Bidhannagar Municipal Election: শৌচালয়ের মধ্যে লুকিয়েছিল ‘ভুয়ো ভোটার’, ধরা পড়তেই দে-দৌড়! বিধাননগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা
Municipal Elections 2022: নির্বাচনের নিরিখে, বিধাননগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ড 'হাইপ্রোফাইল' বলা যেতেই পারে। কারণ, এই ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানা এবং অন্যদিকে, তৃণমূলের তরফে সব্যসাচী দত্ত।
বিধাননগর: শনিবারের সকাল থেকেই বিধানগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে (Bidhannagar Municipal Election) বিস্ফোরক অভিযোগ করে এসেছে বিরোধীরা। ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানা অভিযোগ করেন ভোট দিতে যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা অনেকেই ভুয়ো ভোটার। শনিবার ভোটের শুরুতেই দেবাশিস জানা বিএফ কমিউনিটি সেন্টারে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ভোটার লাইনে এক ব্যক্তিকে দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। তিনি তাঁকে প্রশ্ন করতে শুরু করেন। খুবই সাধারণ প্রশ্ন, ওই ব্যক্তির বাবার নাম জিজ্ঞাসা করেন দেবাশিস জানা। কিন্তু, সেই ব্যক্তি প্রশ্ন করতেই লাইন থেকে বেরিয়ে যান বলে অভিযোগ। এ বার সেই ৩১ নম্বর ওয়ার্ডেই বুথের শৌচালয়ে ভুয়ো ভোটার লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠল শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে।
শনিবার সকালে বিএফ কমিউনিটি সেন্টারের ওই বুথে শৌচালয়ের মধ্যে লুকিয়েছিল কয়েকজন যুবক। তাদেরই কয়েকজন আবার ভোটার সেজে লাইনে দাঁড়িয়েছিল বলে অভিযোগ। শৌচালয় অনেকক্ষণ বন্ধ থাকায় সন্দেহ হতেই দরজায় ধাক্কা দেন বুথে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার। তখনই শৌচালয়ের ভেতরে দুই যুবককে পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে একজন তখনই পালিয়ে যায়। আরেকজন তখনই ধরা পড়ে। TV9 বাংলার ক্যামেরাতেও ধরা পড়ে সেই ছবি।
ধরা পড়ে যাওয়া ওই ‘ভুয়ো ভোটার’-এর কথায়, “আমি তো এমনিই ঘুরতে এসেছিলাম। টয়লেট করব বলে টয়লেটে আসি। আমায় স্যর ডাকলে সাড়াও দিয়েছি। আমি কিছু করিনি।” এদিকে বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ এই যুবকেরা সকলেই ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিল। এমনকী, বিজেপির পোলিং এজেন্টও একই দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “এদের সকালে আমি লাইনে দাঁড়াতে দেখেছি। তারপর আচমকা হাপিস হয়ে গিয়েছিল। ভুয়ো না হলে কী আর দুজন মিলে বাথরুমে থাকে! বাকিগুলো পালিয়েছে, এ ধরা পড়ে গিয়েছে।”
ঘটনায় বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানা বলেছেন, “বিধাননগরের সব জায়গাতেই ভুয়ো ভোটারের ছড়াছড়ি! কী করব আর! ধরতে ধরতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। এখন তো বুথের সামনেই ক্যাম্প করে বসা ছাড়া আর কোনও উপায় দেখছি না! নয়ত তো সব ছাপ্পাই পড়তে থাকবে।” তাঁর আরও অভিযোগ, কেবল ৩১ নম্বর ওয়ার্ড নয়, বিধাননগরের ৩২ নম্বর, ২৯ নম্বর, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডেও ভুয়ো ভোটাররা ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভুয়ো ভোটার ধরতে গিয়ে কার্যত ক্লান্ত তিনি।
অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থী সব্যসাচী দত্তের দাবি, কোথাও কোনও ভুয়ো ভোটার নেই। বিধাননগরে তৃণমূলই জিতবে। বিজেপির কোনও সংগঠন নেই বলেই দাবি করেন তিনি। নির্বাচনের নিরিখে, বিধাননগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ড ‘হাইপ্রোফাইল’ বলা যেতেই পারে। কারণ, এই ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানা এবং অন্যদিকে, তৃণমূলের তরফে সব্যসাচী দত্ত। সেদিক থেকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
বিধাননগরে অশান্তি এড়াতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছে সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি পুলিশ। নজরদারির বিশেষ দায়িত্বে রয়েছেন এডিজি সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিং। রয়েছেন ৩২ জন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। রয়েছেন ৪০০ জন এসআই ও এএসআই পদমর্যাদার অফিসার। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ১৮টি কুইক রেসপন্স টিম। মোতায়েন রয়েছে ৩০ টি মোবাইল ভ্যান।
এছাড়াও অশান্তি এড়াতে রাজ্য পুলিশ ছাড়াও থাকছে কম্যান্ডো। নিরাপত্তার দায়িত্বে ইএফআর, এসটিএফ। নিরাপত্তার নজরদারিতে সিআইডি, আইবি। বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে থাকছেন এক জন আইএএস। স্পর্শকাতর এলাকায় থাকছে আইবি, সিআইডি।
বিধাননগর ভোট যাতে শান্তিপূর্ণ ও অবাধে হয়, তার জন্য শুক্রবারই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ছিল হাইকোর্টের। আদালত নির্বাচন কমিশনকে স্পষ্ট করে দিয়েছিল, বিধাননগরের ভোটে কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে, তার দায় থাকবে কমিশনের ওপর। আর তার জবাবদিহি করতে হবে কমিশনারকে। সেক্ষেত্রে এদিনটা কমিশনের কাছেও বিশেষ চ্যালেঞ্জের।
আরও পড়ুন: WB Municipal Election 2022 LIVE Updates: ভোট শুরু হতেই ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ বিধাননগরে
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা