Recruitment Scam: ভোট এলে বলাগড়ের ‘অনুব্রত’ হয়ে উঠতেন শান্তনু, ভয় দেখিয়ে প্রত্যাহার করিয়েছিলেন প্রার্থীপদও

Recruitment Scam: বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করান শান্তনু।

Recruitment Scam: ভোট এলে বলাগড়ের 'অনুব্রত' হয়ে উঠতেন শান্তনু, ভয় দেখিয়ে প্রত্যাহার করিয়েছিলেন প্রার্থীপদও
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 17, 2023 | 10:32 AM

হুগলি: নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসকশিবিরে রাজনীতিতে হাত পাকিয়ে তাঁর উত্থান। যদিও দু’দিন আগে তৃণমূল তাঁকে বহিষ্কার করেছে। তবে যতদিন শাসকদলে থেকেছেন, অভিযোগ, ততদিন নাকি হাতে মাথা কাটতেন বলাগড়ের এই যুবক। তাঁর দাপটই নাকি ছিল অন্যরকম। একের পর এক শান্তনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন এলাকার লোকজন। এবার চাপ দিয়ে প্রার্থী পদ প্রত্যাহারের অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। এমনও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, ভোট এলে শান্তনু হয়ে উঠতেন বলাগড়ের ‘অনুব্রত’।

এলাকার লোকজনের কথায়, নিয়োগ দুর্নীতিতে হাত পাকিয়ে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান হয়েছিল উল্কাগতিতে। বাড়ি, গাড়ি, রিসর্ট, জমিজমা একেবারে ফুলে ফেঁপে উঠেছিলেন বলাগড়ের সেই সময়ের তৃণমূল যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের এলাকা হোক, অফিস কিংবা রাজনীতির ময়দান, শান্তনুর দাপটে ত্রস্ত থাকতেন সকলে। এতদিন তাঁর দাপটে মুখ খোলেননি কেউই। ঠিক যেমন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের আগে অবধি কেউ মুখ খোলেননি। অথচ অনুব্রত গ্রেফতার হতেই ভূরি ভূরি অভিযোগ তুলে ধরেছেন বীরভূমের মানুষ, তাঁর এলাকা বোলপুরের মানুষ।

ভোটের আগে অনুব্রত যেমন ‘গুড়বাতাসা’, ‘চড়াম চড়াম’ কিংবা ‘পাচনের বাড়ি’র কথা বলতেন, বলাগড়ের লোকজনের কথায়, শান্তনুও এমনই সব ‘দাওয়াই’ দিতেন ভোট এলে। বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করান শান্তনু। হুগলির ৩৪ নম্বর জেলা পরিষদে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন বিজেপির সুনীল পাঁজা ও বামপ্রার্থী তন্ময় জানা। অভিযোগ, শান্তনুর হুমকির কাছে বাধ্য হয়ে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করতে হয়েছিল বিরোধীদের।

সুনীল পাঁজার কথায়, “প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য আমাকে তো চাপ দিয়েইছিলেন। সঙ্গে রাস্তাঘাটে আমার পরিবারের লোকজনকে হেনস্থা করতে শুরু করে। গুন্ডাবাহিনী এসে আমার বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র পর্যন্ত দেখিয়েছিলেন। আমার ঘরে তখন ছোট ছোট দু’টো বাচ্চা। বাড়ির লোকজন কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিল। বলেছিল এসব ভোটের রাজনীতি থেকে সরে এসো।”

অন্যদিকে সিপিএমের তন্ময় পাঁজার অভিযোগ, “তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমাকে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারে সবরকম চাপ দেয়। আমার বাড়ি ভাঙচুর করেছিল। বাড়ি থেকে বেরোতে পারতাম না। আমার পরিবারকেও আক্রমণ করে। আমার প্রস্তাবকের বাড়ি পর্যন্ত ভাঙচুর করে।”

শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী। বিজেপির তরফে সে সময় অভিযোগও করা হয়, একজন সরকারি চাকুরিজীবী হয়ে কীভাবে ভোটে লড়ছেন তিনি। বিজেপি নেতা গণেশ চক্রবর্তীর কথায়, “আমি এসডিওর কাছে অভিযোগ করেছিলাম। উনি আমলই দেননি। আমি বলব এসডিওর বিরুদ্ধেও তদন্ত হওয়া দরকার।” অভিযোগ, শান্তনু ‘জুজু’তে এতদিন কাঁপত বলাগড়। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এবার মুখ খুলছেন সকলে। সামান্য বিদ্যুৎ দফতরের গ্রুপ ডি কর্মী হয়ে কীভাবে তাঁর এত ক্ষমতা হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

এ বিষয়ে তৃণমূল বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় বলেন, “আজ সাড়ে ৪ বছর পরে এইসব অভিযোগ আসছে। আইন বলে তো সবই ছিল। থানা ছিল, আদালত ছিল, কেউ কোনও অভিযোগ কেন করল না? কেন বলল না প্রার্থীপদ তুলে নিতে হচ্ছে, বাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে। এখন সাড়ে ৪ বছর পর এসব গল্প করলে হবে?”