Na bollei Noy: দুনিয়ার দ্রুততম প্রাণীকে নিয়ে আদিখ্যেতা হবে না তো কাকে নিয়ে হবে? যে কথা ‘না বললেই নয়’

Cheetah: চিতাকেও আগ্রাসন ও রাজদম্ভের স্টিরিওটাইপ হিসেবে তুলে ধরার পিছনে বিজেপি এবং মোদী ভক্তদের কথা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।

Na bollei Noy: দুনিয়ার দ্রুততম প্রাণীকে নিয়ে আদিখ্যেতা হবে না তো কাকে নিয়ে হবে? যে কথা ‘না বললেই নয়’
না বললেই নয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 17, 2022 | 7:59 PM

কলকাতা: এতদিন, সারা দুনিয়ার মধ্যে একমাত্র আফ্রিকার জঙ্গলে চিতা ছিল। চিতা এখন থেকে মধ্যপ্রদেশের বনেও থাকবে। আজই নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা এসেছে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে। সেই চিতা দেখে আসমুদ্র হিমাচলের প্রবল চিত্ত চাঞ্চল্য হয়েছে। সত্যিই তো চিতা বলে কথা। দুনিয়ার দ্রুততম প্রাণীকে নিয়ে আদিখ্যেতা হবে না তো কাকে নিয়ে হবে? বলা হচ্ছে, সেন্ট্রাল ভিস্টার মাথায় বসে থাকা সিংহ আর নামিবিয়া থেকে ঢাক ঢোল পিটিয়ে আনা চিতা নতুন ভারতের প্রতীক। আগ্রাসী, ক্ষিপ্র। যে ভারত এক গালে চড় খেয়ে আরেক গাল এগিয়ে দেয় না। প্রয়োজনে পড়শির ঘরে ঢুকে বদলা নিতে পারে। HOW IS THE JOSH? প্রশ্ন করলে, এই ভারত সব সময় বলে HIGH SIR। সেই ভারতের আদবকায়দার সঙ্গে শান্তশিষ্ট ল্যাজ বিশিষ্ট কোনও প্রাণী ঠিক খাপ খায় না। গরু নিয়ে রাজনীতি হতে পারে। গরু পাচারে তদন্ত হতে পারে। গরুর দুধে সোনা আছে কি নেই তা নিয়ে তর্ক হতে পারে। এমনকি গোমাতার পুজোও হতে পারে। কিন্ত, নতুন ভারতের প্রতীক কখনও গরু হতে পারে না। নরেন্দ্র মোদীর ভারতের সঙ্গে কেশর ফোলানো সিংহ এবং দুরন্ত চিতাই মানানসই। পুরুষ সিংহ তো পরম পৌরুষের একমেবদ্বিতীয় প্রতীক। চিতাকেও আগ্রাসন ও রাজদম্ভের স্টিরিওটাইপ হিসেবে তুলে ধরার পিছনে বিজেপি এবং মোদী ভক্তদের কথা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। কিন্তুকে গরুকে একেবারে হেলাফেলা করাটা ঠিক হবে না।

অনুব্রত মণ্ডলের মতো মানুষ, যাঁর দাপটে বীরভূমে গাছের পাতাও নড়ে না। সেই মানুষটিকেও জেলের ভাত খাইয়ে ছেড়েছে শান্তশিষ্ট গরু। CBI রবীন্দ্রনাথের নোবেল খুঁজে পায়নি। কিন্তু যেভাবে আদাজল খেয়ে কলকাতা-বোলপুর দৌড়াদৌড়ি করছে, তাতে মনে হচ্ছে গরু পাচারের তদন্তে হিল্লে না করে তাঁদের শান্তি নেই। সেজন্যই তাঁরা কেষ্ট মণ্ডলের কন্যা সুকন্যার পিছু ছাড়ছে না। গতকাল একবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, শোনা যাচ্ছে আবার না কি সুকন্যাকে প্রশ্ন করতে পারেন তদন্তকারীরা। কিন্তু, সুকন্যা নাকি যে কোনও প্রশ্নেই হ্যাঁ অথবা না ছাড়া কোনও উত্তর দিচ্ছেন না! এমন সংক্ষিপ্ততম উত্তরে কোন রহস্যের সমাধান করবে CBI? CBI সূত্রে খবর, সুকন্যা এক্কেপারে বাপ কা বেটি। অনুব্রত মণ্ডলের মতোই তদন্তকারীদের সামনে ইস্পাতকঠিন স্নায়ু নিয়ে বসছেন তাঁর মেয়ে। যেমন কেষ্ট মণ্ডলের পেট থেকে কথা বের করতে হিমশিম খাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি, তেমনই সুকন্যার কাছ থেকেও কথা আদায় করতে, তাঁদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে।

ভাবছেন তো এটা পুরো গরুর রচনা হয়ে যাচ্ছে। যেখান থেকেই শুরু হোক, কথা ঠিক গরুতে পৌছে যাচ্ছে। আপাতত আমরা গরু থেকে আবার একটু চিতায় নজর ঘোরাই। নিজের বাহাত্তরতম জন্মদিনে খাঁচা খুলে আটটি চিতাকে স্বাগত জানালেন নরেন্দ্র মোদী। জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী অভয়ারণ্যে চিতা ছাড়বেন। অনেক ভেবেচিন্তেই এই কর্মসূচি ঠিক করা হয়েছে। উজবেকিস্তানে SCO সম্মেলনে গতকালই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী দিনে দ্রুততম গতিতে এগোবে ভারতের অর্থনীতি। মনে করা হচ্ছে, আগ্রাসী ভারতের একটা প্রতীক হতে চলেছে চিতা। বাংলার বিজেপি নেতারা শুনছেন তো? শুনলে একটু গা ঝাড়া দিন। এমন ছুটির মুডে থাকলে চলবে কী করে? গতকাল, মুড ছিল না বলে বিধানসভায় আলোচনায় অংশ নেননি বিজেপি বিধায়করা। আজ কেন্দ্রীয় বিজেপির নির্দেশ দিল্লি থেকে এসেছিল ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। নবান্ন অভিযানে পুলিশ কেন বিজেপি কর্মীদের ওপর মারমুখী হয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন দিল্লি বিজেপির দূতেরা। কেন ঘন ঘন মুড সুইং করছে বাংলার বিজেপি নেতাদের? আন্দোলনে কেন তাঁদের ধারাবাহিকতা থাকে না? বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম সেই ফ্যাক্টটাও খুঁজে দেখবে না কি?  আমরা বরং খুঁজি, চপ-চা-মুড়ি-ঘুগনির বাইরে আর কোনও শিল্প সম্ভাবনা আছে কি না, কোন দলের কী দৃষ্টিভঙ্গি। তৃণমূল মুখপাত্র বলছেন, রাজ্যে শিল্পের সুদিন ফিরে এসেছে। যুক্তির স্বপক্ষে কুণাল ঘোষ বলছেন, শিল্প না থাকলে কী আর রাজ্যে ৩ লক্ষের বেশি বিশ্বকর্মার প্রতিমা বিক্রি হত? কে দিল এই তথ্য, কুণাল বাবু জানিয়ছেন, দলের নির্দেশে এই হিসেব দিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতিরা। সত্যিই এই পরিকল্পনা যাঁর মাথা থেকে বেড়িয়েছে তাঁকে স্যালুট না জানিয়ে পারছি না, এমন ভাবেও যে শিল্প মাপা যায়, বিনিয়োগের পরিসংখ্যান জানা যায়, তা অতি বড় বিশেষজ্ঞও জানতেন না, অতএব আজ সেই কথাগুলো হবে, যে কথাগুলো আজ না বললেই নয়। রাত ৮.৫৭, টিভি নাইন বাংলায়