Khardah: ঘরেই জমেছিল বৃষ্টির জল, বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত মা-বাবা-দাদা, অনাথ ৪ বছরের শিশু!
Electrocution: চার বছরের ছোট ছেলেটি কী করবে বুঝতে না পেরে প্রতিবেশীদের ডেকে আনে। রাজা, পৌলমী ও শুভ তিনজনকেই ব্যারাকপুর বিএন বোস মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
উত্তর ২৪ পরগনা: ভাদ্র-ধারাপাত যে কতটা ভয়ঙ্কর তার প্রমাণ দিল খড়দহের দাস পরিবার। বাড়ির মধ্য়েই জমেছিল জল। নিজেদের বাড়িতে সেই জমা জলেই বিদ্যুত্স্পৃষ্ট ( Electrocution) হয়ে মৃত্যু হল দম্পতি ও তাঁদের কিশোর ছেলের। গোটা ঘটনার সাক্ষী থাকল কেবল ৪ বছরের শিশুপুত্র। মঙ্গলবার এমনই মর্মান্তিক ঘটনা খড়দহের পাতলিয়ায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খড়দহের ওই সরকারি আবাসনে নিজের স্ত্রী ও দুই পুত্রকে নিয়ে থাকতেন বছর চল্লিশের রাজা দাস। কিছুদিন ধরেই বৃষ্টির জেরে আবাসনের ভেতরেও জল জমেছে। জমা জলেই এদিন ঘরের মধ্য়েই বাড়ির কোনও কাজে বিদ্যুত্ সংযোগ করতে গিয়েছেল রাজা। সেইসময়ে তিনি বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন। স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে আসেন স্ত্রী পৌলমী। তিনিও বিদ্যুত্স্পৃষ্ট ( Electrocution) হন। মা-বাবাকে বাঁচাতে আসেন বছর এগারোর শুভ দাস। সেসময় খাটের ওপর বসেছিল তার ছোট ভাই। কিন্তু, মা-বাবাকে বাঁচাকে গিয়ে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয় শুভও। বেঁচে যায় চার বছরের নাবালক।
চার বছরের ছোট ছেলেটি কী করবে বুঝতে না পেরে প্রতিবেশীদের ডেকে আনে। রাজা, পৌলমী ও শুভ তিনজনকেই ব্যারাকপুর বিএন বোস মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে চিকিৎসকেরা তিন জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর দেওয়া হয় খড়দহ থানায়। ছুটে আসে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘরে মধ্য়ে জমা জল থেকেই এই বিপত্তি। গত দু’দিনের প্রবল বৃষ্টিতে ওই আবাসনে রাজার বাড়িতে জল জমে গিয়েছিল। মঙ্গলবার ঘরের সেই জমা জলে দাঁড়িয়েই ফ্রিজের বিদ্যুৎ সংযোগ করতে গিয়েছিলেন রাজা। সে সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের বাকি দুই সদস্য অর্থাত্ পৌলমী ও বড়ছেলে শুভ তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে পরপর বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন। তখনই তাঁদের মৃত্যু হয়। ছোট ছেলেটি কিছু না বুঝতে পেরে হতবাক হয়ে কেবল ঘটনাটি দেখে।
এলাকাবাসী অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতারা কেবল ভোটের সময় ভোট চাইতে আসেন। ভোট মিটলেই আর তাঁদের দেখা যায় না। বারবার বিধায়ক-শাসক শিবিরকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। জল কখন নামবে তাও অনিশ্চিত।
তবে শুধু খড়দহই নয় জলমগ্ন গোটা পানিহাটি। এমনকী সরকারি হাসপাতালও জলে ভাসছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দেখা যায়, হাসপাতালের (Panihati State General Hospital) সমস্ত ওয়ার্ড ডুবেছে জলে। হাঁটু সমান জলের মধ্যেই ওয়ার্ড পরিদর্শন করছেন চিকিত্সক ও নার্সরা। অসুবিধায় পড়ছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনরা। অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও প্রশাসন উদাসীন। জল নিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। ওই জলের মধ্যেই ভাসছে হাসপাতালের ময়লা কাপড়, আবর্জনা, ফেলে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ। জ্বরাতঙ্ক যখন বঙ্গ জুড়ে, পাশাপাশি বাড়ছে মশাবাহিত ডেঙ্গুর দাপট তখন হাসপাতালের মধ্যেই জমা জলে থাকতে গিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত রোগীরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বারবার পানিহাটি পুরসভায় চিঠি লিখেও কোনও লাভ হয়নি। অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু, সরকারিভাবে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ফলে বৃষ্টি হলেই এই ভোগান্তি। যদিও, এই ঘটনায় পানিহাটি পুরসভা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
আরও পড়ুন: Dev: ‘বাবুলদা আজ আমাদের দলে, কাল…’, বলেই থামলেন তারকা-সাংসদ!
আরও পড়ুন: Jitendra Tiwari: জল্পনায় জল, শুভেন্দুর সঙ্গে কর্মিসভায় জিতেন্দ্র, নির্বাচনে লড়তে চ্যালেঞ্জ বাবুলকে