Nauru: আর্থিক সহায়তার নামে দ্বীপরাষ্ট্র কিনে নিল চিন? আরও একঘরে তাইওয়ান
Nauru cuts ties with Taiwan: এতদিন পর্যন্ত, হাতে গোনা ১২টি দেশ তাইপেইয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রেখেছিল। কিন্তু এদিন, তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করল প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র, নাউরু। হলফ করে বলা যায়, অধিকাংশই এই ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রটির নাম শোনেননি। কিন্তু, তাদের পিছনে চিনের হাত রয়েছে বলেই, চিন-তাইওয়ান সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিতেই হচ্ছে।
তাইপেই: আরও এক ঘরে তাইওয়ান। চিনের চাপে এমনিতেই বিশ্বের অধিকাংশ দেশ তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখে না। চিনের দাবি, তাইওয়ান দ্বীপ ‘পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার’ই অংশ। কাজেই তাদের সঙ্গে আলাদা করে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা মানে চিনের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্ন করা। এতদিন পর্যন্ত, হাতে গোনা ১২টি দেশ তাইপেইয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রেখেছিল। কিন্তু এদিন, তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করল প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র, নাউরু। হলফ করে বলা যায়, অধিকাংশই এই ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রটির নাম শোনেননি। কিন্তু, তাদের পিছনে চিনের হাত রয়েছে বলেই, চিন-তাইওয়ান সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিতেই হচ্ছে। আর, তাইওয়ানের সঙ্গে এই সম্পর্ক ছিন্ন করার পিছনে চিন সরকারের চাপের কথা এক প্রকার স্বীকার করে নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। একই কারণে ভারতের জন্য়ও এই ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভারত মহাসাগরে, ভারতকে ঘিরে থাকা একের পর এক দ্বীপরাষ্ট্রেও কিন্তু প্রভাব বাড়াতে চাইছে বেজিং।
নাউরু সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে সাফ জানানো হয়েছে, চিনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্যই তারা তাইওয়ানের সঙ্গে সমস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করল। তাইওয়ান সরকারের পক্ষ থেকেও এই খবর মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে, তাইওয়ানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নাউরু-র উপর সাম্প্রতিকতম চিনা চাপের পিছনে রয়েছে তাইওয়ানের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের ফলাফল। রবিবার ফল প্রকাশ হতে দেখা গিয়েছে, তাইওয়ানিজ ভোটাররা বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা স্বাধীন তাইওয়ান-পন্থী প্রার্থী উইলিয়াম লাই চিং-তে’কে তাঁদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেই লাই বিভিন্ন সময়ে তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে মন্তব্য করেছেন। তাঁকে ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বেজিং। কাজেই তিনি নির্বাচিত হওয়ায়, খেপে গিয়েছে চিনের সরকার। তারই প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ করা হল বলে মনে করছে তাইওয়ান।
নাউরু সরকার তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করার পর, তাইওয়ান সরকার বলেছে, “একে শুধুমাত্র আমাদের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের বিরুদ্ধে চিনের প্রতিশোধ হিসেবে দেখলে হবে না। এটা আন্তর্জাতিক আইনকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করাও বটে। নাউরু বলেছে, তারা তাইওয়ানকে আর একটি পৃথক দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দেবে না। চিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখবে। নাউরুতে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্থান-পতনের সুযোগে, তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার নামে দেশটি কিনে নিয়েছে চিন।” তাইপেইয়ের উপ-বিদেশমন্ত্রী, তিয়েন চুং-কোয়াং বলেছেন, “চিন মনে করে, ওরা এভাবে আনাদের দমন করতে পারবে। ওরা ভুল করছে। গোটা বিশ্ব তাইওয়ানের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সাক্ষী। তাইওয়ানের কূটনৈতিক সম্পর্কগুলি দখল করার জন্য, চিন এই ধরনের ঘৃণ্য পদ্ধতি ব্যবহার করলে, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলি এটাকে স্বীকৃতি দেবে না।”
স্বাভাবিকভাবেই চিন, নাউরুর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, “নাউরু সরকার চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ফের শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর থেকেই প্রমাণ হচ্ছে, জনগণের ইচ্ছা এবং সময়ের প্রবণতাই এক-চিন নীতি।” এর আগে, ২০২২ সালেও নাউরু চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। পরে, ২০০৫ সালের মে মাসে ফের চিনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তাইওয়ানের সঙঅগে বন্ধুত্ব করেছিল। তবে, শুধু নাউরু নয়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অন্যান্য দ্বীপরাষ্ট্রগুলির উপরও চিন প্রভাব বাড়াতে চাইছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।