Birthday Wishes: ১১টি চিঠিতে ‘পরিচয়’, জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা পেয়ে আপ্লুত জলপাইগুড়ির প্রতাপ
Birthday Wishes: 'ডিয়ার প্রতাপ। উইশ ইউ ভেরি হ্যাপি বার্থ ডে।' PMO থেকে এই ই-মেইল পাঠিয়ে জলপাইগুড়ি বাসিন্দা প্রতাপ রাউতকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
জলপাইগুড়ি: ‘ডিয়ার প্রতাপ। উইশ ইউ ভেরি হ্যাপি বার্থ ডে।’ PMO থেকে এই ই-মেইল পাঠিয়ে জলপাইগুড়ি বাসিন্দা প্রতাপ রাউতকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর থেকে এই শুভেচ্ছাবার্তা পেয়ে উচ্ছ্বসিত হরিজন সম্প্রদায়ের যুবক প্রতাপ সহ রাউত পরিবার।
জলপাইগুড়ি হরিজন বস্তির বাসিন্দা প্রতাপ রাউত। এর আগে বেশ কয়েকবার সংবাদ শিরোনামে এসেছেন প্রতাপ। তাঁকে কি মনে আছে? প্রতিদিন নানান খবরের ভিড়ে মনে না থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে এই হরিজন যুবককে ভুলে যাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ, শনিবার প্রতাপের ৩৮ তম জন্মদিনে ই-মেইল পাঠিয়ে তাঁকে ‘উইশ’ করলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ডাকযোগেও তাঁকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কীভাবে পরিচয় হয় প্রতাপ রাউতের ?
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১১ বার চিঠি আদান-প্রদানের মাধ্যমে আলাপচারিতা বেড়েছিল জলপাইগুড়ির প্রতাপ রাউতের। জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রের কর্মী ছিলেন প্রতাপ। চা পাতা পাওয়ার অভাবে ২০১৫ সালে বন্ধ হয়ে যায় জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র। প্রতাপ কর্মহীন হয়ে পড়েন। বহু আন্দোলন হওয়ার পরও চালু হয়নি সেটি। তবে ওই নিলাম কেন্দ্রের অন্যান্য শ্রমিকের মতো প্রতাপও কর্মহীন হয়ে অন্য কাজের খোঁজ শুরু করেন। তারপরও ওই চা নিলাম কেন্দ্র চালু হওয়া নিয়ে হাল ছাড়েননি। চা নিলাম কেন্দ্র চালু করা নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ২০১৬ সালে প্রথম চিঠি দেন প্রতাপ। যদিও বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও জবাব আসেনি।
এরপর ২০২১ সালের মার্চ মাসে আচমকাই প্রতাপের পাঠানো চিঠির জবাব আসে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রক থেকে। সেই চিঠিতে বলা হয়, জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রে (ই অকশন) করার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। এছাড়া শিলিগুড়িতে যেহেতু একটি নিলাম কেন্দ্র চলছে তাই কাছাকাছি আর একটি নিলাম কেন্দ্র চালু করার কোনও যৌক্তিকতা নেই বলেও চিঠিতে জানানো হয়। যা দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে জলপাইগুড়ির চা বণিকদের। তাঁদের দাবি, এই সমস্ত তথ্য ভুল।
এরপর ওই চিঠির পাল্টা ফের তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে পালটা চিঠি দেন প্রতাপ রাউত। এইভাবে মোট ১১ বার প্রতাপের সঙ্গে কেন্দ্রের চিঠি আদান-প্রদান হয়। তারপর অবশ্য জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করতে উদ্যোগী হয় ভারতীয় চা পর্ষদ। তবে জন্মদিন মনে করে প্রধানমন্ত্রীর থেকে শুভেচ্ছা বার্তা আসবে, তা কল্পনা করেননি প্রতাপ।
এদিন, ৩৮ তম জন্মদিনে প্রতাপ রাউতের বাড়িতে কেক কাটার পাশাপাশি সামান্য ভাল-মন্দ খাবারের আয়োজন হচ্ছিল। এরই মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আসা শুভেচ্ছাবার্তায় আপ্লুত প্রতাপ। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আমাকে উইশ করে ই-মেইল পাঠানো হয়। এই ই-মেইল পেয়ে আমি সত্যিই খুব আপ্লুত। কারণ আমি একজন অতি সামান্য মাপের একজন কর্মচারী। কিন্তু, আমাকে ঠিক মনে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমি শুধু একজন হরিজন হিসাবেই নয়, একজন নাগরিক হিসাবেও অত্যন্ত আনন্দিত। কারণ আমার দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রী জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র চালু করা নিয়ে পুনরায় মূল্যায়ন করেন। আর তার ফল জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র ফের চালু হওয়ার পথে। প্রধানমন্ত্রীকে আমি প্রণাম জানাই।”
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র চালু হয়। সেই সময় ম্যানুয়ালি নিলামের কাজ চলত। ২০১২ সালে এই নিলাম কেন্দ্রে ই-অকশন চালু হয়। এরপর ২০১৫ সালে বন্ধ হয়ে যায় জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র।