Weather Update: ‘দ্বিতীয় উষ্ণতম’ ২০২৩-এ শীতেই বেশি ‘উষ্ণায়ন’! জানুয়ারিতেও কি আশার খবর নেই?
Weather Alert: মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, ২০২৩ দ্বিতীয় উষ্ণতম বছর হতে পারে, যদিও গ্রীষ্মে প্রবল গরম ছিল না। মার্চ থেকে মে, এই তিন মাসে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে মাত্র ০.০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। অথচ, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে গড় তাপমাত্রা ছিল ০.৮৩ ডিগ্রি বেশি।
বছরের পয়লা দিনে গরম গরম খবর শোনাল আবহাওয়া দফতর। না, জাঁকিয়ে শীত পড়তে চলেছে, এরকম হটকেক খবর নয়। খবরটা এইরকম: দেশের ১২৩ বছরের ইতিহাসে ২০২৩ দ্বিতীয় উষ্ণতম বছরের তকমা পেয়েছে। আগে শুধু ২০১৬। রয়েছে আরও চমকপ্রদ তথ্য। ২০১৩-এর এমন ‘উষ্ণ’ নজিরের পিছনে গ্রীষ্মের চেয়েও, শীতের হাত বেশি। সহজ কথায়, সদ্য ফেলে আসা বছরে শীতেই বেশি ‘উষ্ণায়ন’ দেখেছে মৌসম ভবন।
মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, ২০২৩ দ্বিতীয় উষ্ণতম বছর হতে পারে, যদিও গ্রীষ্মে প্রবল গরম ছিল না। মার্চ থেকে মে, এই তিন মাসে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে মাত্র ০.০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। অথচ, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে গড় তাপমাত্রা ছিল ০.৮৩ ডিগ্রি বেশি। বছরের শেষে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে গড় তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি। বর্ষার চার মাসে ০.৭৪ ডিগ্রি বেশি। অর্থাত্, বর্ষা আর শীতের উষ্ণায়নেই পোড়া কপাল ২০২৩-এর।
আমজনতা অবশ্য অঙ্কের হিসেব না দেখেও জানেন, এ বার শীতের কামড় প্রায় নেই বললেই চলে। পঞ্জাব-হরিয়ানায় এক-দু’দিন বাদে গোটা দেশেই সে ভাবে শৈত্যপ্রবাহ দাপট দেখাতে পারেনি। জাঁকিয়ে শীতের দেখা মেলেনি বাংলাতেও। ডিসেম্বরে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামেনি। ২০১৭ সালের পর আর কখনও হয়নি এরকম।
জানুয়ারিতে কি জাঁকিয়ে শীত মিলবে?
আশা কম। বছরের পয়লা দিনে শীতপ্রেমীদের এই দুঃসংবাদটাই শুনিয়েছে মৌসম ভবন। আবহবিদরা ডিসেম্বরে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, রাতের তাপমাত্রার গড় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে। বাস্তবে তাই হয়েছে। জানুয়ারির জন্যও ঠিক এক পূর্বাভাস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে। বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বাংলা ‘উষ্ণ’ থাকারই বেশি সম্ভাবনা।
তাহলে কি জাঁকিয়ে শীত এ বার মিলবেই না?
একেবারে আশা ছাড়ছেন না আবহবিদরা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, ‘‘এই পূর্বাভাস গোটা মাসের নিরিখে দেওয়া। অন্তত একটা স্পেলে কিছু দিন জাঁকিয়ে শীত পাওয়ার আশা রাখা যেতেই পারে। কিন্তু কবে মিলবে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।’’
আপাতত পূর্বাভাস, মঙ্গলবার তাপমাত্রা সামান্য একটু কমতে পারে। বুধবার থেকে ফের তাপমাত্রা বাড়বে। কলকাতার তাপমাত্রা ১৭-১৮ ডিগ্রিতে পৌঁছে যেতে পারে। ১৪-১৫ ডিগ্রিতে পৌঁছতে পারে বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার তাপমাত্রা। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে পুবালি বাতাসের রমরমা বাড়বে। তার জেরেই পারদের উত্থানের ইঙ্গিত। শুধু তাই নয়, পশ্চিমী-পুবালি বিপরীতধর্মী বাতাসের সংঘর্ষে ঝাড়খণ্ড ও ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় বৃষ্টিও হতে পারে। ৪ থেকে ৬ জানুয়ারির মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূমে।
তার পর কি শীত ফিরবে?
গণেশবাবুর কথায়, ‘‘পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে কলকাতা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়ে গেলে, জলীয় বাষ্প কমে ঠান্ডা শুকনো বাতাসের দাপট বাড়তে পারে। ওই সময় উত্তর-পশ্চিম ভারতে নতুন কোনও পশ্চিমী ঝঞ্ঝা না-এলে শীত স্বমহিমায় ফিরতে পারে। আসলে উত্তুরে-পশ্চিমী বাতাসকে বাধাহীন ভাবে বইতে হবে। যে শর্ত এখনও পর্যন্ত পূরণ হচ্ছে না।’’
দেশ জুড়ে এমন ফিকে কেন শীত? সুদূর প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে আঙুল তুলছেন গণেশবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এল নিনো থাকলে শীতের দাপট কম থাকে।’’ আশঙ্কার কথা কী জানেন? চলতি বছরে আরও কয়েক মাস এল নিনো পরিস্থিতি চলবে। শীত তাহলে ছন্দে ফিরবে কী করে!