Jalpaiguri: টাকা ছাড়া ট্রলি নড়ে না জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে? মা হতে গিয়ে বাড়ছে যন্ত্রণা

Jalpaiguri: প্রসূতিদের জন্য জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের অধীনে রয়েছে মাদার চাইল্ড হাব (মাতৃমা)। সেখানে থাকা দু’টি লিফটই বিকল। ফলে ট্রলি করে রোগীদের ওঠা নামা করানো হচ্ছে। অভিযোগ, এই অছিলায় রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে।

Jalpaiguri: টাকা ছাড়া ট্রলি নড়ে না জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে? মা হতে গিয়ে বাড়ছে যন্ত্রণা
শোরগোল স্বাস্থ্য মহলে Image Credit source: TV-9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 22, 2024 | 2:15 PM

জলপাইগুড়ি: অচল লিফট। সমস্যায় রোগী থেকে রোগীর পরিজনরা। কিন্তু, ট্রলিতে করে প্রসূতিকে নিয়ে যেতে টাকা দিতে হচ্ছে রোগীর পরিবারকে। অভিযোগ, টাকা না দিলে প্রসূতির গায়ে থাকা ওটির পোশাকও পাল্টে দিচ্ছেন না কর্মীরা। রোগীর পরিবারের এমন অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ স্বীকার করে দ্রুত ব্যাবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসূতিদের জন্য জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের অধীনে রয়েছে মাদার চাইল্ড হাব ( মাতৃমা)। সেখানে থাকা দু’টি লিফটই বিকল। ফলে ট্রলি করে রোগীদের ওঠা নামা করানো হচ্ছে। অভিযোগ, এই অছিলায় রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। প্রসূতিদের ট্রলি করে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এক প্রসূতিকে হেঁটে যেতেও দেখা গিয়েছে। তা নিয়েও চলছে চাপানউতোর। এর আগে এই হাসপাতালে লিফটে করে প্রসূতিদের নিয়ে যেতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই খবর সামনে আসতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে স্বাস্খ্য মহলের অন্দরে। এবার আর লিফট নয়। এবার ট্রলি করে রোগী নিয়ে যেতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়িতে।

হাসপাতাল চত্বরে রয়েছে প্রচুর সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রকাশ্যে টাকা নিলে ছবি উঠে যেতে পারে। অভিযোগ, তাই অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে টাকা নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদার চাইল্ড হাবে থাকা দু’টি লিফটের মধ্যে একটি লিফট দীর্ঘদিন ধরে খারাপ। সেই লিফট মেরামত করতে ৭ লক্ষাধিক টাকা লাগবে। এই মর্মে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের তরফে স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। এর মধ্যেই গত ৭ দিন আগে হাসপাতালের আরও একটি লিফট খারাপ হয়ে যায়। যা মেরামত করতে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা লাগবে। এছাড়া দু’টি লিফট সচল রাখতে দেখভাল করা সংস্থাকে মোটা টাকা দিতে হবে। সব মিলিয়ে একটি বড় টাকা ফান্ডের প্রয়োজন। সেই টাকা না আসায় কাজ আটকে আছে বলে জানা যাচ্ছে। 

জলপাইগুড়ি রঙধামালি এলাকার বাসিন্দা মলয় দাস। তাঁর স্ত্রীকে প্রসব সংক্রান্ত কারণে মাতৃমাতে নিয়ে আসেন। অভিযোগ লিফট খারাপ থাকায় তার স্ত্রীকে ট্রলি করে ওটিতে নিয়ে যায় এবং প্রসবের পরে ফের ট্রলি করে ওয়ার্ডে নিয়ে আসেন প্রসূতি বিভাগের কর্মীরা। এই কাজের জন্য তার কাছ থেকে ৯০০ টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। টাকা না দিলে তাঁর স্ত্রীর গায়ে থাকা ওটি-র কাপড় পর্যন্ত পাল্টে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তিনি বলছেন, হাসপাতালে তো বিনামূল্যে পরিষেবা পাওয়ার কথা। কিন্তু দালাল চক্র সক্রিয় থাকায় তাঁকে ৯০০ টাকা দিতে হল। বিষয়টি ইতিমধ্যেই তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

জলপাইগুড়ি বনিজের হাট এলাকার বাসিন্দা বাপন রায়। তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রীকে ট্রলিতে করে দোতালায় নিয়ে যেতে, নামিয়ে আনতে এবং স্ত্রীর গায়ে থাকা ওটির পোশাক বদলাবার জন্য ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। নইলে কাজ হয়নি। হাসপাতালে প্রতি পদে পদে টাকা দিতে হচ্ছে। তাঁর কাছে যদি এত টাকা থাকতো তবে তিনি নার্সিং হোমে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে যেতেন। নির্মলা দাস রায় নামে এক আশা কর্মী জানালেন তিনি এক প্রসুতিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু লিফট খারাপ। তাই এখন রোগীকে হাঁটিয়ে ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন। চিত্রা সিংহ নামে এক প্রসূতি বলছেন, লিফট বিকল তাই হেঁটে হেঁটে ওয়ার্ডে যেতে হচ্ছে। লিফট দ্রুত মেরামত করলে ভাল হয়। 

এই বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজের MSVP ডাক্তার কল্যান খাঁ জানিয়েছেন, মাদার চাইল্ড হাবে দু’টো লিফট আছে। দুটোই এই মুহূর্তে খারাপ। লিফট মেরামতের প্রয়োজনীয় ফান্ডের জন্য আমরা স্বাস্থ্য ভবনে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত ফান্ড মঞ্জুর হবে। তিনি আরও বলেন, মায়েদের যাতে অসুবিধা না হয় তারজন্য আমরা নিচে একটি ওয়ার্ড চালু করেছি। সেখান থেকেও পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্মীদের টাকা চাওয়া প্রসঙ্গ স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, এই মর্মে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।