Kaushiki Amavasya 2023: সামনেই কৌশিকী অমাবস্যা, কবে ও কেন পালন করা হয় এই বিশেষ তিথি?
Significance: এদিন দেবী কালীর তথা তারা মায়ের বিশেষ পুজো করা হয়ে থাকে। অনেকেই বাড়িতে কালীপুজো করে থাকেন। সারাদিন-রাত একটা ঘিয়ের প্রদীপ ঠাকুরের সামনে জ্বালিয়ে রাখার নিয়ম।
দশমহাবিদ্যার অন্যতম মহাবিদ্যাশক্তি হল আদ্যাশক্তি। সেই আদ্যাশক্তির আরাধনা করেন যাঁরা, তাঁদের কাছে কৌশিকী অমাবস্যা। ভাদ্রমাসের এই তিথিতে তন্ত্রমতে ও শাস্ত্রের রীতি মেনেই কালীপুজো করা হয়ে থাকে। এই অমাবস্যা মেনে চললে জীবনে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায়। কথিত আছে, কঠিন ও গুপ্ত সাধনার মাধ্যমে কৌশিকী অমাবস্যা পালন করলে সিদ্ধিলাভ ঘটে, আশাতীত সাফল্য লাভ করতে পারেন ভক্তরা। শুধু তাই নয়, এই অমাবস্যার বিশেষ লগ্নে পুজো করলে স্বর্গ ও নরকের দরজা খুলে যায়।
শাক্ত বাঙালিদের কাছে এই অমাবস্যার গুরুত্ব যে কত বড়, তা তারাপীঠে না গেলে বিশ্বাস হবে না। সামনেই রয়েছে কৌশিকী অমাবস্যা। আর সেই কারণেই বর্তমানে তারাপীঠে ভিড় জমিয়েছেন বাঙালি-অবাঙালিরা। সারা বিশ্ব থেকেই লক্ষ লক্ষ মানুষ এই ময় বীরভূমের জনপ্রিয় ও জাগ্রত দেবীর কাছে নিজের ইচ্ছে ও মঙ্গল কামনা প্রার্থনা করেন। পঞ্চাঙ্গ মতে, এবছর কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হবে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর। শেষ হবে ১৪সেপ্টেম্বর অমাবস্যায়। হিন্দুশাস্ত্রেই শুধু নয়, বৌদ্ধশাস্ত্রেও এই অমাবস্যার গুরুত্ব রয়েছে।
এদিন দেবী কালীর তথা তারা মায়ের বিশেষ পুজো করা হয়ে থাকে। অনেকেই বাড়িতে কালীপুজো করে থাকেন। সারাদিন-রাত একটা ঘিয়ের প্রদীপ ঠাকুরের সামনে জ্বালিয়ে রাখার নিয়ম। এই প্রদীপ যেন কোনওভাবেই নিভে না যায়। কালীপুজোয় কোনও খুঁত থাকতে নেই। তবে এই পুজোর আয়োজন খুব সাধারণ। নৈবেদ্য হিসেবে আতপ চাল, নারকেল, ১০৮টি জবা ফুল, ঘিয়ের প্রদীপ ও ঘি বনিবেদন করা যায়। ভাদ্রমাসের এই অমাবস্যায় সকল ভক্তের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। তন্ত্র-মন্ত্র সাধনা যাঁরা করেন, তাঁদের কাছে এক পবিত্র দিন।
পৌরাণিক কাহিনি মতে, শক্তিশালী ও পরাক্রমশালী অসুর নিকুম্ভ হত্যা করতে দেবীর শরীরকোষ থেকে আরও এক দেবী সৃষ্টি হয়। শুরু হয় আদ্যাশক্তি ভগবতীর স্তব। সেই থেকে নাম হয় কৌশিকী। দেবী কৌশিকী সৃষ্টির পর ভগবতী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন। তারপর থেকে তিনি দেবী কালিকা বা কালী রূপে মর্ত্যে বন্দনা পেয়ে থাকেন। কৌশিকী অবতারে রূপ ধারণ করলে কালীর চার হাত, গলায় নরমুণ্ড, দেহে ব্যাঘ্রচর্ম পরিহিত থাকেন। কথিত আছে, এই তিথিতেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাখ্যাপা।
কৌশিকী অমাবস্যায় তারা মায়ের সঙ্গে সঙ্গে বামাখ্যাপারও পুজো করা হয়ে থাকে। এই পুজোয় খাঁড়া ও কুশ-কাটা ব্যবহার করা হয়। রীতি অনুযায়ী, তারা মাকে দেওয়া হয় পাঁচ রকমের ফল, ফুল, মিষ্টির ভোগ। তারপরেই শুরু সারারাত জেগে পুজো ও তন্ত্রসাধনা। প্রথা অনুসারে দুপুরের ভোগে থাকে শোল মাছ পোড়া। সঙ্গে থাকে ভাত বা পোলাও, পাঁচ রকমের ভাজা, মিষ্টি, শাক, পায়েস ইত্যাদি।