ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে সিবিআইয়ের জালে আটক ১ তৃণমূল কর্মী

Post Poll Violence: রবিবারই, মৃত হারাধন রায়ের বাড়িতে তদন্তে গিয়েছিলেন সিবিআই (CBI) আধিকারিকরা। সেখানে গিয়ে হারাধনের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন ও ঘটনার পুনর্নিমাণ করেন।

ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে সিবিআইয়ের জালে আটক ১ তৃণমূল কর্মী
সিবিআই, ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 7:02 PM

কোচবিহার: ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে (Post Poll Violence) ফের সিবিআইয়ের (CBI) জালে আটক ১ তৃণমূল কর্মী। সোমবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একটি প্রতিনিধি দল নিহত বিজেপি কর্মী হারাধন রায়ের খুনের তদন্তে ফের ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে জিয়াউল হক নামে এক অভিযুক্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা।

রবিবারই, মৃত হারাধন রায়ের বাড়িতে তদন্তে গিয়েছিলেন সিবিআই (CBI) আধিকারিকরা। সেখানে গিয়ে হারাধনের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন ও ঘটনার পুনর্নিমাণ করেন। সোমবার ফের ভোর ৬টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে সিতাইয়ের রাজাখরা এলাকায় যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ঘেরাও করা হয় অভিযুক্তদের বাড়ি। কিন্তু সেখানে অভিযুক্তদের কাউকেই পাওয়া যায়নি বলে জানান তদন্তকারীরা। তবে জিয়াউল হককে ঘটনাস্থলে পেয়ে সেখান থেকেই তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করে সিবিআই। এলাকায় জিয়াউল তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত।

২ মে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর ৩ মে হারাধন রায়কে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওইদিন সকাল থেকেই পেটলা গ্রাম পঞ্চায়েতের জামাদর বস এলাকায় তৃণমূল এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বিজেপি কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করছে। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মারধর করছে। ওই দিনই বাড়ি থেকে হারাধনকে টেনে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।

ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে ডোমজুড়েও ১৩ জনকে আটক করল সিবিআই। অভিযোগ, এদের বিরুদ্ধে ২৮ অগস্ট মামলা দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু ৩০ অগস্ট এই ১৩ জনের জামিন মঞ্জুর হয়। সিবিআইয়ের প্রশ্ন, কী ভাবে এই জামিন অভিযুক্তরা পেলেন? এই জামিন আইন বহির্ভূত বলেও দাবি সিবিআইয়ের। অভিযুক্তদের আটক করেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা। ১৩ জনকে হেফাজতে চেয়ে সোমবার হাওড়া জেলা আদালতের কাছে আবেদনও জানানো হয়।

ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায়  খুন ও ধর্ষণের ঘটনাগুলির তদন্তের দায়ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেইমতোই রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের তলব করা শুরু করেছে সিবিআই। ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার।

প্রত্যেক জোনের টিমে ২১ জন করে তদন্তকারী অফিসার বা আইও। ইতিমধ্যেই রাজ্যে পৌঁছেছেন ৪ যুগ্ম অধিকর্তারা। পৌঁছেছেন বেশিরভাগ ডিআইজি ও এসপি। রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। গত শনিবার আরও ১০টি এফআইআর দায়ের করা হয়। ২৯ অগস্ট আরও সাতটি এফআইআর দায়ের করা হয়। পরে আরও দুদফায় চারটি ও তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়। শুধু তাই নয়, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস তদন্তে পরপর দুদিন দুটি মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। ব্যারাকপুরে নিহত বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদবের মৃত্যু মামলায় ও নদিয়ায় হৃদয়পুরে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় ওই দুটি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে।

শুক্রবার যেদিন ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করা হল, সেদিনই সিটের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করা হল কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরকে। বিশেষ তদন্তকারী দল বা এই সিটে ১০ জন দক্ষ আইপিএস আধিকারিক রয়েছেন। যারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁরা মূলত সিটের সদস্য। সেই দলের চেয়ারম্যান কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। আরও পড়ুন: ফিতে দিয়ে মেপে ৫০ মিটার দূরে বিক্ষোভ মঞ্চ, বিশ্বভারতীতে খুলল অচলাবস্থার ‘তালা’