শূন্য হয়ে গিয়েছিলাম, আবারও ফিরে এসেছি, ফিরে আসা যায়: দীপঙ্কর
"সিপিআইএম (CPIM), কংগ্রেসের (Congress) ব্যর্থতার ফসল পেল তৃণমূল”
কলকাতা: ১৯৪৬ সালের পর এই প্রথম বাংলার বিধানসভা বামশূন্য। বিকল্প ভাবা তো দূর, বাংলার মানুষ বামেদের (Left Front) ন্যূনতম বিরোধী হওয়ার যোগ্যতা টুকুও কেড়ে নিয়েছেন। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, বাংলায় বিজেপিকে ঠেকাতে সবথেকে গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য এবং ফলপ্রসূ হিসেবে মানুষ বেছে নিয়েছেন তৃণমূলকেই। এই একই অভিমত সিপিআইএমএল-লিবারেশনের সর্বভারতীয় সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের (Dipankar Bhattacharya)। তাঁর কথায়, “বাংলার বামপন্থীদের বিশেষ করে সিপিআইএমের চরম ব্যর্থতার ফল এই ভরাডুবি। ওঁরা বোঝাতে চাইল আমরা তৃণমূলকে হারাতে পারি। বিজেপির থেকে আমরা ভাল। বাংলার ভোটের ইস্যুই ধরতে পারল না।”
Reports of post-poll violence in #WestBengal are disturbing. Any violent retribution will undermine the spirit of the Bengal verdict. The administration and @AITCofficial leadership must check such incidents with a firm hand and focus all energy on tackling the Covid19 crisis.
— Dipankar (@Dipankar_cpiml) May 3, 2021
তাঁর কথায়, এবার বাংলায় এই প্রশ্নে ভোটই হয়নি। ‘বাংলা কি বিজেপির হাতে চলে যাবে’, ভোট হয়েছে এই প্রশ্নে। নিজের মতের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের মন্তব্য, “ব্রিগেডে যে জনসভা হল এবং সেখানে যারা যা বললেন, তার ফল আজ গোটা বাংলা দেখছে। সেদিন ওই মঞ্চে সিএএ (CAA) বিরোধী, এনআরসি (NRC) বিরোধী, কৃষক আন্দোলনের নেতারা সমবেত হলে আজ এই হাল হত না। সিপিআইএম (CPIM), কংগ্রেসের (Congress) ব্যর্থতার ফসল পেল তৃণমূল।” তাহলে কি সিপিআইএম-এর নীতিগত ভুল? দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের সাফ কথা, “হ্যাঁ, নিশ্চয়ই নীতিগত ভুল। সেকারণেই আমরা সরে এসেছিলাম।”
রাজ্যের অনেক বাম নেতৃত্বই হারের একটি কারণ হিসেবে মেরুকরণকে দায়ী করছেন। হিন্দু-মুসলিম ভোট ভাগাভাগিতেই না কি নিশ্চিহ্ন হয়েছে লাল। যদিও দীপঙ্কর ভট্টাচার্য তা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, পশ্চিমবঙ্গের ৬০ শতাংশ মানুষ বিজেপিকে ভোট দেয়নি। তা মেরুকরণের ভোট নয়।
বাংলার বিধান রচনার পর রাজ্যসভার এক বিজেপি সাংসদ বলছেন, মমতার এই জয় মুসলমানদের ভেটো (Veto)। যার পাল্টা বাম নেতার জবাব, “হ্যাঁ বাংলায় মেরুকরণ হয়েছে। তবে সেটা বিজেপি বনাম বিজেপি বিরোধিতার মেরুকরণ। ফ্যাসিবাদ বনাম গণতন্ত্রের মেরুকরণ।”
তাহলে ভুল সংশোধনের উপায় কী? সিপিআএইএম-এল নেতার কথায়, “পুনর্গঠনই একমাত্র পথ। বিধানসভায় নেই, রাস্তার আন্দোলনে থাকতে হবে।” অতীত অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “১৯৯০ সাল থেকে বিহারে আমাদের ৫/৬ জন করে এমলএ থাকত। ২০১০ সালে আমরা শূন্য হয়ে গিয়েছিলাম। তবে ফিরে এসেছি। ২০১৫ সালে ৩। আর ২০২০ সালে ১২। লড়াই করেই ফিরে আসা যায়।”