Uttarakhand Rain: মৃত্যু ভয় কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, চাক্ষুষ করে ফিরল উত্তরপাড়ার ঘোষ পরিবার
Uttarpara: নবমীর দিন উত্তরপাড়ার মাখলা থেকে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের উদ্দেশে রওনা দেন স্নেহাশিস ঘোষ ও তাঁর পরিবার।
হুগলি: পাহাড়ে (Uttarakhand) বেড়াতে গিয়ে মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছে উত্তরপাড়ার (Uttarpara) ঘোষ পরিবারের সদস্যরা। রবিবার বাড়ি ফিরে তাই নতুন জীবনকে স্বাগত জানালেন পরম শক্তিকে ধন্যবাদ জানিয়ে। মৃত্যুভয় যে এতটা ভয়ঙ্কর তা যেমন টের পেয়েছেন স্নেহাশিস ঘোষ, মমি ঘোষরা। একই ভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা যে বাঁচার ইচ্ছেকে কী প্রবল করে তোলে তাও টের পাচ্ছেন প্রতি নিয়ত।
নবমীর দিন উত্তরপাড়ার মাখলা থেকে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের উদ্দেশে রওনা দেন স্নেহাশিস ঘোষ ও তাঁর পরিবার। মোট ছ’জনের একটি দল করে নৈনিতালের পথে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। স্নেহাশিসবাবু ছাড়াও সে দলে ছিলেন স্ত্রী মমি ঘোষ, মেয়ে তানিয়া ঘোষ ও জামাই সাওন ঘোষ। গিয়েছিলেন সাওনের বাবা বিপ্লব ঘোষ ও মা তপতী ঘোষও।
১৭ অক্টোবর তাঁরা নৈনিতালের আগে আলমোরা জেলার বিনসারে আটকে পড়েন। স্নেহাশিসবাবুর স্ত্রী মমি ঘোষের কথায়, হঠাৎই পাহাড়ে তুমুল বৃষ্টি শুরু হল। এ যেন একেবারে আকাশ ভাঙা দুর্যোগ। পাহাড়ের কোলে যে সবুজ গাছগুলি ছিল, একের পর এক উপড়ে পাকদণ্ডীতে এসে পড়ল। এরই মধ্যে কানে আসল খাদে একের পর এক গাড়ি উল্টে পড়ছে। পাহাড়ি রাস্তায় ধসও নেমেছে। কোথাও এগোনো বা পিছনোর রাস্তা নেই। মমিতদেবী জানান, বেঁচে ফিরবেন সে প্রত্যাশাও রাখেননি।
সপরিবারে বেড়াতে যাওয়া স্নেহাশিস ঘোষের নেশা। বউ, মেয়ে নিয়ে সময় সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন স্নেহাশিসবাবু। পাহাড়েও কম দিন হল যাচ্ছেন না। কিন্তু এমন অভিজ্ঞতা কস্মিনকালেও হয়নি। এ যেন এক চরম অসহায়তার মধ্যে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে কেউ।
স্নেহাশিস ঘোষ বলেন, “জীবনে এরকম ভয়াবহ অভিজ্ঞতা প্রথমবার হল। চোখের সামনে একের পর এক পাহাড় ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। গাড়ি পড়ে যাচ্ছে খাদে। বহু মানুষ হতাহত হচ্ছেন শুনছি। অঝোরে বৃষ্টি। এমন প্লাবন কখনও দেখিনি। পাহাড়ের প্রায় সর্বত্রই ধস। কেউ নড়তে পারছেন না। যে যেখানে দাঁড়িয়ে, সেখানেই আটকে পড়েছেন। আমরা কোনও মতে একটা হোটেলে গিয়ে উঠি। আমার বুকিং ডেট থেকে আরও চার পাঁচদিন বেশি থাকি সেখানে। এক প্রকার জোর করেই সেখানে থাকি আমরা। একেবারে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলাম। বিচিত্র অভিজ্ঞতা হল।”
এই পরিবারকে ফিরিয়ে আনার পিছনে হাত রয়েছে উত্তরপাড়া পুরসভার পুর প্রশাসক দিলীপ যাদবের। এমনটাই জানিয়েছেন স্নেহাশিস ঘোষ। যদিও দিলীপ যাদব বলেন, “এই বিপদের খবর পেয়ে আমি যোগাযোগ করি। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আটকে পড়াদের জন্য রাজ্য সরকার যে কনট্রোল রুম খুলেছে জেলায় সেখানে যোগাযোগ করি। দফায় দফায় এই পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। এরপরই সরকারের উদ্যোগে ওনাদের ফিরিয়ে আনা হয়। ওনাদের বেড়ানোটা সম্পূর্ণ হল না ঠিকই, তবে সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরে এসেছেন এটাই সব থেকে বড় প্রাপ্তি।”
আরও পড়ুন: Purba Burdwan Murder: ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে খুন ব্যবসায়ী, জোড়া তদন্তে সিআইডি-ফরেন্সিক দল