Madhya Pradesh: বংশ পরম্পরায় হয়ে আসছে ডাইনোসরের পুজো! মধ্যপ্রদেশের ঘটনায় তাজ্জব হয়ে যাবেন
Madhya Pradesh: ভূতত্ত্ব সম্পর্কিত পরীক্ষা করে তাঁরা জানতে পারেন, এই গোলাকৃতি পাথরগুলো কোনও ‘টোটেম’ বা ঠাকুর-দেবতার অংশ নয়, আদতে এগুলো বাইগন যুগে পৃথিবী দাপানো ডাইনোসরদের ডিম!
বিশ্বাস হোক বা অন্ধবিশ্বাস―ভারতীয় সভ্যতার প্রথম থেকেই নাগরিকদের একসূত্রে বেঁধে রেখেছে এই দুই। নিত্যনতুন দেবতার জন্ম দিতে যেমন কার্পণ্য করেনি সমাজ, তেমনই নানা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অগ্রগতিকে আটকে দিয়েছে কুসংস্কারের ঘনঘটা। তবে মাঝেমধ্যে শাপেও যে বর হয়, তার প্রমাণ মিলল মধ্যপ্রদেশে। বংশের পর বংশ ধরে ‘কুলদেবতা’ হিসেবে যে পাথরগুলোকে পুজো করত মান্দালই পরিবার, সেগুলো আসলে যে কী, তা জানার পর রাতের ঘুম ছুটেছে তাদের…
বংশপরম্পরায় হত পুজো…
মধ্যপ্রদেশের ধর অঞ্চলের মান্দালই বংশ (Mandaloi)। যুগের পর যুগ হাতের তালুর আকারের গোল পাথর পুজো করত। পদল্য গ্রামের বাসিন্দা বছর ১৮০-এর ভিস্তা মান্দালই এতদিন তাঁর পূর্বপুরুষদের নির্দেশ মতোই এই বলগুলোকে ‘কাকর ভৈরব’ (Kakar Bhairav) নামে পুজো করে আসছেন। আঞ্চলিক মতে, কাকর ভৈরব আসলে ‘জমির রক্ষাকর্তা’। তবে শুধু ধর গ্রাম নয়, আশপাশের গ্রামবাসীরাও নানাবিধ ভেট ও অর্ঘ্য এই প্রাচীন প্রস্তরখণ্ডের উদ্দেশে উৎসর্গ করতেন।
দেবতা নয়, ওগুলো ডিম!
এতদিন সব ঠিক চললেও ‘গোল’ বাধল এক গবেষকদলের আগমনে! লখনউয়ের সাহানি ইনস্টিটিউটের একটি ভূতাত্ত্বিক দল সরেজমিনে ‘ফিল্ড ভিজিট’-এ বেরোয়, আর তাঁদেরই নজরে আসে এই পাথরগুলো। ভূতত্ত্ব সম্পর্কিত পরীক্ষা করে তাঁরা জানতে পারেন, এই গোলাকৃতি পাথরগুলো কোনও ‘টোটেম’ বা ঠাকুর-দেবতার অংশ নয়, আদতে এগুলো বাইগন যুগে পৃথিবী দাপানো ডাইনোসরদের ডিম!
১৪ মিটার লম্বা জন্তুর ডিম পুজো করত ওরা!
ভূতাত্ত্বিকদের মতে, টাইটানোসরস-এর ডিম দেবতারূপে পুজো করত মান্দালই বংশ। আসলে এই টাইটানোসরাস প্রথম ‘ভারতীয়’ ডাইনোসর। ১৮৭৭ সালে প্রথম এই প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া যায়। ‘টাইটানোসর’ শব্দের অর্থ ‘বিশাল টিকটিকি’। পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া বৃহদাকার ডাইনোসর প্রজাতির অন্যতম এই টাইটানোসর। ক্রিটেশাস যুগে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৭ কোটি বছর আগে রাজত্ব করত দানবাকৃতি ডাইনোসররা। তবে আকারে বিশাল হলেও সরোপড ধরনের এই ডাইনোসরগুলো ছিল নিতান্তই শাকাহারী অর্থাৎ নিরামিষাশী।
ডিম ফেটে গেলে কী যে হত…
সূত্রের খবর বলছে, এ বছর নর্মদা নদীর উপত্যকা থেকে টাইটানোসরের প্রায় ২৫০টি ডিম উদ্ধার হয়েছে। পরবর্তীতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এর গবেষকরাও এই পাথরগুলোকে টাইটানোসর-এর ডিম বলেই প্রমাণ করে। আরাধ্য ‘দেবতা’ যে আসলে প্রাগৈতিহাসিক জীবের ডিম, তা প্রমাণ হল; কিন্তু ভাবুন তো―যদি ডিম ফেটে পুনরায় পৃথিবীর বুকে নেমে আসত তারা, তাহলে কী হত?