Polio virus in kolkata: কেন এত বছর পর ফিরল পোলিও? কী এই ভ্যাকসিন-ডিরাইভড ভাইরাস?
Polio virus in kolkata: পোলিও-র ভ্যাকসিন-ডিরাইভড ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে কলকাতায়। রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও ভাইরাস মিলচে পারে বলে সতর্ক করেছে হু।
কলকাতা: ২০১১ সালে হাওড়া জেলায় দু’বছরের এক শিশুকন্যার শরীরে পোলিও-র সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তারপর থেকে গত ১১ বছরে আর কোনও পোলিও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি রাজ্যে। শুধু তাই নয়, এরই মধ্যে পোলিও-মুক্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ভারত। কিন্তু সম্প্রতি কলকাতায় পোলিও ভাইরাসের সন্ধান মেলায় কার্যত চমকে গিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও। করোনা কালে নিয়মিত টিকাকরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার কারণেই কি ১১ বছর পর সন্ধান মিলল পোলিও’র জীবাণুর? এই প্রশ্নই করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
কী এই ভিডিপিভি?
পোলিও’র যে জীবাণু সবথেকে বেশি পাওয়া যায় তা হল ওয়াইল্ড পোলিও ভাইরাস (ডব্লুপিভি)। আর এক ধরনের পোলিও-র জীবাণু রয়েছে, যার নাম হল, ভ্যাকসিন-ডিরাইভড পোলিও ভাইরাস (ভিডিপিভি)। কলকাতা পুর এলাকায় দ্বিতীয়টির সন্ধান মিলেছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভিডিপিভি সচরাচর দেখা যায় না। তবে সম্প্রতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় সারা বিশ্বে পোলিও’র এই জীবাণুর প্রকোপ বেশি করে দেখা যাচ্ছে। তথ্য বলছে, সারা বিশ্বে ২০২০ সালে ৯৫৯ জনের দেহে পোলিও-র এই ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। আফ্রিকায় এখন পোলিও’র এই জীবাণুর প্রকোপ সবথেকে বেশি।
কী ভাবে সিডিপিভি’র বাড়বাড়ন্ত?
‘গ্লোবাল পোলিও ইরাডিকেশন ইনিটিশিয়েটিভে’র তথ্য বলছে, পোলিও ভাইরাসকে নির্মূল করার জন্য যে প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, তা আদতে লাইভ ভ্যাকসিন। মানবদেহের অন্ত্রে বসবাসকারী পোলিও জীবাণুকে বিনাশ করার জন্য লাইভ ভ্যাকসিন ভাল কাজ করে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু লাইভ ভ্যাকসিনের মিউটেশন ঘটে।
এই অবস্থায় পোলিও টিকার রক্ষাকবচের অনুপস্থিতির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় লাইভ পোলিও ভ্যাকসিনের মিউটেশনের জেরে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে পঙ্গুত্বের শিকার হতে পারে মানবশিশু। মিউটেশনের জেরে রূপান্তরিত এই ভাইরাসের নামই হল ভ্যাকসিন ডিরাইভড পোলিও ভাইরাস। টিকার রক্ষাকবচ না থাকলে জনসমাজে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস।
শুধুই কি অনিয়মিত টিকাকরণ দায়ী?
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, কলকাতা পুর এলাকায় যেখানে ভিডিপিভি’র সন্ধান মিলেছে সেখানে পোলিও টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, শুধু সচেতনতার অভাবকে দায়ী করলে চলবে না। এ ধরনের পোলিও ভাইরাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার বিষয়টি। তাই পোলিও টিকাকরণের পাশাপাশি কোভিডের সময় রুটিন ইমিউনাইজেশন বা টিকাকরণ কর্মসূচি ব্যাহত হওয়ার মাসুলও গুনতে হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড টিকাকরণের সময় প্রতি সপ্তাহে রুটিন ইমিউনাইজেশনের কাজ যে ঠিক মতো হয়নি এই ঘটনা তারও ইঙ্গিতবাহী। একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, শুধুমাত্র সচেতনতার অভাব বলে দায়িত্ব এড়ানো যাবে না। কোভিডের টিকা নিয়েও প্রতিরোধ ছিল। তা যদি দূর করা সম্ভব হয়, তাহলে পোলিও টিকা নিয়ে প্রতিরোধ এতদিনেও কেন দূর করা গেল না, সেই প্রশ্ন সামনে আসছে।