Colombia’s volcano Increased: একদিনে 11,600 বার ভূমিকম্প, যখন তখন ফাটতে পারে কলম্বিয়ার এই আগ্নেয়গিরি
The Nevado Del Ruiz Volcano: 38 বছর পর আবার জেগে উঠেছে এই আগ্নেয়গিরি। আগ্নেয়গিরি থেকে আসা সংকেত যে কলম্বিয়ান সরকারের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা থাকে না।
Global Volcanism Program: প্রাকৃতিক বিপর্যয় যে কতটা ভয়ানক হতে পারে, সেটা তারাই জানে যারা সেই ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। তার উপর যে হারে প্রকৃতি তার ভারসাম্য দিনের পর দিন হারাচ্ছে, তাতে পৃথিবীর সব মানুষকে খুব শীঘ্রই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। এমনটাই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা (Scientists)। এর আগেও বহুবার প্রকৃতি নিয়ে সতর্কতা দারি করেছেন। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা যে বার্তা দিয়েছেন, তা বেশ উদ্বেগজনক। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, কলম্বিয়ার নেভাডো দেল রুইজ (The Nevado Del Ruiz Volcano) আগ্নেয়গিরি, পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে চলেছে। 38 বছর পর আবার জেগে উঠেছে এই আগ্নেয়গিরি। আগ্নেয়গিরি থেকে আসা সংকেত যে কলম্বিয়ান সরকারের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা থাকে না। তাহলে এখন প্রশ্ন একটাই, তা হল বর্তমানে কলম্বিয়ান সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে? আর এই আগ্নেয়গিরির (Volcano) অগ্ন্যুৎপাত কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে?
বর্তমানে আগ্নেয়গিরির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন এলাকা সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। কলম্বিয়ার নেভাডো দেল রুইজ আগ্নেয়গিরি বোগোটা থেকে প্রায় 80 মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। 1980 এর দশকে, এই আগ্নেয়গিরিতে একটি বিধ্বংসী অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল, যার কারণে 25,000 মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। পুরো বসতি তুষারপাত ও পাথরের নীচে চাপা পড়ে যায়। তবে এবারেও কী এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করবে কলম্বিয়ায়? সেই বিষয়ে এখনও গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
বর্তমানে সেই স্থানের পরিস্থিতি কীরূপ?
ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি অনুসারে, প্রায় 57,000 মানুষ আগ্নেয়গিরির খুব কাছের অঞ্চলে বাস করে, যা ছয়টি প্রদেশে বিস্তৃত। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এখানে যোগাযোগের তেমন কোনও ব্য়বস্থা নেই। তাই আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বসবাসকারী লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন হতে পারে। তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার আগেই অনেক বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে। আর সেই সঙ্গে গ্লোবাল ভল্কানিজ়ম প্রোগ্রাম সম্প্রতি একটি আপডেট দিয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের 30 মার্চ, প্রায় 11,600টি ভূমিকম্প শনাক্ত করা হয়েছিল। যা আগামী দিনে বড় ধরনের বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে।
কিছু মানুষ তাদের জায়গা ছাড়তে রাজি নন, কিন্তু কেন?
প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো আগ্নেয়গিরির আশেপাশে বসবাসকারী লোকজনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এসব এলাকা সরিয়ে নিতে বলেছেন। সেখান থেকে আড়াই হাজার পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু কিছু মানুষ এমনও আছেন, যারা তাদের জায়গা ছাড়তে রাজি নন। শুনে অবাক লাগছে তাই না? এত বড় বিপদ আসবে জেনেও তারা জায়গা ছাড়বেন না? এরও কারণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তানি জানান, 1985 সালের বিধ্বংসী বিস্ফোরণ হয়েছিল এই একই জায়গায়। আর সেখান থেকে বেঁচে যাওয়া পরিবার এবং অন্যরা তাদের জায়গা ছেড়ে যাবেন না। আভেলিও অরটিজ নামের একজন আলু চাষি, যিনি 1985 সালের অগ্ন্যুৎপাত থেকে তার স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তান বেঁচে গিয়েছিলেন। তাই তারা আর কোনও রকম আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতকে ভয় পান না।
1985 সালে কী এমন হয়?
1985 সালের অগ্ন্যুৎপাতকে মানব ইতিহাসের চতুর্থ মারাত্মক আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বলে মনে করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, নেভাডো দেল রুইজ একটি স্ট্র্যাটোভোলকানো বা একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি (এদের চুড়ায় বিশাল খাঁদ দেখা যায়)। যৌগিক আগ্নেয়গিরি পৃথিবীর যেকোনও পর্বতের চেয়ে বড় এবং দেখতেও খুব সুন্দর হয়। এই ধরনের আগ্নেয়গিরি সাধারণত হাজার হাজার বছর ধরে সক্রিয় থাকে। মাউন্ট সেন্ট হেলেন্স, ক্রাকাতোয়া, মাউন্ট পিনাতুবো এবং হাঙ্গা-টোঙ্গা-হাঙ্গা-হাপাইকে যৌগিক আগ্নেয়গিরি বলা হয়। টোঙ্গায় 2022 সালের গোড়ার দিকে সবচেয়ে সাম্প্রতিক যৌগিক আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল। কিন্তু কলোম্বিয়ার এই দেখতে সুন্দর আগ্নেয়গিরি যে কখন ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, তা কেউ জানে না।