দিন দুপুরে প্রবীণ আইনজীবীর বাড়িতে দুষ্কৃতী হানা, ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করে বাড়িতে ভাঙচুর
শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ মুখে মাস্ক ঢাকা এক যুবক ব্যবসার কাজ নিয়ে কথা বলবে বলে দোতলার ফ্ল্যাটে উঠে তাঁকে একতলায় নিয়ে যান। একতলায় তখন আরও তিন যুবক অপেক্ষা করছিল। তাদের সবার মুখে মাস্ক ছিল বলে কাউকেই চিনতে পারেননি বলে জানান তিনি।
হাওড়া: শুক্রবার দিন দুপুরে এক বর্ষীয়ান আইনজীবীর বাড়িতে হানা দুষ্কৃতী। আইনজীবীকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করেম মারধর এবং বাড়ির আসবাব ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। প্রবীণ আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ দে-র মেয়ে ও তাঁর বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা এক বৃদ্ধপরিচারককেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও কী কারণে এই হামলা তা এখনও জানা যায়নি।
হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডের একটি ফ্ল্যাট বাড়ির দোতলায় থাকেন হাওড়া আদালতের বর্ষীয়ান আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ দে। তাঁর সঙ্গে থাকেন মেয়ে সুমিত্রা শ্রীবাস্তব ও ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে থাকা বাড়ির পরিচারক মনোরঞ্জন দাস। ফ্ল্যাটের একতলায় রয়েছে রবীন্দ্রনাথবাবুর চেম্বার। মেয়ের নিজস্ব ব্যবসা রয়েছে। আইনজীবীর মেয়ে সুমিত্রা জানান, শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ মুখে মাস্ক ঢাকা এক যুবক ব্যবসার কাজ নিয়ে কথা বলবে বলে দোতলার ফ্ল্যাটে উঠে তাঁকে একতলায় নিয়ে যান। একতলায় তখন আরও তিন যুবক অপেক্ষা করছিল। তাদের সবার মুখে মাস্ক ছিল বলে কাউকেই চিনতে পারেননি বলে জানান তিনি। সুমিত্রা দেবীর দাবি, কথা বলতে বলতে তিন যুবক আচমকা দোতলায় উঠে গিয়ে রবীন্দ্রনাথবাবুর মুখে ক্লোরোফর্ম দেওয়া কাপড় চেপে ধরে অজ্ঞান করার চেষ্টা করে। এরপর তাঁকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে ফেলে।
দোতলায় এসে এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে তিনি বাধা দিতে গেলে এক দুষ্কৃতী তাঁর মুখে সজোরে ঘুষি মারে। মুখ ফেটে যায় সুমিত্রাদেবীর। এরপর একই কায়দায় তাঁর মুখেও ক্লোরোফর্ম দেওয়া কাপড় চেপে ধরায় তিনিও বেহুঁশ হয়ে পড়েন। বাড়ির বৃদ্ধ পরিচারক মনোরঞ্জনবাবু দোতলায় উঠে এলে তাঁকেও মারধর করতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। মেরে ওই বৃদ্ধের একটা দাঁত ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এদিকে জ্ঞান ফেরার পর মনোরঞ্জন দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন বাইরে থেকে শিকল দেওয়া। এরপর তিনি দোতলার কাচের জানলা ভেঙে চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দরজা খুলে দেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। যদিও বাড়ির কোনও জিনিস খোয়া যায়নি।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ঠিক ডাকাতি নয়, অন্য কোনও উদ্দেশ্যেই এই আক্রমণ বলে মনে হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত বলে মনে হচ্ছে।’’