ফের কি বিষ-জল? কলকাতার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার মৃত্যু এক শিশুর

সোমবার এই ওয়ার্ডে (ward) মৃত্যু হয় আরও এক জনের। জলে দূষণ (Water pollution) থাকার অভিযোগ।

ফের কি বিষ-জল? কলকাতার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার মৃত্যু এক শিশুর
মৃত্যু হয়েছে পাঁচ বছরের আয়ূষী কুমারের
Follow Us:
| Updated on: Mar 16, 2021 | 4:48 PM

কলকাতা: গতকালের পর ফের আরও এক মৃত্যু কলকাতায়। সোমবারই ভবানীপুর বিধানসভার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জল খেয়ে মৃত্যু হয় একজনের। মঙ্গলবার মৃত্যু হল এক পাঁচ বছরের শিশুর। ডায়েরিয়া হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল। পরিবারের দাবি, দূষিত জল খেয়েই অসুস্থ হয় পরিবারের সদস্যরা। মৃত শিশুর নাম আয়ুষী কুমারী। এলাকার অনেকেই গত কয়েক দিন ধরে পেটের সমস্যায় ভুগছে বলে জানা গিয়েছে।

পরপর মৃত্যু

একজন নয়। পাশাপাশি দুটি ওয়ার্ডে মোট তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে একজনের মৃত্যু হয়। পাশের ওয়ার্ড ৭৪ নম্বরে জেলের মধ্যে আরও একজনের মৃত্যু হয় সোমবারই। প্রত্যেকেরই দূষিত জল খেয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার সকালে আরও মর্মান্তিক ঘটনা ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে। মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর।

কী বলছেন এলাকার মানুষ?

ঘটনার সূত্রপাত শিবরাত্রির দিন থেকেই। এলাকার মানুষের দাবি, শিবরাত্রির দিন ভোগ রান্না হয়েছিল ওই জলে। এর পরের দিন সকালেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা বমি ও পেট খারাপে ভুগছেন এলাকার অনেকে। এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাত জন। এ ছাড়াও অনেকেই বাড়িতে রয়েছেন এই অবস্থায়। বিশেষ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে শিশুদের নিয়ে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, জল পরিষ্কার করা হোক। ৮০ টাকা দিয়ে জল কিনে খাওয়ার মতো ক্ষমতা নেই। জল থেকে গন্ধ বোরচ্ছে বলেও অভিযোগ।

কী বলছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা?

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সুমন পোদ্দার বলেন, বিষাক্ত জলে থাকতে পারে কোনও রাসায়নিক। জল থেকে ইনফেকশন ছড়িয়েও মৃত্যু হতে পারে। অনেক সময় ডায়েরিয়া এমন পর্যায়ে চলে যেতে পারে, যাতে চিকিৎসকদের কিছু করার থাকে না। এই পরিস্থিতি থেকে আপাতত মুক্তি পেতে জল ফুটিয়ে খেতে হবে। স্নানের জল যাতে পেটে না যায়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে বলে জানান তিনি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেন, জল দূষিত হল কোথা থেকে তার সূত্র খুঁজে বের করতে হবে। যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের জন্য অবশ্যই বিশুদ্ধ জলের ব্যবস্থা করতে হবে। ওআরএস মিশিয়ে জল খেতে হবে। নির্দিষ্ট চিকিৎসা করাতে হবে বলেও জানান তিনি।

৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী জনপ্রতিনিধি রতন মালাকার

মঙ্গলবার এলাকায় এসেছেন রতন মালাকার। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার থেকে জলের দূষণ হয়েছে। ডিএল খান রোডের ২৪ ইঞ্চি পাইপ থেকে জল আসছিল। শনিবার তা খুঁজে বের করে বন্ধ করা হয়। তাঁর দাবি, শনিবারের পর থেকে আর গন্ধ জল আসেনি।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর ওয়ার্ডে পানীয় জল খেয়ে মৃত ১, অসুস্থ একাধিক বাসিন্দা

তদন্তের নির্দেশ ফিরহাদের

পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জল সুরক্ষিত কিনা, অবিলম্বে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। সোমবারই তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়েছেন জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি। সংশ্লিষ্ট এলাকার জলের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়েছেন পুর আধিকারিকরা। জলের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষাগারে। এ ছাড়া এলাকায় ক্যাম্প করে ওষুধ দেওয়ার কাজ চলছে।