Supreme Court: সুপ্রিম কোর্টে বড় কথা CBI-র, আশার আলো দেখছেন ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী
Supreme Court: প্রায় ২ ঘণ্টার শুনানি শেষে এদিন রায়দান স্থগিত রাখেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কবে রায়দান হবে, তা নিয়ে শীর্ষ আদালতের তরফে কিছু বলা হয়নি। তবে আইনজীবীরা বলছেন, দ্রুত এই মামলায় রায় দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।

নয়াদিল্লি: যোগ্য-অযোগ্য প্রার্থীদের কি পৃথকীকরণ সম্ভব? ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শেষ শুনানিতে এই নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ কী বলে, সেদিকেই নজর ছিল সবার। আর সোমবার মামলার শেষ শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের আইনজীবীর সওয়ালে আশার আলো দেখছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। যদিও এদিন শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রেখেছে শীর্ষ আদালত।
২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলায় এদিন শেষ শুনানি হয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে প্রায় ২ ঘণ্টা শুনানি হয়। গত ২৭ জানুয়ারি শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন, ১০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শেষ শুনানি হবে। যোগ্য-অযোগ্য প্রার্থী পৃথকীকরণ সম্ভব না হলে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করা হবে।
এদিন মামলার শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, “নায়সা আমাদের জানায় যে কোনও ডেটা নেই। তারপর আমরা ডেটা স্ক্যানটেক থেকে ডেটা সংগ্রহ করি। এরপর আমরা পঙ্কজ বনশলের (নায়সার প্রাক্তন কর্তা) কাছ থেকে ডেটা সংগ্রহ করি। দুটো ডেটাকে মিলিয়ে দেখি।”
ডেটা স্ক্যানটেক (OMR উত্তরপত্র স্ক্যানিংয়ে এই সংস্থা যুক্ত ছিল) থেকে পাওয়া হার্ডডিস্ক ও পঙ্কজ বনশলের কাছ থেকে পাওয়া ৩টি হার্ডডিস্কের হ্যাশ ভ্যালু মিলে গিয়েছে বলে সিবিআই আইনজীবী জানান। সিবিআইয়ের আইনজীবী আরও বলেন, “এসএসসির কাছে যে ডেটা ছিল, তাতে কারসাজি হয়েছিল। আমাদের তদন্তে স্পষ্ট, পঙ্কজ বনশলের কাছে যে ডেটা রয়েছে, তাতে কারসাজি হয়নি।” পঙ্কজ বনশলের কাছ থেকে পাওয়া ডেটার ভিত্তিতে যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণ সম্ভব বলে সিবিআইয়ের আইনজীবী সওয়াল করেন।
যে প্রার্থীরা সিলেক্ট হয়নি, তাঁদের তরফে আইনজীবী বিভা মাখিজা বলেন, “পঙ্কজ বনশলের ডেটার ভিত্তিতে নতুন মেধাতালিকা তৈরি হোক। সাদা ওএমআর যাঁদের, তাঁদের প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হোক।”
শুনানিতে এসএসসি-র আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত জানালেন, যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণ করে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এদিন সুপ্রিম কোর্টে তিনি জানান, ব়্যাঙ্ক জাম্পিং ও আউট অব প্যানেল নিয়ে তাঁদের কাছে তথ্য রয়েছে। কিন্তু, OMR মিসম্যাচ নিয়ে কোনও তথ্য নেই।
এদিন আবার মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টানেন এক আইনজীবী। এই মামলায় সিবিআই তদন্ত সম্পূর্ণ অবৈধ বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কোনও আবেদন ছাড়াই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মামলা বিচারাধীন থাকার সময় তিনি সংবাদমাধ্যমে ইন্টারভিউ দেন। এবং পরবর্তীকালে রাজনীতিতে যোগ দেন। স্বাভাবিকভাবেই এই সিবিআই তদন্ত আইনত বৈধ নয় বলে দাবি করেন ওই আইনজীবী।
তাঁকে থামিয়ে দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এই ধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। আমরা তথ্যের উপর দাঁড়িয়ে শুনানি করছি। এখানে রাজনীতির কোনও কথা হবে না।”
পঙ্কজ বনশলের ডেটা নির্ভুল বলে সিবিআইয়ের আইনজীবীর সওয়ালের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “সিবিআই বলছে, বনশলের ডেটা প্রকৃত সত্য। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না এটাই প্রকৃত ডেটা। কারণ আমাদের হাতে অরিজিনাল মার্কসিট নেই। আমরা পঙ্কজ বনশলের ডেটাকেও সন্দেহ করছি।” প্রায় ২ ঘণ্টার শুনানি শেষে এদিন রায়দান স্থগিত রাখেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কবে রায়দান হবে, তা নিয়ে শীর্ষ আদালতের তরফে কিছু বলা হয়নি। তবে আইনজীবীরা বলছেন, দ্রুত এই মামলায় রায় দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিকে, সিবিআইয়ের এদিনের সওয়ালের পর আশার আলো দেখছেন কলকাতার ওয়াই চ্যানেলে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁরা বলছেন, “সিবিআইয়ের সওয়ালে আমরা আশার আলো দেখছি। সিবিআই বলেছে, বনশলের হার্ডডিস্ক ও ডেটা স্ক্যানটেকের হার্ডিডিস্কের হ্যাশ ভ্যালু মিলে গিয়েছে। অর্থাৎ এর উপর ভিত্তি করে যোগ্য ও অযোগ্য পৃথকীকরণ সম্ভব।” এখন সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়, সেদিকে তাকিয়ে তাঁরা।





