Primary School: আমফান নিয়ে গিয়েছে স্কুলের ছাউনি, খুদেদের ভরসা এখন মিড-ডে মিলের বারান্দা
Sundarban: সম্প্রতি শিক্ষক দিবস পালন হয়েছে ঘটা করে। তবে জেলায়-জেলায় ছোট শিশুদের জন্য তৈরি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির একাংশের অবস্থা দেখলে ভিড়মি খেতে হয়। কোথাও চাঙড় ভেঙে পড়ছে, কোথাও আবার ক্লাসরুমের অবস্থা বেহাল।
সুন্দরবন: লম্বা বারান্দা। তার এক কোনে রয়েছে ছোট একটি ঘর। সেখানে উনুনের আগুনকে কাজে লাগিয়ে চলছে মিড-ডে মিলের রান্না। আর বারান্দায় পাতা টেবিল চেয়ার। সেখানেই বসে খুদেরা। পড়াশোনা করছে তারা। উনুনের ধোঁয়ায় চোখ-মুখ জ্বালা করলেও উপায় নেই। কারণ পড়াশোনা করার মতো আলাদা কোনও কক্ষ নেই। তবে নেই বললেও বলা ভুল হবে! কক্ষ থাকলেও তার উপর কোনও ছাউনি নেই। ফলে পড়াশোনার জন্য ভরসা রান্নাঘরের এই বারান্দা। সরকারিভাবে একাধিক নির্দেশ এলেও এই শিক্ষা কেন্দ্রের ছাউনি এখও পর্যন্ত জোটেনি।
সম্প্রতি শিক্ষক দিবস পালন হয়েছে ঘটা করে। তবে জেলায়-জেলায় ছোট শিশুদের জন্য তৈরি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির একাংশের অবস্থা দেখলে ভিড়মি খেতে হয়। কোথাও চাঙড় ভেঙে পড়ছে, কোথাও আবার ক্লাসরুমের অবস্থা বেহাল। আর সুন্দরবনের নামখানা ব্লকের দ্বারিকনগর ভিআই লেনিন শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের অবস্থা তো আরও মারাত্মক।
২০২০ সালে আমফানের তাণ্ডবে এই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের ছাউনি উড়ে যায়। এরপর করোনার জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল পঠনপাঠন। কিন্তু এরপর প্রায় দেড় বছরের বেশী সময় পঠনপাঠন শুরু হলেও শিশু শিক্ষা কেন্দ্রটি আর মেরামত করা হয়নি। এখনও ছাউনিহীন পুরো শিক্ষাকেন্দ্রটি।
সরকারিভাবে একাধিক নির্দেশ এলেও এই শিক্ষা কেন্দ্রের ছাউনি জোটেনি। অগত্যা খুদে পড়ুয়ার ভরসা পাশের মিড-ডে মিলের জন্য তৈরি রান্নাঘরের বারান্দা। এক টুকরো বারান্দায় সব শ্রেণির পঠনপাঠন চালাতে সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষিকারা। কারণ, রান্নার সময় উনুনের ধোঁয়াতে চোখ মুখ জ্বালা করে ছোটদের। শ্বাস নিতে কষ্ট হয় সকলের। অভিযোগ, ব্লক থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে বারেবারে আবেদন করেও কোনও সুরাহা মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যাও কমছে দিন দিন। পড়ুয়া সোমাশ্রী মণ্ডল বলল, “এখানে রান্না হয় বলে আমাদের চোখে ঝাঁঝ লাগে। খুব জ্বালা করে চোখ। আমরা পড়তে পারি না।”
জানা গিয়েছে, এক সময় পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল শতাধিক। বর্তমানে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৭ জনে। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি শ্রীমন্ত মালি জানান, “স্কুলের ছাউনি রিপেয়ারিং করার জন্য ৭ লক্ষ টাকার একটি স্কিম তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু গ্রামবাসী সেই কাজ করতে দেয়নি। তাঁদের দাবি স্কুল ভবনটিতে কংক্রিটের ছাদ ঢালাই করে দিতে হবে। কিন্তু ৭ লক্ষ টাকায় ছাদ ঢালাই করা সম্ভব নয়। তাই দ্রুত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে।” প্রধান শিক্ষিকা গৌরি সাউ বলেন, “খুব সমস্যার মধ্যে দিয়ে ক্লাস করতে হয়। যখন উনুন জ্বলে তখন নিশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়। ছোট বাচ্চাদের জল বেরিয়ে আসে চোখ দিয়ে।”