Suman Kanjilal Join TMC: উদ্বাস্তু বনাম রাজবংশী লড়াই? তার জেরেই কি সুমনের দলবদল? বাড়ছে জল্পনা

Suman Kanjilal: তবে এই বিষয়টি বিজেপির বিধায়ক থেকে শুরু করে পদাধিকারীরা স্বীকার না করলেও বিগত নির্বাচনগুলির ফলাফল দেখলে বোঝা যায়, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে বিজেপির প্রতিটি সাংসদ জয়লাভ করেছিলেন।

Suman Kanjilal Join TMC: উদ্বাস্তু বনাম রাজবংশী লড়াই? তার জেরেই কি সুমনের দলবদল? বাড়ছে জল্পনা
সুমন কাঞ্জিলাল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 06, 2023 | 1:29 PM

কোচবিহার: রবিবার তৃণমূলে যোগদান করেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল (suman kanjilal )। তারপর থেকেই তোলপাড় উত্তরবঙ্গের রাজ্য-রাজনীতি। তৈরি হচ্ছে একাধিক জল্পনা। বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের বড় অংশ বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক ছিল বলে মনে করা হয়। তারফলে নির্বাচনের সময় তৃণমূলের থেকে অনেকটাই ভাল ফল করেছে বিজেপি। এই সুমন কাঞ্জিলাল বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তু। আর উদ্বাস্তুদের জন্যই নাগরিকত্ত্ব আইন সংশোধনী করতে উদ্যোগী হয় বিজেপি। তবে প্রশ্ন উঠছে এমন কী হল যার কারণে দল ছাড়তে হল সুমন কাঞ্জিলালকে? উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিজেপিতে দিনদিন বাড়ছে রাজবংশীদের প্রভাব। সেই কারণে উদ্বাবাস্তুরা বিজেপি বিমুখ হয়ে পড়ছেন। রাজবংশীদের বাড়বাড়ন্তে আতঙ্কিত তাঁরা। তবে এই বিষয়টি বিজেপির বিধায়ক থেকে শুরু করে পদাধিকারীরা স্বীকার করেননি।

বিগত নির্বাচনগুলির ফলাফল দেখা গিয়েছে, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গে লোকসভায় ভাল ফল করে বিজেপি। এমনকী বিধানসভাতেও ভাল ফল দেখা গিয়েছে। রাজনীতি কারবারিদের মতে, বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিয়ে জিতিয়েছিলেন, তাঁদের একটা বড় অংশ উদ্ববাস্তু ও নমশুদ্র মতুয়া। এই বড় অংশ ভোটব্যাঙ্কের পঞ্চাশ শতাংশ না হলেও তা ছুঁইছুঁই। পরবর্তীতে এই অংশই বিজেপিকে সমর্থন করেছিল। যার জেরেই এতগুলো আসন দখল করে গেরুয়া শিবির। তবে, বিজেপিতে আগত উদ্বাস্তু নেতারা ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছেন বলে রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন।

রবিবার সুমন কাঞ্জিলাল জানিয়েছিলেন, বিজেপি বিধায়ক হয়ে তিনি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলেন না। এই বিষয়গুলি দলকেও জানিয়েছিলেন। আন্দোলন করার কথাও জানিয়েছিলেন। আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়েও সরব হওয়ার কথা বলেছিলেন দলকে। অভিযোগ, দল নাকি তাঁর কথা শোনেনি।অভিযোগ, আলিপুরদুয়ারের বিজেপির অন্দরে যাঁদের প্রভাব বেশি তাঁরা বিশেষ কোনও গোষ্ঠীর।

উল্লেখ্য, সুমন কাঞ্জিলাল রাজনৈতিক কোনও ব্যক্তিত্ব ছিলেন না। তিনি সাংবাদিক ছিলেন। বিজেপির টিকিটে তিনি নির্বাচনে দাঁড়ান। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমানে গেরুয়া শিবির থেকে তাঁর মুখ ফিরিয়ে নেওয়া বিজেপির আদি-নব্য দ্বন্দ্ব যেমন প্রকাশ্যে আনছে তেমনই জাতপাতের রাজনীতিও প্রকাশ্যে এসেছে।

এই ইস্যুতে সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের এটি এখন নতুন রাজনীতি। মানুষ যাঁকে নির্বাচিত করেন তিনি মানুষের রায়ের প্রতি আস্থা না রেখে নিজের পছন্দমতো দলে যোগদানু করেন।” অপরদিকে, বিজেপি নেত্রী মালতি রাভার বক্তব্য, বিজেপির যে গঠনতন্ত্র তাতে একজন বিধায়ক গেলে কোনও সমস্যা হয় না। হয়ত ওর উপর চাপ সৃষ্টি করা হেয়েছে। চাপের কাছে নতি স্বীকার করেই তৃণমূলে গিয়েছেন। অপরদিকে, বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, “সুমনকে আমরা সাংবাদিক হিসেবে জানতাম। ওর মধ্যে বিজেপি বিরোধী মানসিকতা গত দু’বছর ধরে লক্ষ্য করিনি। গত দুবছর তৃণমূল কংগ্রেসকে তুষ্টিকারী হিসেবেই সুমন বলে আসছিল। হয়ত ভয়ে কিংবা লোভে পড়েই ও দল ছাড়ল।” তবে, আদি নব্য বিজেপির মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয় এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস দলটি চোরের দলে পরিণত হয়েছে। যেখানে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাই লকাপে চলে গেছে।” তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “অনেক সুমনবাবু লাইনে রয়েছেন। বিজেপির শেষের শুরু। সেই কারণে সময় থাকতেই তাঁরা দলবদল করে এসেছেন।”