Nadia: চোখে স্বপ্ন, ‘শিক্ষক’ ইউটিউব, কাস্তে ধরা হাতে এবার উঠবে স্টেথোস্কোপ

Nadia: ইউটিউব দেখেই চালিয়েছেন পড়াশোনা। নিয়েছেন ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি।

Nadia: চোখে স্বপ্ন, 'শিক্ষক' ইউটিউব, কাস্তে ধরা হাতে এবার উঠবে স্টেথোস্কোপ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 20, 2022 | 9:06 PM

নদিয়া: জমিতে সামান্য কাজ করে কোনওরকমে জীবনধারণ করেন বাবা। ছেলের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে নিজের সর্বস্ব দিয়ে পাশে থেকেছেন। বাবার পাশে দাঁড়াতে মাঠেও কাজ করেছেন ছেলে। এত কিছুর মধ্যেও নদিয়ার (Nadia) নাকাশিপাড়ার দাদুপুরের বাসিন্দা সাহেব দাসের ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন ছোটবেলা থেকেই। বাবা লেংটু দাসের মাসিক রোজগার চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। তাতেই চলে সংসারের ঘানি। পঞ্চায়েত থেকে সাহেবের ঠাকুমা একটি ঘর পেয়েছেন। পুরনো ঘরে সকলের ঠিক মতো জায়গা না হওয়ায় বর্তমানে ঠাকুমার কাছেই থাকেন সাহেব। অর্থকষ্টের জেরে নিতে পারেননি কোচিং। ইউটিউবই হয়েছে তাঁর শিক্ষক। ইউটিউব দেখেই চালিয়েছেন পড়াশোনা। নিয়েছেন ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি। চরম দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে সেই স্বপ্ন ছুঁতে চলেছেন সাহেব। প্রবেশিকা পরীক্ষা ফলাফলে দেখা যায় সাহেব ৬৪০ ব়্যাঙ্ক করেছেন। ভর্তি হতে চলেছেন ঝাড়গ্রামের মেডিকেল কলেজে। সাহেবের কৃতিত্বে গর্বিত তাঁর গ্রামের বাসিন্দারাও। 

ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা লেংটু দাস বলেন, “আমার ছেলে খুব কষ্টের মধ্যে পড়াশোনা করেছে। আমি চাই ও আরও বড় হোক। গ্রামের মানুষের কাজে লাগুক। ডাক্তারি পাশ করুক।” সাহেবের জেঠু বাবুল দাস বলেন, “সাহেব খুবই গরিব পরিবারের ছেলে। ছোটবেলা থেকে অভাব-দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। ওর বাবার কাছে যেটুকু ছিল সব বিক্রি করে সাহেবের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। একে সরকার থেকে সাহায্য করলে আরও বড় হতে পারবে। এখনও অবধি কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা ওদের পরিবার পায়নি।” 

গত বছরেও ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিলেন সাহেব। তবে সেবার মেডিকেল কলেজের দরজা খোলেনি তার জন্য। এবার হাতের মুঠোয় স্বপ্ন ছুঁতে পেরে স্বভাবতই খুশি তিনি। সাহেব বলেন, “আমার বাড়ি একটা প্রত্যন্ত গ্রামে। যে মানুষ কখনও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেনি। ছোটবেলা থেকে খুব কষ্টের মধ্যে পড়াশোনা শুরু করেছিলাম। স্যাররাও পাশে থেকেছেন ছোট থেকে। ডাক্তার হওয়ার জেদ ছোট থেকেই ছিল। সেখান থেকেই স্বপ্ন দেখা শুরু। তবে স্বপ্ন ছুঁতে পারব কিনা জানতাম না। অর্থ কষ্টের মধ্যে লড়াই চালিয়ে যাই। কোচিং নেওয়ার ক্ষমতা আমার ছিল। ইউটিউবের সাহায্য নিয়েও পড়াশোনা করেছি। কখনও ফোনে রিজার্চ শেষ হয়ে গেলে ইউটিউবও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার জোগাড় করে পড়াশোনা চালিয়েছি।”