মালিয়া-নীরব মোদীদের দেশে ফেরাতে লন্ডন যাচ্ছে ED-CBI-NIA
CBI, ED, NIA to go to United Kingdom: সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চললে, এই মাসের শেষের দিকেই ব্রিটেন যাবেন তিন কেন্দ্রীয় সংস্থার যৌথ দলটি। এই অর্থনৈতিক অপরাধীদের ভারতে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়ায় দ্রুততা আনা ছাড়াও, এই দলটির লক্ষ্য এই পলাতক অপরাধীদের লন্ডনে পাওয়া সম্পদ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। এতে তাদের ব্যাঙ্কিং লেনদেন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নয়া দিল্লি: বিজয় মালিয়া, নীরব মোদী, সঞ্জয় ভান্ডারিদের মতো পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধীদের দেশে ফেরাতে তৎপর কেন্দ্র। মদ ব্যবসায়ী তথা কিংফিশার এয়ারলাইন্সের মালিক বিজয় মালিয়া, হীরা ব্যবসায়ী নীরব মোদী এবং অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভান্ডারি – তিনজনেই তহবিল তছরুপ-সহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত, ওয়ান্টেড অপরাধী। তিনজনই ভারতের বিচার ব্যবস্থার আওতায় থেকে পালিয়ে ব্রিটেনে আছে। এবার তাদের দেশে ফেরাতে ব্রিটেনে যাচ্ছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি-র অফিসারদের একটি দল।
সবকিছু পরিকল্পনামাৎিক চললে, এই মাসের শেষের দিকেই ব্রিটেন যাবেন তিন কেন্দ্রীয় সংস্থার যৌথ দলটি। এই অর্থনৈতিক অপরাধীদের ভারতে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়ায় দ্রুততা আনা ছাড়াও, এই দলটির লক্ষ্য এই পলাতক অপরাধীদের লন্ডনে পাওয়া সম্পদ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। এতে তাদের ব্যাঙ্কিং লেনদেন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তির আওতায় ব্রিটেনের সঙ্গে ভারতের তথ্য আদানপ্রদান হওয়ার কথা। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে এই প্রক্রিয়া মুলতুবি রয়েছে। লন্ডনের কাছ থেকে এই সব তথ্য পাওয়ার জন্য ব্রিটেনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবে দলটি। সূত্রের খবর, দলচটির নেতৃত্বে থাকবেন বিদেশ মন্ত্রকের কোনও বিশিষ্ট কর্তা। ব্রিটেনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের বৈঠকের বিষয়টি আয়োজন করবে লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশন।
পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি অনুযায়ী, ভারত এবং ব্রিটেন অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য অপরাধীদের অপরাধের তদন্তের সংক্রান্ত তথ্য অপর দেশের সঙ্গে ভাগ করে নিতে বাধ্য। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য শুধু বিজয় মালিয়াদেরই নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা খালিস্তানি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক সন্ত্রাসবাদীদের সম্পর্কেও তথ্য চাইতে পারে ব্রিটেনের কাছ থেকে। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ব্রিচেন নয়, অন্যান্য দেশেও অর্থনৈতিক অপরাধীদের সম্পত্তি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল তাদের অপরাধের আয় বাজেয়াপ্ত করা।
২০১২ সালে কিংফিশার এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যুক্ত ৯০০০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ পাচার এবং ব্যাঙ্কের ঋণ খেলাপির অভিযোগ উঠেছিল বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালের মার্চে সে ভারত থেকে পালিয়েছিল। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ খেলাপির অভিযোগে ‘ওয়ান্টেড’ অপরাধী হীরা ব্যবসায়ী নীরব মোদী। সেও ভারত থেকে পালিয়েছিল। তবে, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে তাঁকে প্রত্যর্পণ পরোয়ানায় গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে, তার ঠিকানা লন্ডনের এক সংশোধনাগার। অস্ত্র ব্যবসায়ী ভান্ডারীর বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপ ও কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালে সে পালিয়েছিল। কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বঢরার সঙ্গে তার যোগসূত্রের তদন্ত করছে ইডি। তার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারি করা হয়েছে।
বর্তমানে ব্রিটেনের আদালতে ভান্ডারি, মোদী এবং মালিয়ার প্রত্যর্পণের মামলা চলছে। তিনজনেই তাদের ভারতে নির্বাসনের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের আদালতে আবেদন করেছে। বকেয়া নিষ্পত্তির জন্য, ইডি ইতিমধ্যেই তাদের ভারতে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে।