মতি দিতে পারে না নাবালিকা’, POCSO মামলায় পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের
Physical Assault Case: অভিযুক্ত ২০১৪ সালে নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তখন নাবালিকার বয়স ছিল মাত্র ১৪। এরপরে একাধিকবার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে, এমনকী নির্যাতিতা বাধা দেওয়া সত্ত্বেও অভিযুক্ত সেই কথা শোনেনি।

কলকাতা: প্রেমের সম্পর্ক হলেও, নাবালিকা যৌন সম্পর্কে সম্মতি গ্রহণ করা যায় না। বড় পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। এক নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার মামলায় যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্তের ভালবাসার সম্পর্ক থাকলেই, তা নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ককে বৈধতা বা সুরক্ষা দেয় না।
কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে একটি মামলার শুনানি চলছিল। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ও পকসো আইনের ৬ ধারায় অভিযোগ ছিল। অভিযুক্তকে যাবজ্জীবনের সাজা দেওয়া হয়েছিল। সেই সাজা খারিজের আবেদনই করেছিল হাইকোর্টে।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ২০১৪ সালে নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তখন নাবালিকার বয়স ছিল মাত্র ১৪। এরপরে একাধিকবার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে, এমনকী নির্যাতিতা বাধা দেওয়া সত্ত্বেও অভিযুক্ত সেই কথা শোনেনি। ২০১৭ সালে নির্যাতিতা গর্ভবতী হয়ে পড়ার পরই গোটা বিষয়টি জানাজানি হয়। অভিযুক্ত ও তাঁর পরিবার নাবালিকা ও তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। এরপরই নারকেলডাঙা পুলিশ স্টেশনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে।
আদালতের তরফে বলা হয় যে অভিযুক্ত যে নির্যাতিতার সন্তানের বাবা নয়, তা খারিজ করা যায় না। নির্যাতিতার বয়ান এবং ডিএনএ রিপোর্ট সহ একাধিক সায়েন্টিফিক প্রমাণ স্পষ্ট করে যে একাধিকবার নির্যাতিতার সঙ্গে যৌন সঙ্গম হয়েছে অভিযুক্তের। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করে বলা হয় যে নাবালিকা ধর্ষিতার বয়ান যদি বিশ্বাসযোগ্য হয়, তাহলে অন্য কোনও প্রমাণের দরকার পড়ে না।
অভিযুক্তের আইনজীবীর তরফে দাবি করা হয়েছিল যে নির্যাতিতার বয়স স্পষ্টভাবে প্রমাণ করা হয়নি। আদালত পাল্টা জানায় যে বার্থ সার্টিফিকেট দেখানো হয়েছিল এবং মামলা চলাকালীনও অভিযুক্ত নাবালিকার বয়স নিয়ে কোনও আপত্তি তোলেনি।
এফআইআর কেন দেরিতে দায়ের করা হয়েছিল, সেই প্রশ্নে আদালতের তরফে বলা হয় যে নাবালিকা বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করেছিল। গর্ভবর্তী হয়ে পড়েছে বিষয়টি জানতে পেরেই সে তাঁর মা-বাবাকে জানায়। নিম্ন আদালতের রায়কেই বহাল রেখে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে স্টেট লিগাল সার্ভিস অথারিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিতে বলা হয় এবং অভিযুক্তকে আরও ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত যদি জামিনে মুক্ত থাকে, তবে অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করে যাবজ্জীবনের সাজার নির্দেশ দেওয়া হয়।
