ঘরছাড়া করেছে তৃণমূলই! গোয়ালঘরে দিন কাটছে তৃণমূলকর্মীর পরিবারের
অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলেরই (TMC) ২০-২৫ জন কর্মীর বিরু্দ্ধে। বাড়ি ভেঙে, লুঠপাট করে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
মালদা: ভোট মিটেছে মাস দুয়েক আগে। এরই মধ্যে এক তৃণমূলকর্মীকে (TMC) ঘরছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে দলেরই বেশ কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। তিন সন্তানকে নিয়ে তৃণমূলকর্মীর ওই পরিবার গোয়াল ঘরে বাস করছে। অভিযোগ, তাঁদের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে দলের বেশ কয়েকজন কর্মী। মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুরের এই ঘটনায় তৃণমূলকর্মী টুম্পা খাতুন ও তাঁর স্বামী নুর আলমের দাবি, ভোটের ময়দানে তাঁরা দলের হয়ে কাজও করেছিলেন। কিন্তু ভোট মিটতেই জমি নিয়ে বিবাদ তৈরি হয় দলেরই কর্মীদের সঙ্গে। ২০-২৫ জন তৃণমূলকর্মীর বিরুদ্ধে বাড়ি ভেঙে দেওয়া ও লুঠপাট চালানোর অভিযোগ তুলেছে টুম্পা খাতুনের পরিবার। জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এমনকি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও এনেছেন তাঁরা।
গ্রামছাড়া হওয়ার পর বর্তমানে এলাকার এক গোয়ালঘরে গরুদের সঙ্গে সহাবস্থানে দিন কাটছে ওই পরিবারের। সন্তানদের নিয়ে গোয়ালঘরে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। মাথার ওপর ছাদ নেই, ত্রিপলের তলায় বসবাস করছেন। ঠিক মতো খাওয়াও জুটছে না। টুম্পা খাতুন জানিয়েছেন, তাঁরা তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। ভোটের সময়ও দলের হয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু ভোট মিটতেই দলের কর্মীদের সঙ্গে জমি ও পদ নিয়ে বিবাদ তৈরি হয়। টুম্পা খাতুনদের ১২ কাঠা জমিয়ে নিয়েই ঝামেলা বাধে। অভিযোগ, তাঁদের জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে, ভেঙে দেওয়া হয়েছে বাড়ি। শুধু তাই নয়, টাকাপয়সা, গয়না লুঠ করে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। আতঙ্কে মুখ খুলছেন না গ্রামবাসীরা। এই ঘটনায় জিন্নাতুল্লা, কোলেন আলি, গুলজার, আরিফ সহ প্রায় ২০-২৫ জন তৃণমূলকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশের কাছে এই খবর পৌঁছলেও তাঁদের উদ্ধারে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ পরিবারের। টুম্পা খাতুন জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে মালদার চাঁচলের এসডিপিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন তিনি। ঘটনায় কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই জানতে পারেন বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের ব্লক প্রেসিডেন্ট মানিক দাস। তিনি বলেন, ‘আমি স্থানীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে বিষয়টা জানার চেষ্টা করব। যদি সত্যিই এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেব। স্থানীয় নেতাদের ডেকে বিষয়টা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।
আরও পড়ুন: বিধানসভার সর্বদল বৈঠক অথচ ডাকই পেলেন না নওসাদ! নজিরবিহীন, বলছেন বিশ্লেষকরা
অন্যদিকে, এই ঘটনায় ফের একবার ততোপ দেগেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির মালদা জেলা সম্পাদক কিষান কেডিয়া বলেন, ‘শুনলাম তৃণমূলের মধ্যেই মারপিঠ হয়েছে। জন সাধারণ এ বার বুঝুক তৃণমূল কেমন দল। সবাই বলেছিল বিজেপি সন্ত্রাস করছে। এখন তো বিজেপি ক্ষমতায় নেই। জন সাধারণ বুঝুক, তারা কী ভুল করেছে।’ তাঁর দাবি, যে দিন মানুষ বুঝে যাবে যে তৃণমূল আদতে কাটমানির সরকার, সে দিন ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।