‘হাসপাতাল কি মধুচক্রের জায়গা?’ কুণালের কটাক্ষে ক্ষিপ্ত শোভন বললেন, ‘বৈশাখীর নখের যোগ্য নন’
শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বারন্দা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে নাটকীয় 'সাংবাদিক বৈঠক'। সেই বৈঠকে যত না নিজের পরিস্থিতি নিয়ে বললেন তার চেয়ে বেশি তোপ দাগলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষকে।
কলকাতা: শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বারন্দা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে নাটকীয় ‘সাংবাদিক বৈঠক’। সেই বৈঠকে যত না নিজের পরিস্থিতি নিয়ে বললেন তার চেয়ে বেশি তোপ দাগলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষকে। ‘মুখপোড়া হনুমান,’ ‘টেন পাশ সাংবাদিক’ এমনকি ‘বৈশাখীর নখের যোগ্যও নন’ বলে বিষোদাগার করলেন কুণালকে। কিন্তু কেন কুণাল ঘোষকে এহেন আক্রমণ?
শোভন-বান্ধবী বৈশাখী যখন প্রাক্তন মন্ত্রীকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছেন, তখন তিনি আঙুল তোলেন তৃণমূল নেতৃত্বের দিকেও। অভিযোগ করেন, শোভনকে এসএসকেএমে ‘আটকে’ রাখার পিছনে রয়েছে রাজনীতি। এই প্রেক্ষিতে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কিছু মন্তব্য করেন। আর তার পরেই শোভনের এই তোপ।
কী বলেছিলেন কুণাল?
প্রথমেই কুণাল ঘোষ জানিয়ে দেন, নারদ মামলায় রাজ্য সরকার বা তৃণমূলের কোনও ভূমিকা নেই। এর পর শোভন-বৈশাখীকে এক পংক্তিতে ফেলে তাঁর টিপ্পনী, “উনি মামার বাড়িতে নেই। হাসপাতালে আছেন। উনি এত সুস্থ থাকলে প্রেসিডেন্সি জেলে থেকে হাসপাতালে যাওয়ার নাটক করলেন কেন?” এখানেই থামেননি তিনি। বলেন, “উনি যখন মনে করবেন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবেন, আবার যখন মনে করবেন বাড়ি চলে যাবেন, তা হয় না। উনি মামার বাড়ির বাগানে পায়চারি করছেন না।” সেই সঙ্গে বৈশাখীকে উদ্দেশ্য করে যোগ করেন, “কে ওই মহিলা যে যখন তখন হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, হাসপাতাল সুপার কি ওটাকে মধুচক্র করেছেন?” আর এতেই কার্যত আগুনে ঘি পড়ে। জ্বলে ওঠেন শোভন।
কুণালকে নিয়ে কী বলেছেন শোভন?
উডবার্নের বারান্দা থেকে শোভন কার্যত মেজাজ হারান। শোভনের অশোভনীয় আক্রমণ, ‘মুখ পোড়া হনুমান।’ তিনি সাফ বুঝিয়ে দেন বৈশাখীকে অপমান একেবারেই মেনে নেবেন না। কুণালকে বিঁধে তাঁর বার্তা, “উনি একসময়ে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারি চেয়েছিলেন। উনি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নখের যোগ্য নন। নিজের মুখ পুড়িয়েছেন। মুখ পোড়া হনুমান।” কুণালের উদ্দেশে তাঁর আরও কটাক্ষ,”লঙ্কা পুড়িয়ে নিজের লেজে নিজেই আগুন ধরাচ্ছেন তিনি।”
যদিও এর পরেও কুণাল পাল্টা কটাক্ষ করে শোভনকে গ্লাকসো বেবি বলে মন্তব্য করেছেন। এদিনের শোভনের সাংবাদিক বৈঠককে কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, ‘গ্লাকসো বেবি অভিযোগ করছেন জানালা দিয়ে। এটা হোটেল না হাসপাতাল?’
আরও পড়ুন: দিনভর টানাপোড়েনের শেষ, প্রেসিডেন্সি জেল থেকে গোলপার্কের বাড়িতে ‘গৃহবন্দি’ শোভন
যদিও দিনভর এই নাটকের পরে এসএসকেএম থেকে প্রেসিডেন্সি জেল হয়ে গোলপার্কের নিজের বাড়িতেই গৃহবন্দি হয়েছেন শোভন। তবে এদিনের এসএসকেএমের সারাদিনের ঘটনাপ্রবাহে শোভন-কুণাল দ্বৈরথ আলাদা জায়গা করে নিল।