Video: বরফে আগুনের গোলা! ৬৫ ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দি নিয়ে ভেঙে পড়ল রুশ বিমান
বুধবার (২৪ জানুয়ারি), ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার মুখে পড়ল রাশিয়ার এক সামরিক বিমান। অন্তত ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। ওই যুদ্ধবন্দিদের বন্দি বিনিময়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
মস্কো: বুধবার (২৪ জানুয়ারি), বড় ধরনের দুর্ঘটনার মুখে পড়ল রাশিয়ার এক সামরিক বিমান। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই দূর্ঘটনা। কারণ, বিমানটিতে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিরা ছিল। রুশ সরকার জানিয়েছে, মোট ৬৫ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে যাচ্ছিল বিমানটি। বিমানটি ছিল ইলিউশিন-৭৬ (IL-76) সামরিক পরিবহন বিমান। তরা আরও জানিয়েছে, ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী পশ্চিম বেলগোরোদ এলাকায় বিমানচি ভেঙে পড়ে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা আরআইএ-নোভোস্তি বলেছে, “৬৫ জন বন্দী ইউক্রেনীয় সেনা সদস্যকে বন্দি বিনিময়ের জন্য বেলগোরোদ অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বিমানটিতে আরও ছয় জন ক্রু সদস্য এবং তিনজন প্রহরী ছিলেন।”
🚨 💥 BREAKING: Ukrainian Armed Forces sources confirm the shooting down of a Russian IL-76 military plane transporting S-300 missiles over Belgorod region in Russia. The rumor of Ukrainian POWs being on board the plane is FALSE. pic.twitter.com/2GtszJYI8v
— Igor Sushko (@igorsushko) January 24, 2024
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই বিমান দুর্ঘটনায় অন্তত ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেলগোরোদের গভর্নর ভ্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ জানিয়েছেন, তিনি এই দুর্ঘটনার খবর পেয়েছেন। তবে দুর্ঘটনা সম্পর্কে তিনি আর কোনও বিবরণ দেননি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুর্ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি বেলগোরোদের ইয়াবলোনোভো গ্রামের কাছে ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। ভিডিয়োগুলিতে দেখা যাচ্ছে, ওই এলাকা পুরো বরফের চাদরে ঢাকা। আকাশে দেখা যায়, একটি বিমান ক্রমশ নীচে নেমে আসছে। তারপর, প্রচন্ড বিস্ফোরণের সঙ্গে দিগন্তে দেখা যায় একটি আগুনের গোলা।
ঠিক কী কারণে বিমানটি ভেঙে পড়ল, তা এখনও জানা যায়নি। তবে, ভাইরাল ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, যে অংশ থেকে বিমানটি সোজা নীচে নেমে আসে, আকাশের ওই অংশে বেশ কিছুটা ধোঁয়ার কুন্ডলী জমে রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ভেঙে পড়ার আগে বিমানটিতে কোনও বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। ঘটনাটি ঘটে, স্থানীয় সময় সকাল ১১টা নাগাদ। বিমানটিতে যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে রাশিয়া দাবি করলেও, ইউক্রেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে অন্য খবর বলা হচ্ছে। তাদের দাবি, বিমানটিতে যুদ্ধবন্দি নয়, এস-৩০০ বিমান প্রতিরোধী ব্যবস্থার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র বহন করা হচ্ছিল। তাই ইউক্রেনীয় বাহিনীই বিমানটিকে গুলি করে নামিয়েছে। ভ্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ জানিয়েছেন, রাশিয়ার একটি তদন্তকারী দল এবং একটি জরুরী পরিষেবা দল ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তিনি নিজেও তাঁর নির্ধারিত কর্মসূচি বদলে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইলিউশিন-৭৬ নামে এই রুশ বিমানটিতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ছাড়াও ট্যাঙ্ক, হাউইটজার, গোলাবারুদ-এর মতো বিভিধ সামরিক সরঞ্জাম এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। গত শতাব্দীর সাতের দশকে সোভিয়েত রাশিয়ার আমলেই এই বিমান রুশ সেনাবাহিনীতে জায়গা করে নিয়েছিল। ভারতীয় বায়ুসেনাও এই বিমান ব্যবহার করে। তবে, বিমানগুলির বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে ভারতীয় বায়ুসেনায় এর ব্যবহার কমে আসছে। এই বিমানের জায়গা নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি সি-১৭ গ্লোবমাস্টার এবং সি-১৩০জে হারকিউলিস।