IPL 2025, Nicholas Pooran: গাড়ি দুর্ঘটনা থেকে বোলারদের ত্রাস, আইপিএল যেন নতুন লাইফ
Lucknow Super Giants: কয়েক মাস কেটেছিল খুব অস্বস্তিতে। লখনউ সুপার জায়ান্টস ক্যাপ্টেন ঋষভ পন্থের মতোই। গুরুতর গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। ঠিকানা ছিল হুইলচেয়ার। সেই পুরান এখন বোলারদের 'ফিয়ার'।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ সমর্থকদের জন্য বিনোদন। ক্রিকেটের জন্য সাপ্লাই লাইন। আর ক্রিকেটারদের জন্য? নতুন লাইফ বলাই যায়। কেউ নিয়মিত ভালো খেলেন, জাতীয় দলেও থেকে যান। অনেকের ফর্ম খারাপ যায়। আইপিএলে পারফর্ম করে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন। কখনও দরজা খুলেও যায়। কখনও অপেক্ষা বাড়ে।
ব্যস এটুকুই? তা হয়তো অনেকের ক্ষেত্রে নয়। কিছু ক্রিকেটারের কাছে এটা নতুন জীবনও। কঠিন কোনও ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চ। ভালো থাকার, ভালো রাখার মাধ্যম। নিকোলাস পুরানের কাছেও কি তাই? হতে পারে। কয়েক মাস কেটেছিল খুব অস্বস্তিতে। লখনউ সুপার জায়ান্টস ক্যাপ্টেন ঋষভ পন্থের মতোই। গুরুতর গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। ঠিকানা ছিল হুইলচেয়ার। সেই পুরান এখন বোলারদের ‘ফিয়ার’।
আইপিএলে প্রচুর বিদেশি খেলেন। সকলেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন না। ধারাবাহিক পারফর্মও করতে পারেন না। হাতে গোনা কিছু ক্রিকেটার সকলের পছন্দের হয়ে থাকেন। নিকোলাস পুরান এমনই একজন। অন্তত লখনউ সুপার জায়ান্টস সমর্থকদের কাছে তো অবশ্যই। ধারাবাহিক পারফর্মার। এ মরসুমেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। পঞ্জাব, সানরাইজার্সের পর লখনউতে যোগ দিয়েছিলেন। এ মরসুমেও তাঁকে রিটেন করেছে সুপার জায়ান্টস।
এ মরসুমে তিন ম্যাচ খেলেছে লখনউ। আজও ম্যাচ রয়েছে। আর তাতে লখনউ শিবিরের বড় ভরসা নিকোলাস পুরান। কেনই বা হবেন না! তিন ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান তাঁরই। তিন ম্যাচে করেছেন ১৮৯ রান। তাও আবার প্রায় ২২০ স্ট্রাইকেরেটে। ৩ ম্যাচেই ১৫টি ছয় মেরেছেন। এখনও তো টুর্নামেন্ট সেই অর্থে শুরুই হয়নি! অথচ ১৯ বছরের সেই তরুণকে চিকিৎসক যা বলেছিলেন, এরপর যে সব কিছুই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ওই যে সেই অতি পরিচিত কথা- যে সয়, সে রয়!
অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পরই এক তরুণকে নিয়ে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে হইচই পড়ে গিয়েছিল। সকলের মুখে মুখে ভবিষ্যৎ তারকা নিকোলাস পুরানের নাম। এ ছেলে শীঘ্রই বিশ্ব কাঁপাবে সেই স্বপ্নই দেখছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট প্রেমীরা। কিন্তু সে সময়ই অঘটন। অনুশীলন থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। নিজেই ড্রাইভ করছিলেন। গুরুতর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁর গাড়ি। প্রথমে এক ধাক্কায় টলমল, কোনওরকমে নিজের গাড়িকে সঠিক রাস্তায় আনেন। এ কারণেই তো দুর্ঘটনা বলে! তিনি সঠিক রাস্তায় এলেও আরও একটা গাড়ি ধাক্কা মারে।
নিকোলাস পুরানের যখন চোখ খোলে, তাঁর গাড়ি কার্যত থেঁতলে গিয়েছে। সামনে অ্যাম্বুলেন্স। দ্রুত চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। ১২ দিন হাসপাতালে, এরপর ভরসা হুইলচেয়ার। ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ক্রিকেট খেলতে পারবেন তো? এমন প্রশ্নে ডাক্তার অবাক! অভিব্যক্তি দেখে প্রশ্নে একটু সংশোধন করেন নিকোলাস পুরান। আচ্ছা, দৌড়তে পারব তো? তাতেই ডাক্তার যেভাবে ‘হয়তো’ বলেছিলেন, আর ভরসা রাখা যায়?
ডাক্তারের সেই ‘হয়তো’র ধোঁয়াশা থেকে ইচ্ছেশক্তি কতটা মজবুত থাকলে এই অবধি পৌঁছনো যায়? তা কল্পনা করাও কঠিন। নিকোলাসের পুরনো কথা এখন পুরনো হয়ে গিয়েছে। সব এখন নতুন। কিন্তু সেই যে, পুরনো সেই দিনের কথা, সে কি ভোলা যায়? বরং সেই কথাগুলোই যেন এগিয়ে যাওয়ার ভরসা।





