USA: বিদেশ থেকে বাক্স ভরে জিরাফের মল এনে ধরা পড়লেন মহিলা
woman caught with Giraffe faeces: কেন ওই মহিলা জিরাফের মল নিয়ে এসেছিলেন? কেনই বা সেই বাক্স ভরা মল বাজেয়াপ্ত করা হল এবং নষ্ট করা হল? চাঞ্চল্যকর ঘটনা আমেরিকার মিনেসোটা বিমানবন্দরে।
ওয়াশিংটন: বিদেশ থেকে ফেরার সময় অনেকেই প্রিয়জনদের জন্য নানাবিধ উপহার নিয়ে আসেন। অনেক সময়ই আইনি জটিলতায় কাস্টমস বিভাগের কর্তারা সেই সব বিদেশি জিনিস বাজেয়াপ্ত করেন। আবার বিমানবন্দর দিয়ে গোপনে সোনা বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিস পাচার করতে গিয়েও কাস্টমস বিভাগের হাতে ধরা পড়েন অনেকে। কিন্তু, কাস্টমস বিভাগ এক বাক্স জিরাফের মল বাজেয়াপ্ত করছে, এমনটা সচরাচর শোনা যায় না। এমনই উদ্ভট ঘটনা ঘটেছে আমেরিকার মিনেসোটা বিমানবন্দরে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর), মিনেসোটা বিমানবন্দরের কাস্টমস বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি কেনিয়া থেকে আসার সময় এক মহিলা, সঙ্গে করে এক বাক্স জিরাফের মল নিয়ে এসেছিলেন। পরে, তাঁরা সেই মল ফেলে দিয়ে বাক্সটি ধ্বংস করেছেন।
কিন্তু, কেন ওই মহিলা জিরাফের মল নিয়ে এসেছিলেন? কেনই বা সেই বাক্স ভরা মল বাজেয়াপ্ত করা হল এবং নষ্ট করা হল? চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ২৯ সেপ্টেম্বর। ওই মহিলার বাড়ি আইওয়াতে। কেনিয়া থেকে ফেরার সময় মিনেসোটা বিমানবন্দরে নেমে তিনি ইউএস কাস্টমস এবং বর্ডার প্রোটেকশন বিভাগের কর্তাদের জানিয়েছিলেন, সঙ্গে করে একবাক্স জিরাফের মল নিয়ে এসেছেন। এরপরই কাস্টমস এজেন্সির কৃষি বিশেষজ্ঞরা ওই বাক্সটি বাজেয়াপ্ত করেন এবং ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
কাস্টমস বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, ওই মহিলার দাবি, জিরাফের মল দিয়ে তিনি একটি নেকলেস তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। আর সেই কারণেই সুদূর কেনিয়া থেকে বাক্স ভরে জিরাফের মল নিয়ে এসেছেন। আসলে বন্যপ্রাণীর মলমূত্র দিয়ে গয়না তৈরিটা তাঁর শখের বিষয়। এর আগে গাধার বিষ্ঠা ব্যবহার করে তিনি বহু গয়না তৈরি করেছেন। এবার, স্বাদ বদলাতে জিরাফের মল নিয়ে এসেছেন। তবে, তাঁর সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের প্রোটোকল মেনে ওই জিরাফের মল নষ্ট করে দিয়েছেন কাস্টমস কর্তারা।
কাস্টমস এবং বর্ডার প্রোটেকশন বিভাগ জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাইরে থেকে কোনও বন্যপ্রাণীর মল-মূত্র নিয়ে আসা নিষিদ্ধ। কারণ এর থেকে গুরুতর বিপদ হতে পারে। কাস্টমস বিভাগের এক কর্তা বলেছেন, “যদি ওই মহিলা ওই মল নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতেন এবং বিমানবন্দরে মল আনার কথা না জানাতেন, তাহলে বড় বিপদ হতে পারত। তিনি ওই মল ব্যবহার করে যদি গয়না তৈরি করতেন, তাহলে সেই গয়না থেকে কোনও ব্যক্তির গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হতে পারত। তিনি কোনও অজানা রোগে আক্রান্ত হতে পারতেন। তার থেকে সেই রোগ অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিল।”
বিশেষ করে কেনিয়া নিয়ে অতির্কিত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। আসলে, বর্তমানে আফ্রিকার এই দেশে নিউক্যাসল ডিজিজ, আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু, ক্লাসিক্যাল সোয়াইন ফিভার, পা এবং মুখের বিভিন্ন রোগ এবং সোয়াইন ভেসিকুলার ডিজিজের মতো বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। সেখান থেকে কোনও বন্যপ্রাণীর মল আনলে, তার মধ্যে এই ধরনের কোনও রোগের জীবানু থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তাই, এই ক্ষেত্রে ‘ভেটেরিনারি সার্ভিস পারমিট’ না থাকলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অন্য দেশ থেকে বন্যপ্রাণীদের মল আনার অনুমতি দেওয়া হয় না।
তবে, কেনিয়া থেকে জিরাফের মল আনার জন্য ওই মহিলাকে কোনও শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে না। কারণ, তিনি নিজেই মল আনার কথা জানিয়েছিলেন কাস্টমস বিভাগের কর্তাদের। তাঁদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন তিনি। মল ভরা বক্সটি বাজেয়াপ্ত করার সময় বাধা দেননি। এর পরিবর্তে মহিলা যদি বিমানবন্দর দিয়ে লুকিয়ে ওই মল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন, সেই ক্ষেত্রে ধরা পড়লে তাঁকে ৩০০ থেকে ১০০০ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৫,০০০ থেকে ৮৪,০০০ টাকা) পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারত।