বিছানায় শোওয়ানো জামাইবাবু-শ্যালিকার দেহ, দরজা এঁটে ঘরের ভিতরেই বসে স্ত্রী

দিদি-জামাইবাবুর সংসারেই থাকতেন শ্যালিকা (Body Recover)। দিদির ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে ভর্তি।

বিছানায় শোওয়ানো জামাইবাবু-শ্যালিকার দেহ, দরজা এঁটে ঘরের ভিতরেই বসে স্ত্রী
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: May 21, 2021 | 6:19 PM

হাওড়া: ঘর থেকে উদ্ধার জামাইবাবু ও শ্যালিকার মৃতদেহ (Body Recover)। অভিযোগ, সেই দুই মৃতদেহ দু’ দিন ধরে আগলে বসেছিলেন মৃতের স্ত্রী। হাওড়ার ওলাবিবিতলার এই ঘটনায় দানা বাঁধছে রহস্য। শুক্রবার সকালে বাজে গন্ধে এলাকায় টেকা দুষ্কর হয়ে উঠছিল। এরপর স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেন। চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশ এসে দেহ দু’টি উদ্ধার করে। কী ভাবে এই মৃত্যু হল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ধন্দ তৈরি হয়েছে।

ওলাবিবিতলার একটি বাড়ির তিন তলায় দু’টি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন নিশীথরঞ্জন মণ্ডল (৭৫)। নিশীথবাবুর সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী পাপড়ি মণ্ডল ও শ্যালিকা অনিতা ঘোষ। দুই বোনেরই বয়স ষাটের কোঠায়। হাওড়া পুরসভার পদস্থ আধিকারিক ছিলেন নিশীথরঞ্জন মণ্ডল। ১৫ বছর আগে অবসর নেন।

পুলিশ জানিয়েছে, নিশীথবাবু ও পাপড়িদেবীর একটি বছর তিরিশের ছেলে রয়েছে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাপড়িদেবীর বোন অনিতাদেবীও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হওয়ায় শয্যাশায়ী ছিলেন। তিনি দিদি–জামাইবাবুর সঙ্গেই থাকতেন। সব মিলিয়ে তিনজনই শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন।

আরও পড়ুন: মানবতাই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম, মৃত্যু পথযাত্রী মুসলিম কোভিড রোগীর কানে কলমা পড়ে শোনালেন হিন্দু চিকিৎসক

এরপরই শুক্রবার সকালে পচা গন্ধে ছেয়ে যায় এলাকা। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে দেখে নিশীথবাবু ও তাঁর শ্যালিকার পচন ধরা দেহ। তা আগলে বসে স্ত্রী। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কম করে দু’দিন আগে মৃত্যু হয়েছে জামাইবাবু ও শ্যালিকার। আর সেই মৃতদেহের সঙ্গে দরজা জানালা বন্ধ করে একই ঘরে দু’দিন কাটিয়েছেন পাপড়িদেবী।

স্থানীয়দের অনুমান, দু’জনই করোনা আক্রান্ত ছিলেন। কিন্তু একইসঙ্গে কী ভাবে মৃত্যু হল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বয়সজনিত অসুস্থতার কারণেই এই ঘটনা। মৃতদেহ দু’টি উদ্ধারের পাশাপাশি পাপড়িদেবীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। করা হচ্ছে করোনা পরীক্ষাও।

আরও পড়ুন: চার বাউন্সার নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন ডাক্তার, ভুয়ো অভিযোগে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে নিশীথবাবুর বাড়ির কাছেই থাকা ভাইঝি সাথী মণ্ডল ছুটে আসেন। তিনি বলেন, “কী ভাবে ওনারা মারা গিয়েছেন বলতে পারব না। শুনছি দু’দিন আগেই মারা গিয়েছেন। তবে দু’জন যখন একসঙ্গে মারা গিয়েছেন, তখন করোনাতেও মারা যেতে পারেন। জ্যাঠাইমার করোনা পরীক্ষা করলে বোঝা যাবো।”

যে বাড়িতে এই ঘটনা ঘটেছে, ওলাবিবিতলা এলাকার সেই বাড়িটির একতলায় রয়েছে পোস্টঅফিস। দোতলায় বর্তমানে কেউ থাকে না। তিনতলাতেই থাকতেন নিশীথবাবুরা। কড়া বিধি নিষেধে কেউ সে ভাবে বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় এই মৃত্যু নিয়ে কেউ আঁচ পাননি বলে মনে করা হচ্ছে।