Bangladesh-India: বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াত করা বাংলাদেশির সংখ্যা কমছে, কেন?
Benapole port: বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন আগে ৬ -৭ হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করত। সাম্প্রতিক সময়ে যাত্রীসংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। তবে শীঘ্রই এই পরিস্থিতির বদল ঘটবে এবং ভারতমুখী যাত্রীর সংখ্যা স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদী বেনাপোল বন্দরের কর্তা আব্দুল জলিল।
ঢাকা: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যেন আত্মিক সম্পর্ক। চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা, ভ্রমণ-সহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের নাগরিকেরা (Bangladeshi) সারা বছরই ভারতে যাতায়াত করেন। কিন্তু, ইদানিংকালে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াতকারী বাংলাদেশির সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। যার ফলে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হচ্ছে। ভারতে যাতায়াতকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য ভিসাপ্রাপ্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা এবং ভ্রমণ কর বৃদ্ধি প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বেনাপোল (Benapole) স্থল বন্দরের আধিকারিকেরা। একই মত বাংলাদেশের নাগরিকদের।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের প্রথম ৩ মাসে ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার ৭৯৮ জন বাংলাদেশি যাত্রী ভারতে যাতায়াত করেছেন। ভ্রমণ কর বৃদ্ধির পর ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের প্রথম ৩ মাসে বাংলাদেশি যাত্রীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লক্ষ ২৬ হাজার ৬৩৯ জন। ফলে এই খাতে হাসিনা সরকারের রাজস্ব আয় কমে গিয়েছে। অর্থাৎ ভারতে যাতায়াতকারী বাংলাদেশির সংখ্যা কম হওয়ার জন্য ভ্রমণ কর বৃদ্ধি যে অন্যতম কারণ, তা এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।
চিকিৎসা, শিক্ষা, ভ্রমণের মতো বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশি যাত্রীদের ভারতে আসার জন্য ভ্রমণ কর আগে ছিল ৫০০ টাকা। সম্প্রতি সেটা বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করেছে হাসিনা সরকার। সেজন্য ইমিগ্রেশনে যাত্রী সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নীচে বলে জানাচ্ছেন বেনাপোল শাখার সোনালি ব্যাঙ্কের আধিকারিক মহম্মদ মহসিন আলি। তিনি বলেন, আগে যে পরিমাণ যাত্রী বেনাপোল দিয়ে যাতায়াত করত, ভ্রমণ কর বৃদ্ধির পর অগস্টের প্রথম থেকে যাত্রী সংখ্যা কমে গিয়েছে। ফলে সরকারের ভ্রমণ করের মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
ভ্রমণ কর বৃদ্ধির সঙ্গে ভিসাপ্রাপ্তির দীর্ঘসূত্রিতা ও ভিসার মেয়াদ কমে যাওয়াও বাংলাদেশ থেকে ভারতগামী যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে জানাচ্ছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা। যদিও বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা সুবিধা দেওয়ার জন্য ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বাংলাদেশিদের ৫ বছর মেয়াদি ভিসা পাওয়ার কথা। আর ৬৫ বছরের কমবয়সিদের ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া হত ১ বছরের মেয়াদে। আর বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ৩ থেকে ৫ বছরের ভিসা প্রদান করা হত। সেই চুক্তি এখনও রয়েছে। তারপরও ভিসার মেয়াদ কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশের ভুক্তভোগী যাত্রীদের। তাঁরা জানান, আগে আবেদনের ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ভিসা পাওয়া যেত। কিন্তু, এখন ভিসা পেতে দু থেকে তিন মাস চলে যাচ্ছে এবং অনেকসময় তিনমাসেও পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ভুক্তভোগী যাত্রীরা আক্ষেপের সুরে জানান, এখন ভারতীয় ভিসা পেলেও তার মেয়াদ মাত্র ৩ মাস থেকে ৬ মাস। এর উপর ভ্রমণ কর বেড়েছে।
বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাত্রীর সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বেনাপোল স্থল বন্দরের অধিকর্তা আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন আগে ৬ -৭ হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করত। সাম্প্রতিক সময়ে যাত্রীসংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। তবে শীঘ্রই এই পরিস্থিতির বদল ঘটবে এবং বেনাপোল বন্দরে ভারতমুখী যাত্রীর সংখ্যা স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদী তিনি।