প্রেমিককে ফাঁসাতে বিচারপতিকে অশ্লীল মেসেজ তরুণীর
Cyber Crime: প্রেমিককে শাস্তি দিতে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বিচারককে অশ্লীল মেসেজ পাঠিয়েছিলেন তরুণী। যার জেরে জেল হয় প্রেমিকের। কারাবাসের জেরে চাকরি থেকেও সাসপেন্ড হন তিনি।
মালদহ: প্রেমিককে ‘শাস্তি’ দিতে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বিচারককে অশ্লীল মেসেজ পাঠিয়েছিলেন তরুণী। যার জেরে জেল হয় প্রেমিকের। কারাবাসের জেরে চাকরি থেকেও সাসপেন্ড হন তিনি। ঘটনার ৭ বছর পর অবশেষে বিচার পেলেন ওই যুবক। অবশেষে গ্রেফতার হলেন আসল অভিযুক্ত।
২০১৪ সালের ৪ অক্টোবর মালদা জেলা আদালতের অ্যাকাউন্টস সেকশনে কর্মরত বিনয় সরকারের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তৎকালীন মালদা জেলা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড কোর্টের বিচারক অনামিত্রা ভট্টাচার্যের মোবাইলে একটি মেসেজ যায়। বিনয় সরকার তাঁকে অশ্লীল মেসেজ পাঠিয়েছেন, এই অভিযোগ এনে সে বছরেরই ১০ অক্টোবর মালদহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিচারক। এর পর বিনয় সরকার গ্রেফতার হন। ৬৪ দিন কারাবাসের পর জামিনে মুক্তও হন। ৪৮ ঘন্টার বেশি সময় কারাবাসের কারণে তাঁকে চাকরি থেকে সাসপেন্ড করা হয়।
এদিকে বিনয় দাবি করেন ওই মেসেজ তিনি পাঠাননি। এরপর মালদা সাইবার ক্রাইম থানা তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। তদন্তে উঠে আসে, বিনয় সরকারের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই অশালীন ম্যাসেজ পাঠানো হলেও, বিনয় যে মোবাইল ব্যবহার করতেন, সেটি থেকে পাঠানো হয়নি ওই ম্যাসেজ। জানা যায়, অন্য একটি মোবাইল ফোন থেকে সেদিন বিচারকের মেসেজ গিয়েছিল। সেই ফোনের আইএমইআই নম্বর বের করে শুরু হয় দ্বিতীয় পর্যায়ের তদন্ত। আর তাতেই অন্য মোড় নেয় তদন্ত।
সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞদের তদন্তে উঠে আসে, ওই আইএমইআই নম্বরের মোবাইলটি যোগমায়া মণ্ডল নামে দুর্গাপুরের বাসিন্দা এক মহিলা ব্যবহার করতেন। কিন্তু লোকেশন ট্র্যাকিং ডেটা এবং ইন্টারনেট প্রোটোকল ডিটেইল থেকে উঠে আসে, সেই সময় মালদহেই ছিলেন যোগমায়া। আর তাঁর মোবাইল থেকেই বিচারকের মোবাইলে ওই অশ্লীল মেসেজ পাঠানো হয়েছিল।
কিন্তু কে এই মহিলা? কেনই বা অন্যের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এমন গর্হিত কাজ করে একজনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসালেন? তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, বিনয় সরকারে সঙ্গে আসলে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল যোগমায়ার। দু’জনেই তখন মালদায় থাকতেন। বিনয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট-এর আইডি, পাসওয়ার্ড সবই তাঁর কাছে ছিল। কোনও কারণে নিজেদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না ওই যুগলের। সম্পর্কে থাকতে চাননি বিনয়। আর সেই ঘটনার পরই বিনয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বিচারককে অশ্লীল বার্তা পাঠান ওই মহিলা।
আরও পড়ুন: ‘উপনির্বাচনের আগে পুরসভার নির্বাচন হোক,’ দাবি দিলীপের
অবশেষে অভিযুক্তাকে আদালতে পেশ করা হলে তাকে ১৪ দিনের জেলা হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তাঁর বিরুদ্ধে ১২০-বি ধারায় মামলা রুজু করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চার্জশিট পেশ করতে চায় মালদা সাইবার ক্রাইম থানার তদন্তকারী আধিকারিকরা।