Protest at Hospital: ‘১৫৩ জনের টাকা দেয় সরকার, কাজ করে ৫৩ জন’, হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ বামেদের
Bankura News: হাসপাতালের স্বচ্ছতা, পরিষেবা নিয়েও একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
বাঁকুড়া: বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে (Borjora Super Speciality Hospital) অস্থায়ী কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি, পরিষেবায় গাফিলতি-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাল বামেরা। একাধিক অভিযোগকে সামনে রেখে সোমবার বাঁকুড়ার বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখায় লাল ঝান্ডাধারীরা। একইসঙ্গে তাদের অভিযোগ, হাসপাতালে চরম অব্যবস্থা বহাল। হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়েও দুর্নীতির আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার বাঁকুড়ার বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালচত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
হাসপাতালে ১৫৩ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র ৫৩ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ বামেদের। অথচ ১৫৩ জন অস্থায়ী কর্মীর ভাতা সরকার পাঠায় বলেই মনে করছে তারা। বাঁকুড়া জেলায় মোট চারটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রয়েছে। এরমধ্যে বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ উঠেছে।
এদিন দুপুরে সেইসব অভিযোগকে সামনে রেখে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাম কর্মী সমর্থকরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, হাসপাতাল সাফাই থেকে শুরু করে অন্যান্য পরিষেবার জন্য হাসপাতালে ১৫৩ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের কথা। কিন্তু মাত্র ৫৩ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়েছে। এর জেরে পরিষেবাও খারাপ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আগামিদিনে বৃহত্তর আন্দোলন হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বাম কর্মী সমর্থকরা। একই অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপিও। যদিও তৃণমূলের দাবি, এ বিষয়ে তারা কিছু জানে না। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বাম নেতা সুজয় চৌধুরীর কথায়, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখছি বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার পরিষেবা তলানিতে পৌঁছেছে। এক্সরে মেশিন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। মানুষ চিকিৎসা করাতে এসে বাইরে থেকে এক্সরে করাচ্ছেন। অধিকাংশ ব্লাড রিপোর্ট বাইরে থেকে টাকা দিয়ে করতে হচ্ছে। অথচ অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে গরীব মানুষ আসেন নিখরচায় চিকিৎসার সুবিধা পাবেন বলে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও দায়িত্ব নেই। গোটা হাসপাতাল নোংরায় ভরা। ১৫৩ জন অস্থায়ী কর্মী নেওয়ার কথা। সরকার নিশ্চয়ই টাকা দিচ্ছে। কিন্তু ৫৩ জনকে দিয়ে কাজ চলছে। টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে আমাদের অভিযোগ। আমরা এর তদন্ত চাই। দুর্নীতি বন্ধ করে দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারকে বলব।”
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা স্থানীয় বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “বামেরা স্মারকলিপি দিয়েছে শুনেছি। দিতেই পারে। ওরা অভিযোগ তুলছে ৫১ জন আছেন। বাকিদের টাকা কোথাও চলে যায়। আমরা জানি না এরকম কিছু। অভিযোগ তুললে প্রমাণ তো করতে হয়।”
যদিও বামেদের সুরেই সুর স্থানীয় বিজেপি নেতা গৌতম মণ্ডলের। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছে না। প্রয়োজনমাফিক কর্মী নেই। আমাদের কাছে খবর আছে টাকা আসছে, কিন্তু সেইমতো কর্মী নেয়নি। এই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এত বড় হাসপাতাল। অথচ সেখানে এই অবস্থা!”
এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দিন ১৫ আগে কাজে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করা চিকিৎসক জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি নতুন যোগ দিয়েছি। আমি কিছুই জানি না। স্যরের সঙ্গে ওনাদের কথা হয়েছে। স্যর সমস্ত কিছু জানিয়ে দিয়েছেন।”