NASA Artemis-1 launch: নাটকীয়ভাবে বাতিল নাসার আর্টেমিস-১ চন্দ্র অভিযান, উৎক্ষেপণের মাত্র ৪০ মিনিট আগে

সোমবার নাটকীয়ভাবে উৎক্ষেপণের মাত্র কিছুক্ষণ আগে স্থগিত করা হল নাসার আর্টেমিস-১ রকেটের অভিযান। টি-৪০ মিনিটে আটকে রাখা হয়েছে কাউন্টডাউন।

NASA Artemis-1 launch: নাটকীয়ভাবে বাতিল নাসার আর্টেমিস-১ চন্দ্র অভিযান, উৎক্ষেপণের মাত্র ৪০ মিনিট আগে
চাঁদের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আর্টেমিস-১ রকেট
Follow Us:
| Updated on: Aug 29, 2022 | 6:49 PM

ওয়াশিংটন: সোমবারই (২৯ অগস্ট) শুরু হওয়ার কথা ছিল ঐতিহাসিক যাত্রা। ফের চাঁদের বুকে ফিরছে মানুষ। আর সেই অভিযানের প্রথম পর্যায় হিসেবে, এদিন ‘নাসা’র তৈরি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট, আর্টেমিস-১’এর উড়ে যাওয়ার কথা ছিল চাঁদের উদ্দেশে। এই অভিযানকে বলা হচ্ছে ‘নয়া মহাকাশ যুগের ভোর’। কিন্তু, উৎক্ষেপণের নির্ধারিত সময়ের মাত্র কয়েক মিনিট আগে প্রথমে স্থগিত করা হল উড়ান, পরে নাসার পক্ষ থেকে জানানো হল এদিনের মতো উৎক্ষেপণ বাতিল। চারটি আরএস-২৫ ইঞ্জিনের একটিতে তাপমাত্রা জনিত সমস্যার কারণে, এই বিশালাকার মুন রকেটের পরীক্ষামূলক উড়ান বাতিল করা হল। উৎক্ষেপণের বিকল্প তারিখ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর এবং ৫ সেপ্টেম্বর – এই দুই দিন ধার্য করা হয়েছে।

এদিন প্রথমে নাসার এই অভিযানের কাউন্টডাউন ঘড়িটি আটকে রাখা হয় টি-৪০ মিনিটে, অর্থাৎ আর মাত্র ৪০ মিনিট পরই ঐতিহাসিক উৎক্ষেপণ হওয়ার কথা ছিল। প্রথমে নাসা জানিয়েছিল জ্বালানি সংক্রান্ত সমস্যার কারণেই এই উচ্চকাঙ্খী অভিযান স্থগিত রাখা হচ্ছে। তাদের হাইড্রোজেন দল, এই বিষয়ে আর্টেমিস-১ লঞ্চ ডিরেক্টরের সঙ্গে আলোচনা করছে। পরে এদিনের মতো উৎক্ষেপণ কর্মসূচি পুরোপুরি বাতিল করা হয়।

১৯৭২ সালে ‘অ্যাপোলো ১৭’ অভিযানে শেষবার নাসার নভোশ্চররা চাঁদে পা রেখেছিলেন। সেই শেষবার কোনও মানুষ চাঁদের বুকে পা রেখেছিলেন। সেই অভিযানের পঞ্চাশ বছর পর, ফের চাঁদের বুকে মানুষ পাঠাতে তৎপর নাসা। এই অভিযানের প্রথম ধাপ হিসেবেই আর্টেমিস ১ চন্দ্র অভিযান করা হচ্ছে। এই অভিযানের জন্য প্রায় এক দশক ধরে তৈরি করা হয়েছে ৩২২ ফুট দীর্ঘ স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেটটি। অভিযানের লক্ষ্য রকেটটির কার্যকারিতা পরীক্ষার পাশাপাশি রকেটের উপরে থাকা ‘ওরায়ন ক্রু ক্যাপসুল’ চাঁদের বুকে মানুষের জন্য কতটা নিরাপদ হবে, তা পরীক্ষা করা। এদিন স্থানীয় সময় সকাল ৮টা বেজে ৩৩ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে রকেটটির উৎক্ষেপণের কথা ছিল। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস-সহ কয়েক হাজার মানুষ এই উৎক্ষেপণের সাক্ষী হতে ফ্লোরিডার সমুদ্র সৈকতে জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁদের যাবতীয় উৎসাহ জলে গেল।

এদিন অবশ্য একেবারে প্রথম থেকে বারে বারে হোঁচট খেতে হয়েছে মার্কিন মহাকাশ চর্চা কেন্দ্রটিকে। রকেটটিতে জ্বালানি হিসেবে ৩০ লক্ষ লিটারেরও বেশি অতি-ঠান্ডা তরল হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন লাগবে। কথা ছিল, রবিবার গোটারাত ধরে রকেটটিতে এই বিপুল পরিমাণ জ্বালানি ভরার কাজ করা হবে। কিন্তু আচমকা উৎক্ষেপণ এলাকায় তীব্র বজ্রপাত শুরু হওয়ায়, কাজ প্রায় এক ঘন্টা মতো বন্ধ রাখতে হয়। ভোর তিনটের সময় ফের জ্বালানি সংক্রান্ত আরও একটি হোঁচট খেতে হয়েছিল নাসাকে। হাইড্রোজেন চেম্বারের মূল পর্যায় ভরাট করার সময়, একটি সম্ভাব্য ফুটো শনাক্ত করা হয়। ফলে ফের বন্ধ থাকে কাজ। পরীক্ষা-নিরাক্ষার পরে, ফের জ্বালানি ভরা শুরু হয়। পরে, নাসার এক্সপ্লোরেশন গ্রাউন্ড সিস্টেমস টুইট করে জানিয়েছে, “ফুটোটি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে রয়েছে এবং দ্রুত জ্বালানি ভরার কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে এই বিষয়ে আমরা পর্যবেক্ষণ জারি রাখব।”

ঠিক সকাল ৮:৩৩ মিনিটে লিফটঅফের সময় নির্ধারিত থাকলেও, কোনও কারণে দেরি হলে পরবর্তী দুই ঘণ্টার মধ্যে যে কোনও সময়ে উৎক্ষেপণ করা যাবে বলে জানিয়েছিল নাসা। কারণ ওই সময়ে রকেট উৎক্ষেপণের উপযুক্ত আবহাওয়ার থাকার সম্ভাবনা ছিল ৮০ শতাংশ। ঝড়-বৃষ্টি হলে রকেট উৎক্ষেপণ করা যায় না। জ্বালানি ভরার কাজে সামান্য দেরি হওয়ার পর, নাসা জানিয়েছিল ওই দুই ঘণ্টার মধ্যেই উৎক্ষেপণের নতুন একটি সময় নির্ধারণ করা হবে। তবে, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া নয়, বাধ সাধল রকেটটির ইঞ্জিন। অদূর ভবিষ্যতে এই রকেট এবং ওরায়ন ক্যাপসুলে করেই চাঁদের বুকে প্রথমবার পা রাখবেন চাঁদে কোনও এক মহিলা এবং কৃষ্ণাঙ্গ নভোশ্চর, এমনটাই নাসার লক্ষ্য। তার আগে, শুরুতেই খেতে হল বড় হোঁচট।