AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Jalpaiguri: গরাদের অন্ধকারে কেটে গিয়েছে ৩ বছর, ফেরার আশাই ছিল না, পরিযায়ী শ্রমিককে ফেরাল সিপিএম

Jalpaiguri: দীপক রায়ের মা পেশায় চা শ্রমিক। তিনি রাজগঞ্জ ব্লকের একটি চা বাগানে চা কাজ করেন। বছর তিনেক পর তিনি চা বাগানে কাজ করার ফাঁকে যোগাযোগ করেন জলপাইগুড়ির সিটু নেতা কৃষ্ণ সেনের সঙ্গে। কৃষ্ণবাবু বিষয়টি সিটুর জেলা সম্পাদক তথা সর্বভারতীয় নেতা জিয়াউল আলমকে খুলে বলেন।

Jalpaiguri: গরাদের অন্ধকারে কেটে গিয়েছে ৩ বছর, ফেরার আশাই ছিল না, পরিযায়ী শ্রমিককে ফেরাল সিপিএম
বাড়ি ফিরলেন পরিযায়ী শ্রমিকImage Credit: Tv9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Apr 25, 2024 | 2:09 PM
Share

জলপাইগুড়ি: কেরলে জেলবন্দি ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক। কোনও ভাবেই ফিরতে ফিরতে পারছিলেন না বাড়ি। অবশেষে সেই পরিযায়ী শ্রমিককে বিনা পারিশ্রমিকে আইনি সহায়তা দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনলেন সিপিএমের আইনজীবীরা। আর ঘরে ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ভিন রাজ্যে কাজ করতে যান বাংলার বহু পরিযায়ী শ্রমিক। সেখানে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হয় তাঁরা। কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মারা যান। কেউ আবার বিভিন্ন ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে আইনি জটিলতায় জড়িয়ে যান। ঠিক যেমন আইনি জটিলতায় জড়িয়ে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির এই পরিযায়ী শ্রমিক দীপক রায়।

জানা গিয়েছে, দীপকবাবু জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের কুকুরযান গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা। তিনি দক্ষ মার্বেল মিস্ত্রি। বেশি মজুরি পাওয়ার আশায় বাড়িতে মা ও বোনকে রেখে বছর দশেক আগে কাজের খোঁজে কেরলে চলে যান। সেখানেই কাজ করে জীবিকা উপার্জন করেন তিনি। উপার্জনের টাকা বাড়িতে পাঠিয়ে সংসার চালাতেন। পাশাপাশি বোন উপযুক্ত হয়ে যাওয়ায় তাঁর বিয়ে দেন।

সবটাই ঠিক ছিল। কিন্তু বছর চারেক আগে কেরলেই আরও কিছু শ্রমিকদের সঙ্গে এক বিবাদে জড়িয়ে যান দীপক রায়। অভিযোগ মারামারি হয় তাঁদের মধ্যে। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে এসে দীপককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর জেলে চলে যান তিনি।

এরপর শুরু হয় ছন্দপতন। ভাষাগত সমস্যায় জেল থেকে কোনও ভাবেই আর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। এইভাবে ৩ বছর কেটে যায়। বাড়ির লোকজন জানতেন না দীপক কোথায় আছে। তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়না।

দীপক রায়ের মা পেশায় চা শ্রমিক। তিনি রাজগঞ্জ ব্লকের একটি চা বাগানে চা কাজ করেন। বছর তিনেক পর তিনি চা বাগানে কাজ করার ফাঁকে যোগাযোগ করেন জলপাইগুড়ির সিটু নেতা কৃষ্ণ সেনের সঙ্গে। কৃষ্ণবাবু বিষয়টি সিটুর জেলা সম্পাদক তথা সর্বভারতীয় নেতা জিয়াউল আলমকে খুলে বলেন। এরপর জিয়া কেরলের সিপিএম সাংসদ করিমের কাছে বিষয়টি তুলে ধরলে কেরলের সিপিএম নেতারা খোঁজ শুরু করে জানতে পারেন দীপক জেলে আছে।

এরপর কেরলের স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃত্বের কথায় সেখানকার আইনজীবীরা দীপক রায়ের হয়ে আইনি লড়াই করে তাঁকে জেল থেকে মুক্ত করেন।

জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর দীপক রায় বুধবার ফেরেন জলপাইগুড়িতে। তিনি তাঁর বোন ও বোন জামাইকে নিয়ে সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা কার্যালয়ে আসেন। সেখানে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দেওয়া হলে কেঁদে ফেলেন ওই নির্মাণ শ্রমিক।

কৃষ্ণ সেন বলেন, “বছর খানেক আগে রাজগঞ্জের একটি চা বাগানে বৈঠক করতে গিয়েছিলাম। সেখানেই দীপকের মা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে সব খুলে বলেন। আমাদের কাছে সাহায্য চান। এরপর আমি আমাদের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। রাজ্যের শ্রমিক নেতারা কেরলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিনামূল্যে আইনি লড়াই শুরু করেন। অবশেষে মামলা জিতে দীপককে মুক্ত করেন তাঁরা।”

দীপক রায় বলেন, “আমার বাড়ির লোকের সঙ্গে কোন যোগাযোগ ছিল না গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে। আমার মা সিটু নেতা কৃষ্ণ সেনের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর কেরলের সিপিএম নেতারা আমার সাথে জেলে যোগাযোগ করেন। আইনজীবী ঠিক করে দেন। তারা বিনা পারিশ্রমিকে আমার হয়ে মামলা লড়ে আমাকে মুক্ত করেন।” ওই ব্যক্তি বলেন, “আমি আমার অসুস্থ মায়ের কাছে ফিরতে পেরে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। ওনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।”