ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই নেই, ‘ভুতুড়ে’ মেসেজে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন! হতভম্ব রামজিত-মামণিরা

Financial Fraud Case:চিনাগর গ্রামের ওই গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মাসখানেক আগে তাঁদের বাড়িতে একটি ব্যাঙ্কের চেকবই আসে। সেই চেকবই আসার দুই-তিনদিন পর থেকেই মোবাইলে টাকা লেনদেনের মেসেজ আসতে শুরু করে

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই নেই, 'ভুতুড়ে' মেসেজে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন! হতভম্ব রামজিত-মামণিরা
রামজিত মুর্মু, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 27, 2021 | 11:00 PM

হুগলি: ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টই (Bank Account) নেই। অথচ প্রায় প্রতি দিনই লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেনের মেসেজ ঢুকছে মোবাইলে। মাসখানেক ধরেই এমন ঘটছে ধনিয়াখালি থানার চীনাগর গ্রামবাসীদের সঙ্গে। গ্রামের প্রায় দশ-বারোজনে আদিবাসী পরিবারের মোবাইলে ঢুকেছে টাকা। সকলেই ধান বিক্রির টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু, তাঁদের কারোর নিজের জমিই নেই! কেউ ভাগচাষি, তো কেউ বা শ্রমিক। তবুও তাঁদের মোবাইলে সেই ‘ভুতুড়ে’ মেসেজ আসছে এমনকী, আপন কায়দায়, অ্যাকাউন্ট (Bank Account) থেকে টাকাও তুলে নেওয়া হচ্ছে! ঘটনায় নিদ্রাহীন নিশিযাপন তাঁদের।

চিনাগর গ্রামের ওই গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মাসখানেক আগে তাঁদের বাড়িতে একটি ব্যাঙ্কের চেকবই আসে। সেই চেকবই আসার দুই-তিনদিন পর থেকেই মোবাইলে টাকা লেনদেনের মেসেজ আসতে শুরু করে। টাকার পরিমাণ দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় তাঁদের। অথচ, মদনমোহনতলা এলাকার ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কে কোনও অ্যাকাউন্টই খোলেননি অভিযোগকারীরা। এমনকী কোনও পাশবইও আসেনি। তাহলে তাঁদের কাছে কী করে আসল ওই শাখার চেকবই?

ঘটনায় রীতিমতো আশঙ্কায় ভুগছে চীনাগ্রাম। তাঁদের অনেকের আতঙ্ক, কোনও জঙ্গি সংগঠন এই ঘটনার নেপথ্য়ে নেই তো? তাঁদের নাম আর যাবতীয় তথ্য ভাঁড়িয়ে নিজেদের নামে ব্যবহার করছেন এমন নয় তো? রামজিত মুর্মু নামে এক বাসিন্দার কথায়, “আমি ও আমার স্ত্রী, কারোরই কোনও নিজেদের জমি নেই। আমি রাজমিস্ত্রীর কাজ করি। আমার স্ত্রী গৃহবধূ। আমার স্ত্রী মামণি মুর্মুর নামে চেকবই এসেছে। কিন্তু, স্ত্রীয়ের কোনও অ্যাকাউন্টই নেই। এমনকী যে ধানজমির জন্য টাকা ঢুকেছে বলা হচ্ছে তেমন এক ছটাক জমিও নেই আমাদের।”

প্রায় একই অভিযোগ অর্জুন মান্ডি ও রেখা মান্ডির। অর্জুন জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী রেখা মান্ডির নামে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে চেকবই এসেছে প্রায় মাসখানেক আগে। তারপরেই, অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার ম্যাসেজ আসতে শুরু করেছে। টাকার পরিমাণ ৮০হাজার থেকে ১লক্ষ। জাদুবলে তুলেও নেওয়া হচ্ছে সেই টাকা।

ওই ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার জানিয়েছেন, অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। খুব দ্রুত তাঁরা ওই গ্রামবাসীদের বাড়ি গিয়ে সমস্ত তথ্য ও নথি যাচাই করে পদক্ষেপ করবেন। ইতিমধ্যেই ধনিয়াখালি থানায় গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজার সহদেব মুর্মুর মতে, “ব্যাঙ্কের কোনও আধিকারিক এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। না হলে এমনটা হতে পারে না। এটা একটা বড় চক্র।” তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষের অজান্তে তাঁদের নথিপত্রের সাহায্যে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে বড়সড় আর্থিক প্রতারণা চলছে। যেহেতু, এখন আধার ও প্যান নম্বর পাওয়া হাতের মুঠোয় তাই এই জালিয়াতরা আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠতে পেরেছে। আরও পড়ুন: সিপিএম নেতার গোপন অডিয়ো ফাঁস! কামারহাটি বোমাকাণ্ডে থানায় অভিযোগ দায়ের মদনের