Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Adhir Chowdhury: পাশে পাননি হাইকমান্ডকেও? গড় যে নড়বড়ে তা আগেই টের পেয়েছিলেন অধীর…

Adhir Chowdhury Result: মঙ্গলবার গণনা শুরু হওয়ার পর থেকে দেখা যাচ্ছিল কখনও এগোচ্ছেন। কখনও পিছিয়ে পড়ছেন। কার্যত সাপ-লুডোর খেলা চলছিল। একটা সময় দেখা গিয়েছিল বিজেপি-র নির্মল কুমার সাহা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন। পরে যদিও সেই হিসাব বদলায়।

Adhir Chowdhury: পাশে পাননি হাইকমান্ডকেও? গড় যে নড়বড়ে তা আগেই টের পেয়েছিলেন অধীর...
অধীর চৌধুরী
Follow Us:
| Updated on: Jun 05, 2024 | 7:45 AM

মুর্শিদাবাদ: এক যুগের অবসান। টানা ২৫ বছর পর বহরমপুর হাতছাড়া হল কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর। তাও আবার রাজনীতির ময়দানে ‘আনকোরা’ ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের কাছে। চলতি বছরের ভোটে তাঁকে দেখা গিয়েছিল বামেদের সঙ্গে জোট করে লড়তে। তাঁর প্রচারও নজর কেড়েছিল। তবে কোনও ‘ম্যাজিকই’ কাজ করল না এবার।

মঙ্গলবার গণনা শুরু হওয়ার পর থেকে দেখা যাচ্ছিল কখনও এগোচ্ছেন। কখনও পিছিয়ে পড়ছেন। কার্যত সাপ-লুডোর খেলা চলছিল। একটা সময় দেখা গিয়েছিল বিজেপি-র নির্মল কুমার সাহা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন। পরে যদিও সেই হিসাব বদলায়। অধীর দ্বিতীয় হলেও প্রথম থেকে গেলেন ইউসুফই। ষষ্ঠবারের জন্য আর সাংসদ হওয়া হল না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির।

অধীর গড়ের দোলাচল শুরু কবে?

২০২১ সালের বিধান সভা নির্বাচনের হিসাব দেখলে বহরমপুরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নাড়ু গোপাল মজুমদারকে হারান বিজেপির সুব্রত মিত্র। সেই অধীর অনুগামী হিসাবে পরিচিত মনোজ চক্রবর্তী খাতা খুলতে পারেনি। কাজ করেনি অধীর ম্যাজিক। পঞ্চায়েত ভোটেও খুব একটা ভাল ফল করতে পারেনি হাত শিবির। অপরদিকে, বাকি বিধানসভা আসনগুলিতেও একচ্ছত্র জয় ধরে রাখে তৃণমূল কংগ্রেস।এবারের ভোটের প্রচারে গিয়েও একাধিকবার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতাকে। তখন থেকেই ভিতরে ভিতরে উঠতে শুরু করেছিল বিভিন্ন প্রশ্ন।

পাশে দাঁড়ায়নি হাইকম্যান্ডই

২০২৪ এর লোকসভা ভোটের ঠিক আগে দেখা গেল খোদ দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে বিরোধ বাধে অধীর চৌধুরীর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, “কংগ্রেসকে যে খতম করবে, আমি তাকে খাতির করব, এটা হতে পারে না। আমার বিরোধিতা কোনও ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে নয়, আমার বিরোধিতা হল নৈতিক বিরোধিতা।” এরপরই দেখা যায় কার্যত ‘খড়গহস্ত’হন মল্লিকার্জুন খাড়গে। উনি জোটে আছেন, এটা নিশ্চিত। আর অধীর চৌধুরী কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নয়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কংগ্রেস দল আছে, হাইকমান্ড আছে। আমরা যা সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই হবে। আমরা যা বলব, সেটাই মানতে হবে। কেউ যদি মানতে না পারে, তাহলে বেরিয়ে যেতে পারে।”

এরপর অধীরের ভোটের প্রচারে দেখা যায়নি কংগ্রেসের কোনও শীর্ষ নেতৃত্বকে। যেখানে উত্তর প্রদেশেও অখিলেশের প্রচারে গিয়েছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কারা সেখানে অধীরের প্রচারে দেখা যায়নি কাউকেই। তবে কি আগেই হাই কমান্ডের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল তাঁর। কারণ গান্ধী পরিবারের যথেষ্ঠ ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত অধীর।

গতকাল হারের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, “ভোট ঠিকঠাক হয়েছিল। আমাদেরও চেষ্টার কোনও ত্রুটি ঠিল না। কিন্তু এবার মানুষ মনে করেছে হারানো দরকার। তাই হারিয়েছে। কোনও অভিযোগ নেই আমার।” সঙ্গে উদার ও ধর্ম নিরপেক্ষ শক্তির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “একদিকে হিন্দু ভোটের বিভাজন, আর অন্যদিকে মুসলিম ভোট। এর মাঝে আমরা পড়ে গিয়েছি। বলতে পারেন স্যান্ডুইচ হয়ে গিয়েছি।”

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সাল থেকে লড়াইয়ের ময়দানে অধীর। সে বার হেরে গিয়েছিলেন। তার পাঁচ বছর পর সেই নবগ্রাম থেকে জিতেই বিধায়ক হন তিনি। তারপর থেকেই ‘লম্বা রেসের ঘোড়া’। তবে সেই দৌড় থামাতে চাল দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রার্থী করা হয় ইউসুফকে। আর ইউসুফ প্রার্থী হতেই কংগ্রেসের অলিন্দে কিছুটা ‘চাপ’ বাড়ছিল বলেই মনে করা হয়। তার উপর আবার এলাকার চিকিৎসক নির্মলচন্দ্র সাহাকে প্রার্থী করে সেই প্রেশার আরও দুগুণ বাড়িয়েছিল বিজেপি বলে অনুমান রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। তবে বরাবরই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন অধীর। বলেছিলেন জয় তাঁর নিশ্চিত। কিন্তু এবার অধীর যুগের ‘পতনে’ কিছুটা হলেও মনখারাপ কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের।