Hamas-Israel War: ‘বন্ধ হোক প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ’, যৌথ বার্তা ইরান-সৌদির রাষ্ট্রনেতাদের
Iran-Saudi leaders phone call: আরব দুনিয়ায় দুই রাষ্ট্রনেতা হামাসের কথা উল্লেখ না করলেও, প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের 'যুদ্ধাপরাধ' বন্ধ করা প্রয়োজন বলে, সম্মত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, কার্যত ইজরায়েলকে মদত দেওয়ার জন্য আমেরিকার প্রতিও সতর্কতা জারি করেছেন রাইসি এবং এমবিএস।

রিয়াধ: ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধ কি এবার আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে? বৃহস্পতিবার এমনই সম্ভাবনা তৈরি হল। এদিন চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে টেলিফোনে আলোচনা করলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং সৌদি শাহজাদা মহম্মদ বিন সলমন। সবথেকে বড় কথা, আরব দুনিয়ায় দুই রাষ্ট্রনেতা হামাসের কথা উল্লেখ না করলেও, প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের ‘যুদ্ধাপরাধ’ বন্ধ করা প্রয়োজন বলে, সম্মত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, কার্যত ইজরায়েলকে মদত দেওয়ার জন্য আমেরিকার প্রতিও সতর্কতা জারি করেছেন রাইসি এবং এমবিএস।
এদিন আরব দুনিয়ায় এই দুই নেতার আলোচনার পর, ইরানি প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক বিষয়ক সহযোগী মহম্মদ জামশিদি সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, “বুধবার দুই নেতা প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইসলামী ঐক্যের উপর জোর দিয়েছেন তাঁরা। দুজনেই একমত হয়েছেন যে, ইজরায়েলি শাসকদর অপরাধ এবং সেই বিষয়ে মার্কিনীদের সবুজ সঙ্কেত, ইজরায়েলি শাসক এবং তাদের সমর্থকদের নিরাপত্তাহীনতার কারণ হবে।
অন্যদিকে রাইসি-এমবিএস আলোচনার বিষয়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, “এমবিএস আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের বিধিগুলি মেনে চলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। গাজা ভূখণ্ডে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি এবং অসামরিক নাগরিকদের উপর তার প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। সৌদি শাহজাদা আরও বলেছেন, চলমান উত্তেজনা থামাতে সমস্ত আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনার চালানোর বিষয় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সৌদি আরব।”
প্রসঙ্গত, আমেরিকা যখন সৌদি আরব এবং ইজরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়েছে, একই সময়ে চিন চেষ্টা করেছে যাতে ইরান-সৌদি আরবের মধ্যে ফের স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিয়া পন্থী ইরান এবং সুন্নিপন্থী সৌদি আরবের মধ্য পুরোনো বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধই চরম আকার নিয়েছিল ২০১৬ সালে। সৌদি আরবে এক বিশিষ্ট শিয়া ধর্মগুরুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর, ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা চালিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। তারপর থেকেই তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল রিয়াধ। যার ফলে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতাবস্থা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈর হয়েছিল। তবে, চলতি বছরের মার্চ মাসে চিনের মধ্যস্থতায় ইরান-সৌদি সাত বছরের বৈরিতা শেষ করে, ফের কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু করতে সম্মত হয়েছে। তারপর থেকে দুই পক্ষের নেতা এই প্রথম টেলিফোনে কথা বললেন। অন্যদিকে হামাস-ইজরায়েল যুদ্ধের জেরে, সৌদি-ইজরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার প্রক্রিয়া অনেক পিছিয়ে গিয়েছে।
গত শনিবার ইজরায়েলের ভিতরে জল-স্থল এবং আকাশপথে হামাস হামলা চালানোর পর, ইজরায়েলও জবাব দিতে শুরু করেছে। গাজায় গত ছয়দিন ধরে টানা বিমান হামলা চলছে। প্যালেস্টিনীয় ও ইজরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এখনও পর্যন্ত এই যুদ্ধে গাজায় ১,২০০ জন প্যালেস্টিনীয় নাগরিকের এবং ইজরায়েলের ১,৩০০ জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে এদিন সৌদি ও ইরানের দুই নেতার মধ্যে এই আলোচনা হল। হামাস গোষ্ঠীকে ভারত-সহ বহু দেশই জঙ্গি সংগঠন হিসেবে দেখলেও, একেবারে হামাসের জন্মলগ্ন থেকেই এই প্যালেস্টিনীয় যোদ্ধা সংগঠনকে সমর্থন করে ইরান। হামাস-ইজরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এই যুদ্ধে ইরান অংশ নেবে কিনা, এই নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিন সৌদিও প্যালেস্টিনীয়দের পাশে থাকার বার্তা দেওয়ায়, সেই শঙ্কা আরও বাড়ল।





