Sujay Krishna Bhadra in SSKM: ডান পায়ে রোগ, তাও কেন মাসাধিকাল SSKM-এ ‘কাকু’? মিলল বিস্ফোরক তথ্য
Sujay Krishna Bhadra in SSKM: গত ১৪ জুলাই সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দেয় আদালত। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ইডি-কে জানায়, কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার উপযুক্ত ঘর নেই তাঁদের। যদিও অতীতে সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দির কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের নজির রয়েছে।
কলকাতা: একটা কণ্ঠস্বরের নমুনা পেতে প্রায় ৬ মাস কেটে গিয়েছে ইডি-র। কালঘাম ছুটেছে দুঁদে অফিসারদেরও। সেই জেল থেকে শুরু করে এসএসকেএম- কার্যত দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়েছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বরের জন্য। আর কাকু? কখনও আইসিইউ, কখনও কার্ডিওলজি বিভাগের বেডে চিকিৎসাধীন থেকেছেন? বাইপাস সার্জারির পর প্রায় ৫ মাস কেটে গেলেও কেন সুজয়কৃষ্ণ ছাড়া পাচ্ছেন না হাসপাতাল থেকে? প্রশ্ন উঠেছে খোদ চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে। কী এমন অসুস্থ তিনি?
ইডি সূত্রে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। খোদ এসএসকেএম-এর চিকিৎসকই বলছেন, গুরুতর কোনও অসুস্থতা নেই সুজয়কৃষ্ণের? এমনকী হৃদযন্ত্রের স্পন্দন বা হার্টবিটও অস্বাভাবিক নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিম্ন আদালতের অর্ডারে উল্লেখ রয়েছে সে কথা।
গত ১৪ জুলাই সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দেয় আদালত। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ইডি-কে জানায়, কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার উপযুক্ত ঘর নেই তাঁদের। যদিও অতীতে সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দির কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের নজির রয়েছে।
এর ঠিক তিন দিন পর ১৭ জুলাই সটান এসএসকেএম-এ ভর্তি হয়ে যান ‘কালীঘাটের কাকু’। এসএসকেএম-এর চিকিৎসকেরা তাঁর ওপেন হার্ট বাইপাস সার্জারির পরামর্শ দেন। তবে এসএসকেএম-এ অপারেশনে আপত্তি ছিল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের। তাঁর ইচ্ছা মতো একবালপুরের বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়। সেই হাসপাতালের ‘ডিসচার্জ সামারি’তে বলা ছিল, অস্ত্রোপচারের পর শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সুজয়কৃষ্ণকে ওই বেসরকারি হাসপাতালেই নিয়ে যেতে হবে।
ছাড়া পাওয়ার পর জেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কয়েকদিনের মধ্যেই আবার অসুস্থ বোধ করেন তিনি। এরপর বেসরকারি হাসপাতালে না গিয়ে তিনি যান এসএসকেএম-এ। গত ২২ অগস্ট এসএসকেএম-এর কার্ডিওলজির বিভাগীয় প্রধান দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন সুজয়কৃষ্ণ।
১৮ অক্টোবর পিএমএলএ-র ৫০ নম্বর ধারায় চিকিৎসক দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের বয়ান রেকর্ড করে ইডি। নিম্ন আদালতের রায়ে উল্লেখ রয়েছে, বয়ানে চিকিৎসক দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায় জানান, বেসরকারি হাসপাতালে যেহেতু অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন, তাই অসুস্থতার জন্য বেসরকারি হাসপাতালেই যেতে পারতেন কাকু। ওই রায়েই উল্লেখ রয়েছে, সুজয়কৃষ্ণের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ঠিক কী বলেছিলেন দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, ‘সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কোনও বড় ধরনের শারীরিক সমস্যা নেই। ডান পায়ে একটা আলসার রয়েছে। হৃদরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষায় হৃদস্পন্দনের হারেও কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়নি।’
উল্লেখ্য, এরপরও ইডি-কে নমুনা সংগ্রহে বাধা দেন এমএসভিপি। তাঁর যুক্তি ছিল, নমুনা দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই সুজয়কৃষ্ণ। ইডি আদালতের জানায়, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র নিজে কণ্ঠস্বর দিতে রাজি ছিলেন। এরপর আদালত নির্দেশ দেয়, ইএসআই হাসপাতালে কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। ৮ ডিসেম্বর সেই মতো ইডি-র আধিকারিকরা জোকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এসএসকেএম-এ পৌঁছে জানতে পারেন ‘কাকু’ আইসিইউ-তে। অবশেষে আদালতের নির্দেশে বুধবার গভীর রাতে সুজয়কৃষ্ণের কন্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।