Gold price: ভোটের পরই বাড়ে সোনার দাম, এবারও কি রেকর্ড হবে?
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর, শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাবে কিনা, তা নিয়ে চর্চা চলছে। একই সময়ে, নজর রয়েছে সোনার দামের উপরও। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, ভোটের পরই বেড়েছে সোনার দাম। এখন প্রশ্ন হল, ২০২৪ সালেও কি তেমন কিছু দেখা যাবে?
কলকাতা: পৃথিবীতে সবথেকে নিরাপদ সম্পদ বলে মনে করা হয় সোনাকে। সোনা কখনই লগ্নিকারীদের হতাশ করে না। আর নির্বাচনের সঙ্গে এই মূল্যবান ধাতুর দামের এক অদ্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত, ভারতে যে কয়টি লোকসভা নির্বাচন হয়েছে, সবগুলির পরই সোনার দাম বেড়েছে। এটাকে কেউ কাকতালীয় বলতে পারে, অন্য কিছুও বলতে পারে। এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন হল, ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালের মতো ২০২৪ সালের নির্বাচনের পরও কি সোনার দাম বাড়বে? আসুন পরিসংখ্যান দেখে তা আন্দাজ করা যাক –
২০০৯ সালে সোনার অবস্থা কেমন ছিল?
২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর সোনার দাম বেড়েছিল। নির্বাচন শুরুর আগের মাসে, অর্থাৎ, মার্চে সোনার দাম ২.৩৭ শতাংশ কমেছিল। এপ্রিল মাসে নির্বাচন শুরু হয়। সোনার দাম আরও ৪.১৬ শতাংশ কমেছিল। মে মাসে সোনার দাম সামান্য বেড়েছিল। জুন মাসে ফের সোনার দাম কমেছিল। লগ্নিকারীরা ৩ শতাংশের বেশি লোকসানের মুখে পড়েছিলেন। জুলাই থেকে ফের সোনার দাম বাড়তে শুরু করেছিল। ২.৪৩ শতাংশ বেড়েছিল সোনার দাম। এরপর একটানা নভেম্বর মাস পর্যন্ত সোনার দামে ঊর্ধ্বগতি ছিল। ২০০৯ সালের নভেম্বরে, লগ্নিকারীদের ১০.৩৭ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছিল সোনা। জুন থেকে সোনার দাম বেড়েছিল ৩২০০ টাকা। আর বার্ষিক হিসেব দেখলে, সোনা সেই বছর লগ্নিকারীদের ২২.৪২ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছিল।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পরও হয়েছিল কামাল
২০১৪ সালটা সোনায় বিনিয়োগকারীদের জন্য মোটেই ভাল ছিল না। গোটা বছরে লগ্নিকারীরা প্রায় ১৮ শতাংশ ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। নির্বাচনের পর অবশ্য লগ্নিকারীদের পকেটে সোনা ফলতে শুরু করেছিল। মে মাসে নির্বাচনের ফল এসেছিল। জুন মাসে সোনায় লগ্নিকারীরা ৮ শতাংশ রিটার্ন পেয়েছিলেন। কিন্তু জুলাই মাসেই রিটার্ন নামমাত্র হয়ে যায়। এরপর নভেম্বর মাস পর্যন্ত সোনার দাম ক্রমাগত পড়েছিল। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ১০ হাজার টাকা কমেছিল।
২০১৯ সাল, ভোটের পরই মালামাল
২০১৯ সালের নির্বাচনের পর, লগ্নিকারীরা ২০১৪ সালের তুলনায় ভাল রিটার্ন পেয়েছিলেন। গোটা বছরে বিনিয়োগকারীরা ২০ শতাংশের বেশি রিটার্ন পেয়েছিলেন সোনায়। নির্বাচনের আগে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে সোনার দাম পড়েছিল যথাক্রমে ১.৬৮ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ। নির্বাচনের সময়, অর্থাৎ, এপ্রিল ও মে মাসে সোনার দাম কমেছিল যথাক্রমে ০.১২ শতাংশ এবং ৩.৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ, এই চার মাসে সোনার দাম প্রায় ৪ হাজার টাকা কমেছিল। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর টানা তিন মাস সোনার দাম বেড়েছিল। জুনে বেড়েছিল ২.৭৫ শতাংশ, জুলাইয়ে ১০.০৮ শতাংশ এবং অগস্টে ১৩.৪৬ শতাংশ। এই তিন মাসে সোনার দাম বেড়েছিল ১০ হাজার টাকারও বেশি।
২০২৪ সালে কী হবে?
২০২৪ সালের শেষ ৫ মাসে, সোনার দাম ১৭.৭৮ শতাংশ বেড়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস বাদ দিলে বাকি সব মাসেই সোনার দাম বেড়েছে। মার্চ মাসে, বিনিয়োগকারীরা ৮.১৭ শতাংশ রিটার্ন পেয়েছেন। এপ্রিলে সোনার দাম বেড়েছে ৪.০৫ শতাংশ। মে মাসে এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের ৫.৭২ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে সোনা। এখন সবার চোখ নির্বাচনের পর সোনার দাম বাড়বে কি না সেই দিকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সোনার দাম বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি। সোমবার (২৭ মে), প্রতি দশ গ্রাম সোনার দাম ছিল ৭১,৬১৯ টাকা। ট্রেডিং সেশনে সোনার দাম সর্বোচ্চ ৭১,৬৯৭ টাকায় পৌঁছয়। শুধু মে মাসেই প্রতি দশ গ্রাম সোনার দাম বেড়েছে ১,২৮২ টাকা।