মমতার উপস্থিতিতে ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়নি, সাফ জানাল কমিশন
কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়, ২১০ নম্বর নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের সাত নম্বর পোলিং স্টেশনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। সেই কারণে ভোটপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে জেনারেল অবজার্ভার হেমেন দাস ও পুলিশ অবজার্ভার আশুতোষ রায়কে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বলা হয়।
কলকাতা: ভোট চলাকালীন ছাপ্পাভোটের অভিযোগ ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল নন্দীগ্রামের বয়ালে। পরিস্থিতি তদারকি করতে দুপুর ১টা নাগাদ রেয়াপাড়ার অস্থায়ী বাড়ি থেকে বয়াল মক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ নম্বর বুথের উদ্দেশে রওনা দেন মমতা। রাস্তায় তাঁকে ছেঁকে ধরেন তৃণমূল সমর্থক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ করেন, বুথের দখল নিয়েছে বিজেপি। অবাধে ছাপ্পাভোট করে যাচ্ছে তারা। তৃণমূলের এজেন্টকে পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এর পর ধুন্ধুমার কাটিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টা পর নন্দীগ্রামের বয়ালের বুথ থেকে বেরোন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী। এদিকে অভিযোগে ওঠে এই দীর্ঘসময় ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) জানাল মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ওই বুথে প্রায় দেড় ঘণ্টা হাজির ছিলেন। কিন্তু এতে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া থেমে থাকেনি।
কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়, ২১০ নম্বর নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের সাত নম্বর পোলিং স্টেশনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। সেই কারণে ভোটপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে জেনারেল অবজার্ভার হেমেন দাস ও পুলিশ অবজার্ভার আশুতোষ রায়কে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বলা হয়েছিল। চারটের সময় কমিশনকে পাঠানো ওই রিপোর্টে জেনারেল অবজার্ভার জানান, ওই কেন্দ্রে একবারও ভোট প্রক্রিয়া থেমে থাকেনি। খুব ভালো ভাবেই ভোট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ওই বুথ থেকে বেরিয়ে যান দুপুর ৩ টা ৩৫ মিনিটে। তার পর চারটে পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বুথে ৭৪ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে কমিশনকে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
প্রসঙ্গত, বয়ালের ওই বুথে যখন ধুন্ধুমার কাণ্ড, সেই সময় বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী সংবাদমাধ্যমকে জানান, খেলা যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ওই বুথে ৭০ শতাংশ ভোটই হয়ে গিয়েছে। এখন গিয়ে আর কিচ্ছু করার নেই মমতার। বরং ওই সময়ে ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এর পরেই বুথে বসেই সংবাদমাধ্যমে মমতা অভিযোগ করেন, বয়ালের ওই বুথে ৮০ শতাংশ ছাপ্পাভোট হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উস্কানিতে বহিরাগতদের এনে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা চলছে। মমতার কথায়, ‘‘বিহার ও উত্তরপ্রদেশের গুন্ডারা এসে ঝামেলা পাকাচ্ছে। যারা ঝামেলা করছে, এক জনও বাংলা জানে না। সব হিন্দি বলছে।’’ভোটে ‘চিটিংবাজি’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। এই প্রেক্ষিতেও প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুন: বয়ালে মেজাজ হারিয়ে সাংবাদিককে মারতে গেলেন মমতা
এদিন বিকেলে পৃথক ভাবে একটি হাতে লেখা অভিযোগপত্র সিইও-র মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। বলা হয়েছে, ওই চিঠি স্পেশ্যাল জেনারেল অবজার্ভার অজয় নায়েক ও স্পেশ্যাল পুলিশ অবজার্ভার বিবেক দুবেকে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তাঁদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।