Israel-Hamas conflict: পর্যটন খাতে ধস নামাতে চলেছে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ

Israel-Hamas conflict: ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রথম ঘা পড়েছে পর্যটন খাতেই। ২০২৩ সালে প্রায় ২৫ লক্ষ আন্তর্জাতিক পর্যটক ইজরায়েলে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ইজরায়েলের জিডিপির প্রায় ২.৮ শতাংশ আসে এই খাত থেকে। সেই দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৩.৫ শতাংশ জড়িয়ে পর্যটনের সঙ্গে। সাম্প্রতিক উত্তেজনার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এই পরিসংখ্যানে।

Israel-Hamas conflict: পর্যটন খাতে ধস নামাতে চলেছে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ
ইজরায়েলে এই সময় ভিড় লেগে থাকে পর্যটকদেরImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 20, 2023 | 8:38 AM

আশীষ শর্মা, নয়া দিল্লি: গত বছর, জেরুজালেমের রাস্তায় জমজমাট ভিড় ছিল প্রায় সমস্ত দেশের পর্যটকদের। ৭ অক্টোবর, ইজরায়েলে হামাসের সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকে, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইজরায়েল। এই সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে, বেন ইয়েহুদা স্ট্রিট, জাফা রোড, কিং জর্জ স্ট্রিটের মতো ইজরায়েলের জনপ্রিয় পর্যটন এবং ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলি এখন খা-খা করছে। হ্যাঁ, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রথম ঘা পড়েছে পর্যটন খাতেই। ২০২৩ সালে প্রায় ২৫ লক্ষ আন্তর্জাতিক পর্যটক ইজরায়েলে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ইজরায়েলের জিডিপির প্রায় ২.৮ শতাংশ আসে এই খাত থেকে। সেই দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৩.৫ শতাংশ জড়িয়ে পর্যটনের সঙ্গে। সাম্প্রতিক উত্তেজনার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এই পরিসংখ্যানে।

এসটিআইসি ট্রাভেল গ্রুপের চেয়ারম্যান তথা পর্যটন শিল্প বিশেষজ্ঞ ডা. সুভাষ গোয়েলের মতে, এই যুদ্ধের ‘রিপল এফেক্ট’ অর্থাৎটেউয়ের মতো প্রভাব পড়তে চলেছে পর্যটন খাতে। মানে, শুধু ইজরায়েলেই নয়, বিভিন্ন দেশের পর্যটন ক্ষেত্রেই এই যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যেতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সংঘাতের আগে পর্যন্ত পশ্চিম এশিয়ার এই দেশের বহু পর্যটক ভারতে এসেছিলেন। বছরের এই সময়টায় সাধারণত ভারতের গোয়া এবং কাশ্মীর-সহ কয়েকটি বিশেষ পর্যটন ক্ষেত্র, ইজরায়েলি পর্যটকে পরিপূর্ণ থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ইজরায়েলের যুদ্ধ ঠিক এই সময়ই শুরু হওয়ায়, এবার সেই ভিড় দেখা যাচ্ছে না।

২০১৯ সালে ৭৩,১৩৭ জন ইজরায়েলি পর্যটক ভারতে এসেছিলেন। অক্টোবর-ডিসেম্বরে ভারতে ইজরায়েলি পর্যটকদের ভিড়ের একটা অন্য কারণ আছে। ইজরায়েলে প্রত্যেককে বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক পরিষেবা দিতে হয়। বছরের এই সময়ই সেই পরিষেবা শেষ হয়। তারপর, ইজরায়েলিরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরতে যান। তার মধ্যে অন্যতম গন্তব্য ভারত। তবে শুধু ইজরায়েল এবং ভারতের পর্যটন ক্ষেত্রেই নয়, এই ঢেউ-এর ধাক্কা লাগবে বিশ্ব-পর্যটন ক্ষেত্রেই। গোটা বিশ্বের নিরিখে পশ্চিম এশিয়া, একটি প্রধান বিমান চলাচল কেন্দ্র। এই অঞ্চলে যুদ্ধের কারণে প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্বের মধ্যে চলা বহু বিমান বাতিল হতে বাধ্য।

ইজরয়েলি পর্যটকদের পাশাপাশি বহু বিদেশি পর্যটক, অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যে ভারতে বেড়াতে আসেন। আবার এই সময় বহু ভারতীয় পর্যটক পশ্চিমী দেশগুলিতে ঘুরতে যান। পশ্চিম এশিয়া দিয়ে বিমান চলাচল ব্যাহত হলে, ভারতে আসা এবং ভারত থেকে যাওয়া – দুই ধরনের পর্যটকের সংখ্যাই বহুলাংশে কমবে। ‘ফেডারেশন অব অ্যাসোসিয়েশন ইন ইন্ডিয়ান ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি’র কনসাল্টিং সিইও, আশিস গুপ্ত বলেছেন, “ভারতে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ পর্যটক আসেন। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিদেশী পর্যটকই, অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যে আসেন। এছাড়া, ভারত থেকে প্রায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ পর্যটক বাইরের দেশগুলিতে যান। দুই ক্ষেত্রেই ক্ষতি হতে চলেছে।”

কোভিড-১৯ মহামারিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল পর্যটন খাতের। এখনও সেই ক্ষতির প্রভাব কাটিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে এই শিল্পক্ষেত্রে। তবে প্রথমে রাশিয়া-ইউক্রেন, তারপর এখন পশ্চিম এশিয়ার এই যুদ্ধ, এই খাতের নয়া চ্যালেঞ্জ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ট্যুরিজম প্রমোশন ব্যুরোর চেয়ারম্যান চালক গজবাহুর মতে, ভারতের প্রতিবেশীরাও এই সংঘাতের ফল ভুগবে। তিনি বলেছেন, “চলতি মাসের শেষ দিকে, প্রথমবার ইজরায়েলি বিমান সংস্থাগুলির শ্রীলঙ্কায় উড়ান পরিয়ালনা শুরুর কথা ছিল। নভেম্বরের মাঝামাঝি আমরা ইজরায়েলে একটি রোডশো করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনে যা পরিস্থিতি, তাতে আমাদের এই সকল পরিকল্পনা স্থগিত করতে হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য কিন্তু আমাদের জন্য অন্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক বাজার।”