Aranya Shashthi: গাছেদের দীর্ঘায়ু কামনা করে অরণ্যষষ্ঠী, ফল-দই-মিষ্টিতে আদর সবুজকে
Nature: খোলা আকাশের নিচে গাছে চন্দন, সিঁদুরের টিকা পরিয়ে, বেঁধে দিলেন 'রক্ষা ধাগা'। ওই সুতোতেই গাছের দীর্ঘায়ু কামনা লুকিয়ে।
পুরুলিয়া ও উত্তর দিনাজপুর: সবুজের ফিকে রং। যত্রতত্র গাছ কেটে তৈরি হচ্ছে অট্টালিকা। শহর ছাড়িয়ে এ রোগ এখন মফস্বলগুলিতেও। দম বন্ধ হয়ে এলেও মেলে না একটু সবুজ-বাতাস। রোগ বাড়ছে, বাড়ছে নানা ব্যাধি। তবু কে আর সেসব খেয়াল রাখে? তবে এই পরিবেশ বাঁচানোর মন্ত্রকে সামনে রেখে একাধিক জেলায় প্রতি বছর জামাই ষষ্ঠীর দিনই পালিত হয় অরণ্য ষষ্ঠী। এবার আবার কাকতালীয় ভাবে রবিবারই বিশ্ব পরিবেশ দিবসও।
পুরুলিয়া জেলার অরণ্য ষষ্ঠী আদিবাসীদের বহু পুরনো একটা রীতি। আদিকাল থেকে পাহাড় অরণ্যেকে পুজো করে আসছেন পুরুলিয়ার আদিবাসীরা। পরবর্তীকালে এই পরম্পরা ছড়িয়ে পড়ে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যেই। জামাই ষষ্ঠীর দিন একটি বিশেষ পর্ব পালন করেন তাঁরা। পুরুলিয়ার মহিলারা আরাধনা করেন অরণ্যের। ষষ্ঠী তিথিতে এই পার্বণ, তাই এই দিনটিকে বলা হয় অরণ্যষষ্ঠী। এই দিনটিতে বাড়ির মহিলারা গাছের পুজো করেন।
আগে অবশ্য জঙ্গলে গিয়ে এই রীতি পালন করা হত। তবে এখন সময়ের সঙ্গে বদল এসেছে সে ছবিতে। বাড়ির কাছে বটগাছ বা অশ্বত্থ গাছের নিচে প্রদীপ জ্বালিয়ে, ধূপধুনো দিয়ে চলে আরাধনা। ডালায় সাজানো হয় অঙ্কুরিত ছোলা, ফল, ফুল। গাছের গায়ে সিঁদুর লাগিয়ে, সুতে পরিয়ে প্রণাম করেন অরণ্যদেবীকে।
দক্ষিণবঙ্গের রুখা শুখা পুরুলিয়ার ছবির সঙ্গে এদিন মিলে গেল উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের ছবিটাও। কুলিক বনাঞ্চলে প্রকৃতিকে বাঁচানোর বার্তা দিয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে পালিত হল অরণ্যষষ্ঠী। সকাল সকাল বনাঞ্চলে পুষ্পপত্র সাজিয়ে হাজির হলেন বেশ কয়েকজন মহিলা। সঙ্গে বাড়ির ছোটরাও। পুরোহিতের মন্ত্র পড়লেন, শাঁখ, উলুধ্বনি তখন মহিলাদের গলায়।
খোলা আকাশের নিচে গাছে চন্দন, সিঁদুরের টিকা পরিয়ে, বেঁধে দিলেন ‘রক্ষা ধাগা’। ওই সুতোতেই গাছের দীর্ঘায়ু কামনা লুকিয়ে। শেষে গাছকে দেওয়া হল দই, মিষ্টি, ফল। নিবেদিতা ভট্টাচার্য নামে এক মহিলা জানালেন, “আজ জামাই ষষ্ঠী। আবার অরণ্য ষষ্ঠীও। আজই আবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসও। ষষ্ঠীতে যেমন আমরা সন্তানদের সুস্থতা কামনা করে পুজো করি, চাই এই প্রকৃতিও দীর্ঘায়ু হোক, সবুজ হোক। সে কারণেই কুলিকে আসা।”