ইয়াস আতঙ্ক কাটিয়ে জামাইষষ্ঠীর আগে সমুদ্র যাত্রার প্রস্তুতি মৎস্যজীবীদের

এ বছর বর্ষার মরসুমে মৎস্যজীবীরা হয়ত একটু ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। একে ইয়াসের ক্ষতি, তার ওপর জ্বালানি তেলের দাম উর্ধ্বমুখী। প্রতি ট্রলার পিছু ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

ইয়াস আতঙ্ক কাটিয়ে জামাইষষ্ঠীর আগে সমুদ্র যাত্রার প্রস্তুতি মৎস্যজীবীদের
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 12, 2021 | 9:12 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: গত ২৬ মে বাংলার উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তার পর কেটে গিয়েছে দু’ সপ্তাহের বেশি। ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে উপকূলবাসী। বিপুর পরিমাণে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে মৎস্যজীবীদের। হারিয়েছেন বাসস্থান, ভেঙেছে তাঁদের রুটি-রুজির অস্ত্র- নৌকা ও ট্রলার। কিন্তু জীবন আসলে বাঁধা পাকস্থলীতে। তাই জামাই ষষ্ঠীর আগে ফের গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিতে তৈরি হচ্ছেন মৎস্যজীবীরা।

শনিবার দিঘা মোহনা ফিসারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন, মৎস্য দফতর ও ট্রলার মালিকরা যৌথভাবে একটি বৈঠকের আয়োজন করেন দিঘা মোহনায়। সেই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি, মৎস্য দফতরের সহ-মৎস্য অধিকর্তা সুরজিৎ বাগ, সংগঠনের সভাপতি প্রণব কর, সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস ও অন্যান্যরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় সম্পূর্ণ কোভিড বিধি মেনে, প্রতিদিন কাজের পরে স্যানিটাইজ করা হবে মৎস্যজীবীদের। বৈঠকে প্রস্তাব ওঠে জেলার ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্যজীবীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও।

বৈঠক শেষে মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, আগামী ১৪ জুন রাজ্যের ‘ফিসিং ব্যান পিরিয়ড’ কাটছে ১৫ জুন। সেদিন থেকে কোভিড বিধি মেনে সমুদ্র যাত্রা করতে পারবেন মৎস্যজীবীরা। আর দিঘা মোহনার মাছের বাজার খুলবে ১৭ জুন। তার আগে বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবী ট্রলার, জাল নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে মৎস্য আরোহণ করার জন্য। যাঁরা মাছ শিকারে যাবেন, ব্লক স্বাস্থ্যে কেন্দ্রে তাঁদের ভ্যাকসিনেশনের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।

এই মুহূর্তে ৪৫ বছর বয়সীদের টিকাকরণ চলছে। তারপর ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হবে। আর বাজারের ক্ষেত্রে মাস্ক ও স্যানিটাইজের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখার প্রক্রিয়া চলবে। যদি কেউ মাস্ক না পরেন তাঁকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে বলে ঠিক হয়েছে এদিনের বৈঠকে।

এ বছর বর্ষার মরসুমে মৎস্যজীবীরা হয়ত একটু ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। একে ইয়াসের ক্ষতি, তার ওপর জ্বালানি তেলের দাম উর্ধ্বমুখী। প্রতি ট্রলার পিছু ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে আশা করা যায়, এবছর জামাইষষ্ঠীর পাতে ইলিশ ভালই দিতে পারবেন মৎস্যজীবীরা। সেক্ষেত্রে বাড়তে পারে তাঁদের আয়ও।

প্রতিবছর ব্যান পিরিয়ডের কারণে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ থাকে। ব্যান পিরিয়ড শেষ হলেও এবার লকডাউনের কারণে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে ছিলেন মৎস্যজীবীরা।

আরও পড়ুন: ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপি! কাস্তে-পদ্মের কৃষক নেতা ও ৩০০ কর্মীর যোগদান ঘাসফুলে 

ইয়াস-ধাক্কা কাটিয়ে কোভিড বিধি মেনে কতটা উৎসাহ নিয়ে মৎস্যজীবীরা সমুদ্র যাত্রা করে জামাইষষ্ঠীর আগে রুপোলি ফসল তুলে আনতে পারেন সেটাই এখন দেখার।