Kurmi Movemnet: পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে বয়কট করার ঘোষণা ‘আদিবাসী কুড়মি সমাজের’
Kurmi Movemnet: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলকে বয়কট করল আদিবাসী কুড়মি সমাজ । একইসঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের মিটিং, মিছিল ও প্রচারে সামিল হবে না আদিবাসী কুড়মি সমাজ ।
পুরুলিয়া: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলকে বয়কট করার ডাক দিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ নামে একটি সংগঠন। তাদের দাবি, কোনও রাজনৈতিক দলের মিটিং, মিছিল ও প্রচারে সামিল হবে না আদিবাসী কুড়মি সমাজ। পুরুলিয়া শহরে অবস্থিত আদিবাসী কুড়মি সমাজের দলীয় কার্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করলেন সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাতো । তিনি বলেন, “কুড়মি সম্প্রদায়কে এসটি তালিকাভুক্তির দাবিতে সিআরআই কমেন্ট ও জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট পাঠানোর ক্ষেত্রে টালবাহানা করছে রাজ্য সরকার।” অভিযোগ তোলেন, আদিবাসী কুড়মি সমাজের রেল রোকো আন্দোলনেও কোনওরকম সদর্থক ভূমিকা পালন করেনি রাজ্য সরকার। তিনি জানিয়েছেন, এরই প্রতিবাদে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল দলকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ । এছাড়াও বাকি রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষেত্রে মিটিং মিছিল ও প্রচারে এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অংশ নেবে না এই সংগঠন ।
কুড়মিদের একাংশের মূলত একটাই দাবি, তাঁদের এসটি কোটার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাঁরা প্রিমিটিভ ট্রাইভের অন্তর্গত ছিলেন। এরকম ১৩টি আদিবাসী সম্প্রদায় ছিল। ১২টিকে এসটি কোটার অর্ন্তভুক্ত করা হয়। খালি কুর্মি সমাজকে অন্যান্য অনগ্রসর জাতির অন্তর্ভুক্ত (ওবিসি) করা হয়। তাঁরা এই ওবিসি কোটা চান না। তফশিলি জনজাতি কোটার আওতায় আনতে হবে। এই দাবিতে গত কয়েকদিন রেল অবরোধ বা রাস্তা অবরোধ করেছিলেন তাঁরা। মূলত দক্ষিণ -পূর্ব রেলের খড়গপুর -আদ্রা, খড়্গপুর – টাটা শাখার রেল পরিষেবা ব্যহত হয়। কুর্মি সমাজের একাংশের অভিযোগ, প্রশাসনের চাপ ও সাধারণ মনুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে তাঁরা এই অবরোধ তুলে নেন। রেলের তরফ থেকেও কড়া পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়। রাজ্যের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, রেল তার ইচ্ছা মতো পদক্ষেপ করতেই পারে, সেক্ষেত্রের রাজ্যের বলার কিছু নেই। এরপর কুড়মিরা অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা জানান। প্রচণ্ড গরমে আটকে পড়া যাত্রীদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।
এর আগেও পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া-সহ বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা রাজ্যের জঙ্গলমহল এলাকা জুড়ে ‘ঘাঘর ঘেরা’ নামে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির নেওয়া হয়। এর আগেও কুড়মিদের তালিকাভুক্ত করার জন্য খড়্গপুরের খেমাশুলিতে কেন্দ্র সরকারের অধীনে থাকা রেলপথ আর জাতীয় সড়ক টানা পাঁচ দিন ধরে অবরোধ করেছিলেন। বিশাল প্রভাব পড়েছিল গোটা রাজ্যে। এর মাঝেই কুড়মিদের এক পক্ষ রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা বসে। কিন্তু তাতেও কোনও সমাধানসূত্র বের হয় না। এরপরই কুড়মি আন্দোলনের নেতার এই ঘোষণা।
এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “কুড়মি সমাজের দাবিগুলি নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে যতটা করা সম্ভব করা হয়েছে। তবে এসটি ঘোষণা করা কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত।” তিনি আরও বলেন, “এই রাজ্যে আদিবাসী কুড়মি সমাজের কোনও সমস্যা হচ্ছে না। কারণ রাজ্যে রয়েছে মানবিক সরকার। অন্য রাজ্যে তারা তো এই দাবি তুলতেই পারেনি। আর আদিবাসী কুড়মি সমাজ মানেই যে তারা সব কুড়মিদের অভিভাবক তা নয়। তারা একটি সংগঠন।” পুরুলিয়ার কুড়মিরা তৃণমূলের সঙ্গেই আছে বলে দাবি করেন তিনি। এই ধরনের মন্তব্যের পিছনে রাজনীতি রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।