Shalom Nagar: জেলগার্ড থেকে ফাঁসুড়ে, ইজরায়েলের ‘নাটা মল্লিক’-এর কাহিনি হার মানাবে সিনেমাকে
Shalom Nagar: সালোম নাগার ছিলেন নিছকই একজন জেলগার্ড। ফাঁসি দেওয়া তাঁর কাজ ছিল না। তাঁকে জোর করে ফাঁসি দিতে বলা হয়। আইখম্যানের ফাঁসির দড়িটা টানল কে, তা ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কেউ জানত না।
আপনাদের নিশ্চয়ই নাটা মল্লিককে মনে আছে। হেতাল পারেখ হত্যা-কাণ্ডে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে ফাঁসি দিয়েছিলেন পেশাদার ফাঁসুড়ে নাটা মল্লিক। ফাঁসির পর টানা বেশ কিছুদিন রোজ কাগজে নাটা মল্লিকের ছবি ছাপা হত। তাঁর ইন্টারভিউ ছাপা হত। এবার ইজরায়েলের সব কাগজে ওদের দেশের নাটা মল্লিকের ছবি বেরিয়েছে। তাঁর নাম সালোম নাগার। ৮৮ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন তিনি। তবে এই ভদ্রলোক কিন্তু নাটা মল্লিকের মতো পেশাদার ফাঁসুড়ে ছিলেন না। তাঁকে ধরে-বেঁধে ফাঁসির দড়ি টানতে বলা হয়। কিন্তু, যাঁকে তিনি ঝুলিয়েছিলেন তাঁর নাম অ্যাডল্ফ আইখম্যান। আর সেই কারণেই আজ কাগজ ভরে গেছে তাঁর ছবিতে।
কুখ্যাত আইখম্যান ছিলেন নাজি প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্তা। হিটলারের সিক্রেট সার্ভিসের অফিসার। হিটলার প্রথমে ঠিক করেন, জার্মানের কব্জাগত ইউরোপ থেকে ইহুদিদের তাড়াবেন। আইখম্যানের ওপর দায়িত্ব পড়ে। তিনি তৈরি করেন মাদাগাসকার প্ল্যান। তবে এই প্ল্যান সফল হয়নি। অন্যান্য দেশের ন্যাভাল ব্লকেডের জন্য জাহাজে চাপিয়ে ইহুদিদের মাদাগাসকারে নিয়ে যাওয়া যায়নি। অতঃপর সিদ্ধান্ত হল, ইহুদিদের তাহলে মেরেই ফেলতে হবে। ইহুদি নিকেশের সেই সরকারি ফাইলের নাম ছিল ফাইনাল সলিউশন টু দ্য জেউইশ কোশ্চেন। সেই ফাইলেই বলা ছিল কীভাবে একের পর এক কনসেনট্রেশন ক্যাম্প তৈরি করে ইহুদিদের হত্যা করতে হবে। হলোকাস্টের ব্লু-প্রিন্ট লেখা ছিল এই ফাইনাল সলিউশনে। যার ড্রাফট তৈরি করেন অ্যাডল্ফ আইখম্যান।
হিটলারের পতনের পর তিনি জার্মানি ছেড়ে পালান। ১৯৬২ সালে মোসাদ তাঁকে ধরে নিয়ে এসে ফাঁসি দেয়। ফাঁসি দিয়েছিলেন এই সালোম নাগার। তবে, সালোম নাগার ছিলেন নিছকই একজন জেলগার্ড। ফাঁসি দেওয়া তাঁর কাজ ছিল না। কিন্তু হঠাৎ সালোম নাগরকে ফাঁসুড়ের দায়িত্ব কেন পালন করতে হল? আসলে তাঁকে জোর করে ফাঁসি দিতে বলা হয়। আইখম্যানের ফাঁসির দড়িটা টানল কে, তা ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কেউ জানত না। ফাঁসির ৩০ বছর পর এক ইজরায়েলি সাংবাদিক সালোম নাগারের পরিচয় ফাঁস করেন।
এই খবরটিও পড়ুন
তাঁর ইন্টারভিউ ছাপা শুরু হয়। নাটা মল্লিকের মতোই। তাঁকে নিয়ে ডকুমেন্টরি তৈরি হয়। নাগার জানান, ফাঁসি দেওয়ার পর আইখম্যানের দেহ নিজের হাতে তাঁকে পোড়াতেও হয়েছিল। তিনি কাঁপছিলেন। রাতে ঘুম আসত না। রোজ দুঃস্বপ্ন দেখতেন। মানসিক রোগীতে পরিণত হয়ে জেলগার্ডের চাকরি ছেড়ে দেন। তারপর বাকি জীবনটা ধর্মকর্ম নিয়েই কাটিয়ে দেন। আজ সালাম নাগারের মৃত্যুর পর, আইখম্যানের সূত্রে মোসাদের গল্প, আরও নানারকম স্পাই স্টোরিজ নিয়ে নানা কথা শুরু হয়েছে।