Thomas Cup 2022: গুরুতর চোটেও হারিয়ে যাইনি, ইতিহাস তৈরি করে বলছেন প্রণয়
ইতিহাস তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এতেই থেমে থাকতে চান না প্রণয়-শ্রীকান্তরা। চাপের মুখে ডেনমার্ককে হারিয়ে থমাস কাপের ফাইনালে ওঠা ভারতীয় টিমের চোখে স্বপ্ন চ্যাম্পিয়ন হওয়া।
ব্যাঙ্কক: চোটের কারণে এক সময় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এতটাই যে কোর্টে ফিরবেন কি করে, বুঝতে পারছিলেন না। সে সব ভুলে সেই তিনিই কিনা ম্যাজিক দেখালেন। মালয়েশিয়া পর ডেনমার্ক— অন্তিম গেম পেলেই যেন দুরন্ত পারফর্ম করছেন। ২-২ থেকে মালয়েশিয়াকে হারিয়ে ছিল ভারত তাঁরই জন্য। ২০১৬ সালের থমাস কাপ (Thomas Cup 2022) চ্যাম্পিয়ন ডেনমার্ককেও ছিটকে যেতে হল সেই এইচএস প্রণয়ের (HS Prannoy) জন্যই। এত দিন সেমিফাইনালই ছিল থমাস কাপে ভারতের সেরা পারফরম্যান্স। ৪৩ বছর পর আবার সেই রেকর্ডই ছুঁয়েছিল এ বারের টিম। কিন্তু দুরন্ত ফর্মে থাকা প্রণয়ের জন্যই তাও ছাপিয়ে গেল। ফাইনালে পৌঁছে নতুন ইতিহাস তৈরি করল ভারত। ইন্দোনেশিয়াকে হারাতে পারলে ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের (Indian Badminton) ইতিহাসে চিরস্মরণীয় থেকে যাবেন প্রণয়-শ্রীকান্তরা।
সেমিফাইনালে ডেনমার্কের রাসমুস গেমকের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন প্রণয়। বিশ্বের ১৩ নম্বর প্লেয়ারের বিরুদ্ধে প্রথম গেমটা ১৩-২১ হেরে গিয়েছিলেন প্রণয়। কিন্তু সেখান থেকে দুরন্ত ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন ভারতীয় শাটলার। দ্বিতীয় গেমটা ২১-৯ জিতে ম্যাচে ফেরেন প্রবল ভাবে। তৃতীয় গেমটা ২১-১২ জিতে জিতে ইতিহাস তৈরি করেন প্রণয়। রাসমুকের বিরুদ্ধে ম্যাচটা কোনও ভাবেই সহজ ছিল না প্রণয়ের কাছে। পা হড়কে কোর্টে পড়ে যান তিনি। চোটও পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে যে ম্যাচ জিতবেন, সেটাই ভাবা যায়নি তখন।
দেশকে থমাস কাপের ফাইনালে তুলে প্রণয় বলছেন, ‘ওই সময় অনেক কিছু চলছিল আমার মাথায়। কোর্টে পড়ে যাওয়ার পর মনে হয়েছিল, আমি হয়তো আর পারব না। বুঝতে পারছিলাম না, কী করব। মাথায় তখন একটাই জিনিস এসেছিল, আর যাই হোক না কেন, কোনও ভাবেই ম্যাচটা ছাড়ব না। শেষ দেখে ছাড়ব। যন্ত্রণা আমাকে নিরাশ করেনি। দ্বিতীয় গেমে ফিরে এসেছিলাম। তৃতীয় গেমের সময় আমি ছন্দে পেয়ে গিয়েছিলাম নিজেকে।’
এর আগে কখনও থমাস কাপের ফাইনালে পা রাখেনি ভারত। ১৯৭৯ সালে সেমিফাইনালে উঠেছিল। এটাই ছিল ভারতের সেরা সাফল্য। অতীত যেন পাল্টে দিতে চাইছেন ভারতীয় শাটলাররা। প্রণয় বলছেন, ‘ডেনিস প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ও তৃতীয় গেমটা খুব কটিন ছিল। সেই কারণে পাল্টা চাপ তৈরি করার চেষ্টা করেছিলাম। আমি খুব ভালো করে জানতাম, গেমের দ্বিতীয়ার্ধটায় যদি লিড নিয়ে পা রাখতে পারি, তা হলে ম্যাচটা জেতার সম্ভাবনা আছে। সেই কারণেই প্রথম ১১টা পয়েন্ট তোলার সময় কোনও ভাবেই হাল ছাড়িনি।’
বিশ্ব মিটে রুপোজয়ী কিদাম্বি শ্রীকান্ত, বিশ্বের ৮ নম্বর জুটি সাত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি-চিরাগ শেঠী আর প্রণয় ডেনমার্কের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচটা টিকিয়ে রেখেছিলেন। চিরাগ বলেছেন, ‘ডাবলস ম্যাচটা যখন তৃতীয় গেমে গড়িয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল আর পারব না। কিন্তু ছন্দ ধরে রাখতে পেরেছিলাম। কিন্তু চাপটা তখন অপরিসীম ছিল। কেমন সার্ভ করব, বুঝতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত ফ্লিক সার্ভ করেছিলাম। ওটাই কাজে লেগে গিয়েছিল।’