AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

জনপ্রিয়, সুস্বাদু কিন্তু মারাত্মক বিষাক্ত এই ৪ খাবার খেলে মৃত্যুও হতে পারে!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর শুধুমাত্র দূষিত খাবার খেয়ে ৬ কোটি মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দূষিত খাবার খাওয়ার পর ৪২ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর তথ্যও পেশ করেছে হু।

জনপ্রিয়, সুস্বাদু কিন্তু মারাত্মক বিষাক্ত এই ৪ খাবার খেলে মৃত্যুও হতে পারে!
এই খাবারগুলি খেলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে!
| Updated on: Apr 28, 2021 | 7:09 PM
Share

দুনিয়ার সুস্বাদু খাবারের খোঁজ তো সকলেই রাখেন। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই মানুষ যাক না কেন, সেখানকার প্রসিদ্ধ খাবার চেখে না দেখলে সেই ভ্রমণ পরিপূর্ণই হয় না। কিন্তু দুর্দান্ত ডিনারের পর মধ্যরাত থেকেই আপনার বমি বমি ভাব, শরীরের অস্থিরতা, মাথা ঘোরা, পেটে ব্যাথা শুরু হতেই আপনাকে বিদেশের মাটিতে হাসপাতালে ভর্তি হতে হল। করোনাভাইরাস ছাড়াও এই বিশ্বে আরও মারাত্মক ও ভয়ংকর জিনিস রয়েছে, যা খেলে বিষক্রিয়ায় আপনার মৃত্যুও হতে পারে।

ঠিক মতো রান্না না করা চিকেন, সঠিকভাবে না ধোয়া লেটুস শাক খেলে শরীরের মধ্যে বিষক্রিয়া তৈরি হয়। কয়েক ঘন্টার অসম্ভব ব্যাথা সহ্য করার পর আপনি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। বিশ্বের সব প্রান্তেই রয়েছে প্রসিদ্ধ কিছু খাবার। যে খাবারগুলি দিয়ে সুস্বাদু রেসিপি তৈরি হলেও, সঠিক উপায় না জেনে খেলে এক কামড়েই আপনার শরীরে মধ্যে বিষক্রিয়া হতে পারে। এমনকি কিছু বোঝার আগেই আপনি অচৈতন্য হয়ে পড়তে পারেন। চিকিত্‍সকরা জানাচ্ছেন, বিশ্বে এমন অনেক বিষাক্ত খাবার রয়েছে, যা অনেক দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার হিসেবে পরিচিত। সেগুলি খেলে অনেক সময় মানুষের মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে।

১. ফুগু (Pufferfish)- জাপানে অত্যন্ত জনপ্রিয় ফুগু বা পাফারফিস বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত খাবারগুলির মধ্যে অন্যতম। এই ফুগু মাছ দিয়ে তৈরি রেসিপি অত্যন্ত জটিল। সঠিকভাবে রান্না না করলে যে কোনও বয়সের মানুষ বিষক্রিয়ায় মৃত্যুবরণ করতে পারে। ফুগুর লিভারে রয়েছে টেট্রোডোটক্সিন নামক একটি মারাত্মক বিষ রয়েছে। এই বিষ শরীরের সোডিয়াম পরিমাণ কমিয়ে দেয় ও পেশীগুলিকে অকেজো করে দেয়। এই বিষের জেরে মানুষের প্রথম শ্বাসকষ্ট হতে শুরু করে। তারপরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বহু বছর ধরে ট্রেনিং-প্রাপ্ত দক্ষ শেফরা এই জনপ্রিয় পদ দিয়ে রান্না করতে পারেন। জাপানে এটি জনপ্রিয় হলেও আমেরিকায় লাইসেন্স ছাড়া এই মাছ বিক্রি করা সম্ভব নয়। তথ্য বলছে, একটি ফুগুর বিষে একসঙ্গে ৩০জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মারা যেতে পারে।

২. আক্কি ফল (Ackee fruit)- জামাইকার জাতীয় ফল। আমেরিকায় কাঁচা আক্কি ফলের উপর ১৯৭৩ সাল থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা রয়েছে। এই লাল-কমলা রঙের ফলটি দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। অপরিশোধিত এই ফলের মধ্যে রয়েছে হাইপোগ্লাইসিন নামে একধরণের বিষাক্ত টক্সিন। যা রক্তের গ্লুকোজ উত্‍পাদনকে ব্যহত করে। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার ঝুকি বাড়িয়ে তোলে। কাঁচা আক্কি ফল খেলে মানুষ কোমায় চলে যেতে পারে। এমনকি মৃত্যুর সম্ভাবনাও হতে পারে। এই ফলের বীজগুলিও অত্যন্ত বিষাক্ত। যদি এই ফল খেতেই হয়, তাহলে ব্লাঞ্চিং ( জলের মধ্যে গরম করে বরফ-ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রাখা) করে কখান। গাছের মধ্যে পুরোপুরি পাকা হলে তবেই এই ফলের স্বাদ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। আমেরিকায় শুধুমাত্র ফ্রোজেন ও ক্যানড পাকা আক্কি খাওয়ার অনুমতি রয়েছে।

৩. সান্নাকজি (Sannakji)- রোমাঞ্চকর কোনও খাবারের খোঁজ করলে এই সান্নাকজি অর্ডার দিতে পারেন। কোরিয়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয় এই বেবি অক্টোপাস চাখতে অনেকেই ভিড় করেন। ডেয়ারডেভিল রেসিপির জন্য সান্নাকজি একবার ট্রাই করতে পারেন। ফুগু বা আক্কির মতো সান্নাকজি মারাত্ম কোনও বিষাক্ত কাবার না হলেও বেশিরভাগ ভোজনরসিকই জানেন না এই বেবি অক্টোপাস জ্যান্ত অবস্থায় কীভাবে খেতে হয়! হ্যাঁ ঠিকই দেখছেন। জ্যান্ত অবস্থাতেই এই বেবি অক্টোপাস খাওয়ার রীতি রয়েছে কোরিয়ায়। অক্টোপাসের স্যাকসান প্যাডস মুখের মধ্যে, গলার ভিতরে আটকে থাকতে পারে, যা শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে আপনাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে। ফুড ও ওয়াইনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর সান্নাকাজি খেয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়। ভাল করে না চিবালে গলার মধ্যে বেবি অক্টোপাসের সাকসান প্যাডগুলি আটকে যেতে পারে।

৪. হকারল (Hákarl)- হকারল হল গ্রিনল্যান্ডের একধরণের হাঙ্গরের মাংস। গ্রিনল্যান্ড হাঙরের মাংসের মধ্য রয়েছে ত্রিমেথিলামাইন অক্সাইড এবং ইউরিক অ্যাসিড, যা খেলে চরম নেশা, অন্ত্রের সমস্যা, স্নায়বিক সমস্যা এবং কখনও কখনও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। গ্রিনল্যান্ডের ভাইকিংগসরা এই হাঙরের মাংস খেতে পছন্দ করে। আইসল্যান্ডের অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী এই মাংস নিরাপদে প্রস্তুত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বালির নীচে শুকনো করে রাখা হয়। তারপর রোদের মধ্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এই মাংস থেকে গেঁজে যাওয়া পচা গন্ধ বের হয়। তাই আইসল্যান্ডবাসীরা স্থানীয় মদ দিয়ে এটিকে ধুয়ে ফেলেন। এই মাংস দিয়ে রেসিপি খেলে প্রথম দিকে কিছু অস্বস্তিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনুভূতি হয়।