Jadavpur University: যাদবপুরে টাকার বিনিময়ে শ্যুটিং! বিতর্কে নাম জড়াল SFI পরিচালিত ছাত্র সংসদের, উত্তাল ক্যাম্পাস
Jadavpur University: অভিযোগ সামনে আসার পরেই বুধবার দুপুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের কাছে আফসু ইউনিয়ন রুমের সামনে অবস্থানে বসে পড়ুয়ারা। ওঠে এসএফআই বিরোধী স্লোগানও।
কলকাতা: একটি প্রোডাকশন হাউসের শ্যুটিংকে কেন্দ্র করে ফের বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়(Jadavpur University)। একইসঙ্গে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে নাম জড়াল এসএফআই (SFI) শাসিত ছাত্র সংসদ আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের বা আফসুর(AFSU)। যা নিয়েই রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে যাদবপুরের অন্দরে। অভিযোগ, হোস্টেলে শ্যুটিংয়ের জন্য ছাত্র বা কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে টাকা নিয়েছে আফসু। অভিযোগ, পুরো কাজটাই হয়েছে আফসুর সাধারণ সম্পাদক শুভায়ন আচার্যের তত্ত্বাবধানে। ইতিমধ্যেই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে হোস্টল সহ যাদবপুরের আর্টসের বিরোধী ছাত্র সংগঠনের বহু ছাত্রছাত্রী। এমনকী সুর চড়িয়েছে ইঞ্জিনিয়রিংয়ের ছাত্র সংসদও। চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন ইঞ্জিনিয়রিংয়ের ছাত্র সংসদ ফেটসুর চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদার।
উত্তাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
অভিযোগ সামনে আসার পরেই বুধবার দুপুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের কাছে আফসু ইউনিয়ন রুমের সামনে অবস্থানে বসে পড়ুয়ারা। ওঠে এসএফআই বিরোধী স্লোগানও। অভিযোগ, ৮৯০০ টাকার বিনিময়ে হোস্টেল ক্যান্টিনে শ্যুটিংয়ের অনুমতি দিয়েছে আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। কেন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া টাকা নিয়ে শ্যুটিংয়ের অনুমতি দিল আফসু? তাই নিয়েই প্রশ্ন তুলছে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলি। আফসুর সাধারণ সম্পাদক শুভায়ন আচার্যর পদত্যাগের দাবিও উঠেছে। যদিও শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য কোনও ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় না। কিন্তু, কেন জানানো হয় না সেই পাল্টা প্রশ্নও তুলছেন একটা বড় অংশের ছাত্রছাত্রীরা। এদিকে ইতিমধ্যেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আফসুর তরফে। জারি হয়েছে বিবৃতি।
বসছে মিটিং
তবে টাকা ফেরত দিলেই কী সব সমস্যার সমাধান? এই প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই পাল্টা সুর চড়িয়েছে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি। এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ফেটসুর চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদার বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও জায়গাই কারও নিজের কোনও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। শ্যুটিং করা নিয়ে আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের লেটারহেডে সাধারণ সম্পাদক তাঁর নিজের সই দিয়ে টাকা নিচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে। অথচ পড়ুয়ারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না।হোস্টেলের আবাসিকেরাও কিছুই জানে না। হোস্টেলে শুধু আর্টসের ছাত্ররা থাকে এমনটা তো নয়। সেখানে বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়রিংয়ের ছাত্ররাও থাকে। তারপরেও এ ধরনের দুর্নীতি করা বা তোলাবাজি করা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তা তা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছে।” এ বিষয়ে বুধবার রাতেই যাদবপুরের মেন হোস্টেলে ছাত্রদের তরফে একটি জিবি মিটিংয়ের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে অল ফ্যাকাল্টি জিবি মিটিং হতে পারে বলে জানিয়েছেন অরিত্র।
কী বলছে তৃণমূল? কী বলছে আফসু?
অন্যদিকে এ ঘটনায় এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গিয়েছে যাদবপুরের তৃণমূল নেতা সঞ্জীব প্রামানিককে। তাঁর বক্তব্য, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে। সেখানে কী করে সেই হোস্টেল ১৬ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়া দেওয়া হল বুঝতে পারছি না। আফসুর নাম করে কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে এসএফআই টাকা লুটে নিতে চাইছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।” তবে এই ইস্যুতে শুভায়নের সই সহ আফুসর তরফে জারি করা বিবৃতিতে সাফ বলা হয়েছে, “গত এক সপ্তাহ আগে একটি প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়য়ের একজন অফিস বিয়ারারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কোনও জায়গায় শ্যুটিংয়ের অনুমোদন কোনও ছাত্র ইউনিয়নই দিতে পারেনা। এই ক্ষেত্রেও সেই কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর সঙ্গে যোগাযোগ করানোর কাজটুকু আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের তরফ থেকে করানো হয়। সেই অনুযায়ী সহ-উপাচার্য এবং ডিন অফ স্টুডেন্টসের অনুমতি সাপেক্ষে হোস্টেল সুপারিন্টেন্ডেন্টকে হোস্টেলে শ্যুটিংয়ের বিষয়টি জানানো হয়। এই প্রযোজনা সংস্থা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আফসু’র ইউনিয়ন ফান্ডে ১৬,৪০০ টাকা দেওয়ার কথা জানায়। সেই অনুযায়ী গতকাল তারা সেই টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে শ্যুটিং বাতিল হওয়ায় সেই টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।”