Purulia: করোনার সময়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে সে অধ্যায়ের সূচনা, প্ল্যাটফর্মেই শেষ! ৪ বছর পর মাকে পেলেন ছেলে
Purulia: লকডাউন শুরু হলেও বাড়ি না ফেরায় স্থানীয় ও কাটোয়া থানায় মিসিং ডায়েরি করে পারিবারের লোকজন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও মায়ের কোনও খোঁজ পাননি ছেলে অর্ণব। মাকে খুঁজে পাওয়ার হাল প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল অর্ণবের পরিবার।
পুরুলিয়া: অতিমারি পরস্থিতিতে বোনের বাড়ি গিয়েছিলেন। তারপর কোভিডের বাড়বাড়ন্তে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে আর বাড়ি ফিরতে পারেননি কেতুগ্রামের অনিমা মণ্ডল। ২০২০ কাট টু ২০২৪। চার বছর পর হারানো মাকে খুঁজে পেলেন ছেলে।
অনিমা মণ্ডল, বয়স ৪৮। বাড়ি বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার বরমালিহা গ্রামে। ২০২০সালের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি তাঁর বোনের কাটোয়ার বাড়িতে বেড়াতে যান। দেশে তখন করোণার প্রভাব পড়তে শুরু করায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়। লকডাউনের তারিখটা ছিল ২০২০সালের ২০মার্চ। তার আগের দিন অনিমা মণ্ডল নিজের বাড়িতে ফেরার উদ্যেশ্যে কাটোয়া থেকে বাসে চাপেন। তারপরে আর বাড়ি ফেরা হয়নি অনিমার।
লকডাউন শুরু হলেও বাড়ি না ফেরায় স্থানীয় ও কাটোয়া থানায় মিসিং ডায়েরি করে পারিবারের লোকজন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও মায়ের কোনও খোঁজ পাননি ছেলে অর্ণব। মাকে খুঁজে পাওয়ার হাল প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল অর্ণবের পরিবার। অর্ণব হঠাৎ গ্রামের সম্পর্কে দাদা সুজয় মণ্ডলের কাছে জানতে পারেন, তাঁর মায়ের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।
সুজয়কে ফোন করে জানান, তাঁদের গ্রামের ছেলে, যিনি বর্তমানে পুরুলিয়া জিআরপিতে কর্তব্যরত। তিনিই পুরুলিয়া স্টেশনের ৩নম্বর প্লাটফর্মে অনিমা মণ্ডলকে বসে থাকতে দেখেন। তিনি চিনতে পেরেছিলেন অনিমাকে। তারপরেই তিনি মহিলার পরিচয় জানান জিআরপি আধিকারিককে। সঙ্গে সঙ্গে অনিমা ছবি তুলে গ্রামের যুবক সুজয়কে পাঠান। সুজয় অর্ণবকে সেই ছবি পাঠান।
এত বছর পর প্রথমে ছেলেকে চিনতে পারেননি অনিমা। পরে ছেলেকে চিনতে পারেন। অর্ণব জানান, তাঁর মায়ের আগে থেকেই একটু মানসিক সমস্যা ছিল। কিন্তু যখন তিনি তাঁর বোনের বাড়ি গিয়েছিলেন, তখন তাঁর সমস্যা ছিল না। পারিবারের লোকজনের সঙ্গে ভিডিয়ো কলিংয়ের মাধ্যমে কথা বলেন অনিমা।
অর্ণব তাঁর মাকে নিয়ে ঘরে ফেরেন। পুরুলিয়া জিআরপি আধিকারিক ঈশ্বর মুর্মু বলেন, “খুব ভালো লাগছে মহিলা তাঁর বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। আমাদের এক কর্মী মহিলাকে চিনতে পারে। তারপরেই তাঁর বাড়িতে যোগাযোগ করা হয়। বাড়ি থেকে ছেলে এসেছেন। প্রথমে চিনতে না পারলেও পরে বলেন এটা আমার ছেলে।”