Kali Puja 2021: এখানে মশাল জ্বালিয়ে আসেন পুরোহিত, স্বহস্তে এই কালীর পুজো দিতেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র

Purba Bardhaman: রাজা কৃষ্ণচন্দ্র শতাধিক ঘোড়া, হাতি, ঢাকি নিয়ে হাজির হন তুকিপুরে। ধুমধাম করে পুজো করেন তিনি। তারপর থেকেই তকিপুরের কালীর সমাদর ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন প্রান্তে

Kali Puja 2021: এখানে মশাল জ্বালিয়ে আসেন পুরোহিত, স্বহস্তে এই  কালীর পুজো দিতেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র
সেই কালী মূর্তি, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 02, 2021 | 8:47 PM

 পূর্ব বর্ধমান: ছোট্ট গ্রাম তকিপুর। বর্ধমান-বোলপুর রুটে বনপাস স্টেশনে নেমে দু-আড়াই কিলোমিটার রাস্তা। কথিত রয়েছে, খোদ রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে এই কালীর পুজো (Kali Puja) শুরু। তকিপুরের এই কালীর পুজো করতে পুরোহিত আসতেন মশাল জ্বালিয়ে। কেন? তার নেপথ্যে রয়েছে অন্য এক কাহিনী।

কথিত রয়েছে, অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বা তার আগে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র জানতে পারেন আউশগ্রামের তকিপুর জঙ্গলে একটি কালীমূর্তির খোঁজ পান রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। জানতে পারেন, একসময় ডাকাতরা সেই কালীর পুজো করত। পরে, কোনও অজ্ঞাতকারণে সেই কালীর আর রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি।

এ খবর জানা মাত্রই রাজা কৃষ্ণচন্দ্র শতাধিক ঘোড়া, হাতি, ঢাকি নিয়ে হাজির হন তুকিপুরে। ধুমধাম করে পুজো করেন তিনি। তারপর থেকেই তকিপুরের কালীর সমাদর ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন প্রান্তে। পুজো কমিটির সদস্যরা জানাচ্ছেন, ৫০০ বছরের পুরনো এই কালীর ইতিহাস আজও তাঁরা বহন করে চলেছেন সমানভাবে।

এই কালীপুজোকে কেন্দ্র করে শুধুই তকিপুর নয়, আশপাশে চোঁয়াড়ি, ভোঁতা, বিল্লগ্রামের মানুষও মেতে ওঠেন উৎসবে। চার দিন ব্যাপী ধরে চলে মেলা, কবিগান, বিচিত্রা অনুষ্ঠান, কাঙালি ভোজন। তবে, করোনা কালে এই জাঁকজমকে কিছুটা ভাঁটা পড়েছে বলে জানান কমিটির এক সদস্য। তাঁর কথায়, এবারও কোভিড বিধি মেনে পুজো হবে। তবে কোনও খামতি থাকবে না পুজোর আচার-অনুষ্ঠানে।

ওই কমিটির আরও এক সদস্য জানাচ্ছেন, কথিত রয়েছে, এক সময় এই তকিপুর ছিল জঙ্গল ঘেরা মহাশশ্মান। আখড়া ছিল ডাকাতদের। ডাকাতি করার আগে দেবী কালীর আরাধনা করতো তারা। মশাল জ্বালিয়ে পুরোহিতকে আনা হত। সেই রীতি মেনে আজও পুরোহিতকে মশাল জ্বালিয়ে নিয়ে আসা হয় এবং বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

সেই সময় নরবলি হত বলেও শোনা যায়। তবে, আজও বলি প্রথা উঠে যায়নি। ছাগল, ভেড়া এবং একটি মহিষ শাবক উৎসর্গ করা হয় ‘ডাকাত’ কালীর কাছে। এছাড়াও অনেকে মানসিক করে ছাগল ও ভেড়া উৎসর্গ করেন। প্রতি বছর শতাধিক বলি হয় এই পুজোয়।

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র পুজোর দায়িত্ব দিয়ে যান সে গ্রামের সরকার, পালিত এবং মিত্র পরিবারকে। সেবায়েত হিসাবে সারা বছর ওই কালীর রক্ষণাবেক্ষণ করেন তাঁরাই। কালীর নিজস্ব জমি রয়েছে। জমির চাষের আয়ের উপরই পুজোর অধিকাংশ খরচ বহন হয়। তবে, বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্ব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সকলেই।

আরও পড়ুন: Kali Puja 2021: স্বপ্নে কি কালী মূর্তি দেখেছেন? কোন রূপে দেখলে জীবনে কী কী ঘটতে পারে, জানেন?

আরও পড়ুন: Kali Puja 2021: পুজো তো দূরস্ত, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবী কালীর ছবি দেখলেও মুছে দেওয়া হয় এই গ্রামে!